ঢাকা ১১:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কে এম সফিউল্লাহ আর নেই

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • সময় ১১:১৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 48

কে এম সফিউল্লাহ

চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের ২ নাম্বার সেক্টর কমান্ডার, বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম)।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বাংলা অ্যাফেয়ার্স।

জানা গেছে, নব্বই-ঊর্ধ্ব সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, থাইরয়েডে জটিলতা, ফ্যাটি লিভার, ডিমেনশিয়াসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন তার চলাফেরা চলে স্ট্রেচারে।

কে এম সফিউল্লাহর সন্তান ওয়াকার আহমেদ জানিয়েছেন, আজ দুপুর দেড়টায় রূপগঞ্জ থানা সংলগ্ন আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে কে এম সফিউল্লাহর প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আসর ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা। পরে বনানী সামরিক কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

১৯৭১ সালে সফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। তাঁর নেতৃত্বেই ওই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে সফিউল্লাহ ছিলেন ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। পরে তিনটি নিয়মিত আর্মি ব্রিগেড (ফোর্স নামে পরিচিত) গঠিত হলে ‘এস’ ফোর্সের নেতৃত্বে আসেন সফিউল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান।

১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্ম নেয়া কে এম সফিউল্লাহ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ১৯৯১ সালে দেশে ফিরে এলে তাকে এক বছর ওএসডি করে রাখা হয়। পরের বছর তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান।

তার বাবা কাজী আব্দুল হামিদ এবং মায়ের নাম রজ্জব বানু। তিন ভাই ছয় বোনের মধ্যে শফিউল্লাহ ছিলেন ষষ্ঠ। মুড়াপাড়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপরে মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার আগেই তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। কমিশন লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬৮ সালে সেনা স্টাফ কলেজ (পাকিস্তান) থেকে পিএসসি পাস করেন।

শেয়ার করুন

কে এম সফিউল্লাহ আর নেই

সময় ১১:১৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের ২ নাম্বার সেক্টর কমান্ডার, বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম)।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বাংলা অ্যাফেয়ার্স।

জানা গেছে, নব্বই-ঊর্ধ্ব সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, থাইরয়েডে জটিলতা, ফ্যাটি লিভার, ডিমেনশিয়াসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন তার চলাফেরা চলে স্ট্রেচারে।

কে এম সফিউল্লাহর সন্তান ওয়াকার আহমেদ জানিয়েছেন, আজ দুপুর দেড়টায় রূপগঞ্জ থানা সংলগ্ন আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে কে এম সফিউল্লাহর প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আসর ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা। পরে বনানী সামরিক কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

১৯৭১ সালে সফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। তাঁর নেতৃত্বেই ওই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে সফিউল্লাহ ছিলেন ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। পরে তিনটি নিয়মিত আর্মি ব্রিগেড (ফোর্স নামে পরিচিত) গঠিত হলে ‘এস’ ফোর্সের নেতৃত্বে আসেন সফিউল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান।

১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্ম নেয়া কে এম সফিউল্লাহ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরে মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ১৯৯১ সালে দেশে ফিরে এলে তাকে এক বছর ওএসডি করে রাখা হয়। পরের বছর তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান।

তার বাবা কাজী আব্দুল হামিদ এবং মায়ের নাম রজ্জব বানু। তিন ভাই ছয় বোনের মধ্যে শফিউল্লাহ ছিলেন ষষ্ঠ। মুড়াপাড়া হাইস্কুল থেকে ১৯৫১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপরে মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার আগেই তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। কমিশন লাভ করেন ১৯৫৫ সালে। ১৯৬৮ সালে সেনা স্টাফ কলেজ (পাকিস্তান) থেকে পিএসসি পাস করেন।