অর্থ উপদেষ্টা বললেন, ‘ওটা আমার কিছু করার নেই’

- সময় ০৯:২৬:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
- / 17
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘ওটা আমার কিছু করার নেই। বিএসইসির চেয়ারম্যান আছেন, উনি দেখবেন। ওনাকে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বের হওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল বুধবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ বৃহস্পতিবার তারা কর্মবিরতি পালন করেন।
এ নিয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)-এর পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিএসইসির বর্তমান ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না, ওটা আমার কিছু করার নেই। ওটা উনি (বিএসইসি চেয়ারম্যান) দেখবেন। ওনাকে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের অবস্থান হলো- ব্যাপারটা দেখবে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ। আমার এ ব্যাপারে বক্তব্য নেই। চেয়ারম্যান আছেন একজন, উনি দেখবেন।
কর্মকর্তারা ঘেরাও করেছেন, দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন, সেটার বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী, এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যার যেটা করার করুক।
কর্মকর্তারা আজকে কর্মবিরতি পালন করেছেন, অফিস চলবে কীভাবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে তারাই জানে। অনেকেই তো কর্মবিরতি পালন করছে।
এদিকে, বিএসইসি চেয়ারম্যান সচিবালয় থেকে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, আজকে সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের বলেছেন, যে কাজটা করে যাচ্ছি, সেটা যেন করে যাই, আরও জোরদার করি।
বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপনাদের পদত্যাগ চায় এবং কর্মবিরতি পালন করছেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা যে মিশন নিয়ে নেমেছি, সেই মিশন থেকে এক চুল পরিমাণ নড়বো না। কোনো ধরনের অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না। আমরা যে কাজ নিষ্ঠা ও নিয়মের সঙ্গে করে আসছি, সেটা করে যাবো।
কর্মকর্তারা কাজ না করলে কী করবেন, এমন প্রশ্নে বিএসইসি কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, আমরা তাদের কাজে যোগদানের জন্য আহ্বান জানাবো। তারপরও যদি কাজে না ফেরেন? এ প্রশ্নে লালারুখ বলেন, সেটা তখন দেখা যাবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ডেকে এনে বিএসইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর লাঠিচার্জ ও হামলা চালিয়ে আহত করা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত কমিশনার মহসীন চৌধুরী অন্য কমিশনার এবং চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে বিগত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর এবং শোকজসহ নানাবিধ হয়রানি করছে।
বিবৃতিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-
১. বর্তমান কমিশনকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
২. কমিশন কর্তৃক মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ডেকে কমিশনের-কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাঠিচার্জ করার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিএসইসির জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও যোগ্য চেয়ারম্যান এবং কমিশনার নিয়োগ দিতে হবে।
৪. সংস্কারের অংশ হিসেবে কমিশনকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।