‘অস্তিত্ব বিপন্নের শঙ্কায়’ হাসনাত আব্দুল্লাহ
- সময় ০৯:৩০:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
- / 40
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ সমকালীন রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। তিনি ছাত্রদের নেতৃত্বও দিচ্ছেন। তবে এবার জানালেন শঙ্কার কথা।
নিত্যপণ্যের দাম ও ভ্যাট বৃদ্ধির সমালোচনা করে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, দায়িত্ব পালনে গড়িমসি করলে অন্তর্বর্তী সরকারের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে।
আজ বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তার স্ট্যাটাসটি নিচে হুবহু দেওয়া হলো:
এই দেশের অধিকাংশ মানুষ সহজ সরল জীবন যাপনে অভ্যস্ত। দেশটা কেমন আছে সেটাও তারা বোঝার চেষ্টা করেন সহজ হিসাব নিকেশের মধ্যেই। যখন চালের দাম বাড়ে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ে, বাবা-মা-সন্তানের মুখে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে ব্যর্থ হয় মানুষ, তখন তারা ধরে নেয় দেশটা ভালো নেই।
লুটপাটের অর্থনীতি জারি রেখে দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে ফ্যাসিজমের দোসররা। রাষ্ট্রীয় প্রকল্পগুলো থেকে জনগণের কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করে আমাদের অর্থনীতিকে করেছে ভঙ্গুর। চাঁদাবাজির অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা ব্যবসা করতে পারেনি। কিন্তু বিগত স্বৈরাচার আমাদের বলতে দিতো না। জুলাইয়ের স্বাধীনতায় গণমানুষ আবার নিজেদের কথা বলার, হতাশা ব্যক্ত করার, প্রতিবাদ করার সক্ষমতা ফিরে পেয়েছে।
মজলুম মানুষের এই নানামুখী যন্ত্রণা দিনশেষে ফ্যাসিজমের কবর রচনা করেছে বাংলাদেশে। এদেশের মানুষকে দমন করে, নিপীড়ন করে, অত্যাচার করে শাসন করা অসম্ভব। আজ হোক বা কাল- আমরা প্রতিবাদ করবোই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা ও অদক্ষতার বিরুদ্ধেও মানুষ আজ প্রকাশ্যে অবস্থান নিচ্ছে। সত্যিকার অর্থেই মানুষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ। যদিও এটি একটি চমৎকার গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ঈঙ্গিত করে। জনগণের কল্যাণে আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি দাওয়া নিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে পারছি, এবং সরকারের সাথে বিতর্ক করতে পারছি। এদেশের জাগ্রত তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত না করে, তাদের নিয়ে দেশ গঠনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করতে পারলে আমরা সফল হবো। আর অপরপক্ষে গণমানুষ বিবর্জিত বিভাজনের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হলে, জুলাইয়ের সাথে বেইমানি করা হবে।
জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করে সরকারের এমন প্রতিটি পদক্ষেপের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা এদেশের প্রতিটি মানুষ জানার অধিকার রাখে। যেমন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কেনো ভ্যাট বৃদ্ধি করলো, এর বিকল্প কি ছিলো, কিভাবে জিনিসপত্রের দাম অতি দ্রুত মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে, কবের মধ্যে ভ্যাট কমানো হবে- এই ব্যাখ্যা বিশ্লেষণগুলো অবশ্যই অবশ্যই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম একটি দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। এটি নিয়ে ন্যূনতম গড়িমসি করার অর্থ হলো, আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে গণমানুষের স্বপ্ন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অস্তিত্বকে বিপন্ন করা।