১১:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দলিলে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর চান সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০৩:৪১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • / 108

প্রধান নির্বাচন কমিশনার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায় সংশ্লিষ্ট দলকেই বহন করতে হবে। তিনি মনে করেন, যদি প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার করে দলিলে স্বাক্ষর করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন অনেক সহজ হবে।

রোববার (২ মার্চ) ৭ম জাতীয় ভোটার দিবসের এক আলোচনা সভা শেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন সিইসি। এছাড়া উদ্বোধন শেষে ভবনের সামনে থেকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৬১৫। আর নারী ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৩ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৯৪ জন । ভোটার বৃদ্ধির হার ১.৫৪ শতাংশ।

আলোচনা সভা শেষে সিইসি বলেন, ভোটসন্ত্রাস করে আপাত জেতা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল ও দেশের জন্য তা ভালো হয় না। কেউ এ ধরনের কাজ করবে না বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি। সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্নদলের বিপরীতমুখী বক্তব্যে কমিশন চিন্তিত নয় বলেও জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ।

এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী ৩০ জুনের মধ্যে নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে জনগণের ভোটের প্রতি আগ্রহ কমে গিয়েছিল, তবে এখন আবার ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।’

সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘ভোটার তালিকা অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে, যাতে কোনো পক্ষ ভুয়া তালিকা বা জালিয়াতির অভিযোগ তুলতে না পারে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নারী ভোটারদের বাদ পড়ার কোনো সুযোগ রাখা যাবে না।’

‘নির্বাচন কমিশন রাতের ভোট দেখতে চায় না এবং কোনো পক্ষের প্রভাবও মেনে নেবে না।’

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার স্বীকার করেন, অতীতের নির্বাচনগুলো ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং কমিশন সেই দায় এড়াতে পারে না। তিনি বলেন, ‘ভুলের দায় শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নয়, একজন সাধারণ কর্মচারী পর্যন্ত এ দায় বহন করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন এখন কঠিন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আমরা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইস্পাতের মতো কঠোর থাকব। কমিশন ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু মচকাবে না। আমরা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করব না।’

এছাড়া, ইসি সদস্য তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘ভোট যেন আর আবদ্ধ কক্ষে না হয়, সেজন্য খোলা মাঠে ভোট আয়োজনের কথা ভাবতে হবে।’

অন্যদিকে, ইসি সদস্য আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘শুধু কথার মাধ্যমে নয়, বাস্তব কাজের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবে।’

 

শেয়ার করুন

দলিলে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর চান সিইসি

সময় ০৩:৪১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায় সংশ্লিষ্ট দলকেই বহন করতে হবে। তিনি মনে করেন, যদি প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার করে দলিলে স্বাক্ষর করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন অনেক সহজ হবে।

রোববার (২ মার্চ) ৭ম জাতীয় ভোটার দিবসের এক আলোচনা সভা শেষে এমন মন্তব্য করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন সিইসি। এছাড়া উদ্বোধন শেষে ভবনের সামনে থেকে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, দেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৬১৫। আর নারী ভোটার ৬ কোটি ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৩ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৯৪ জন । ভোটার বৃদ্ধির হার ১.৫৪ শতাংশ।

আলোচনা সভা শেষে সিইসি বলেন, ভোটসন্ত্রাস করে আপাত জেতা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল ও দেশের জন্য তা ভালো হয় না। কেউ এ ধরনের কাজ করবে না বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি। সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্নদলের বিপরীতমুখী বক্তব্যে কমিশন চিন্তিত নয় বলেও জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ।

এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী ৩০ জুনের মধ্যে নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে জনগণের ভোটের প্রতি আগ্রহ কমে গিয়েছিল, তবে এখন আবার ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।’

সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘ভোটার তালিকা অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে, যাতে কোনো পক্ষ ভুয়া তালিকা বা জালিয়াতির অভিযোগ তুলতে না পারে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নারী ভোটারদের বাদ পড়ার কোনো সুযোগ রাখা যাবে না।’

‘নির্বাচন কমিশন রাতের ভোট দেখতে চায় না এবং কোনো পক্ষের প্রভাবও মেনে নেবে না।’

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার স্বীকার করেন, অতীতের নির্বাচনগুলো ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং কমিশন সেই দায় এড়াতে পারে না। তিনি বলেন, ‘ভুলের দায় শুধু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নয়, একজন সাধারণ কর্মচারী পর্যন্ত এ দায় বহন করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন এখন কঠিন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আমরা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইস্পাতের মতো কঠোর থাকব। কমিশন ভেঙে যেতে পারে, কিন্তু মচকাবে না। আমরা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করব না।’

এছাড়া, ইসি সদস্য তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘ভোট যেন আর আবদ্ধ কক্ষে না হয়, সেজন্য খোলা মাঠে ভোট আয়োজনের কথা ভাবতে হবে।’

অন্যদিকে, ইসি সদস্য আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘শুধু কথার মাধ্যমে নয়, বাস্তব কাজের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবে।’