মাথা-চোখে লাল কাপড় বেঁধে ঢাকার পথে ৮০ কুয়েট শিক্ষার্থী

- সময় ১১:১৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 21
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দুটি বাসে করে ৮০ শিক্ষার্থী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথা ও চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছিল।
যাত্রার আগে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই তারা তাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি জমা দেবেন এবং এরপর নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেবেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা ফিরে আসবেন না এবং অনলাইনেই তাদের শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি মেনে নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে তা হয়নি। তারা বলেন, “হামলাকারীদের পরিচয় স্পষ্ট, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আমরা ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ প্রদর্শনীতে হামলাকারীদের ছবি, নাম ও বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ঘটনার পাঁচ দিন পার হলেও সরকার থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা বা আশ্বাস আসেনি। “নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাতি ও রামদা দিয়ে হামলা হয়েছে। আমাদের সহপাঠীদের মাথা ফেটে গেছে, কারও হাত তিন টুকরো হয়ে গেছে। অথচ এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
তারা অভিযোগ করেন, “যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই বিপ্লবের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, সেই সরকার আমাদের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরার পরও কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি। তিন দিন আগে ইমেইলের মাধ্যমে স্মারকলিপি পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাইনি।”

শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের বাড়িওয়ালারা বাসা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। “আমরা আতঙ্কিত, আমাদের পরিবার আতঙ্কিত। আমরা ক্যাম্পাসের ভেতরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নই। আমাদের দেখার কেউ নেই।”
তারা আরও বলেন, কিছু শিক্ষক দাবি করছেন যে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ মেনে নেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। “হামলাকারীরা চিহ্নিত, অথচ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের পরিচয় প্রকাশ করা হলেও ছাত্রদল সমর্থক ও বিএনপি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এতে আমাদের মনে হচ্ছে, কুয়েট প্রশাসনই মূল সমস্যা।”
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।