স্ত্রী-কন্যাসহ কুমিল্লার বাহারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- সময় ০৫:৫৯:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
- / 27
কুমিল্লার আলোচিত-সমালোচিত সাবেক এমপি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন (বাহার)। আওয়ামী লীগ থেকে ১৭ বছর বহিষ্কার থাকার পরও তিনি এই দলের হয়ে আবারও এমপি হয়েছিলেন। এমনকি মেয়েও হয়েছিল সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাদের।
এবার জ্ঞাত আয় আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম বাহাউদ্দিন (বাহার), তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা, কন্যা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা ও আয়মান বাহারের নামে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে মামলার বিষয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম, সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান ও উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন।
দুদকের অনুসন্ধানে বাহাউদ্দিনের পুরো পরিবারের মোট ৭৪ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার ৮৭৫ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩০১ কোটি ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অবৈধ সম্পদের মধ্যে দুই মেয়ে আয়মান বাহারের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও আজিজা বাহারের নামের ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২২ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের নামে সম্পদের হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দুদকের দায়ের করা এক মামলায় বলা হয়েছে, কুমিল্লার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজের ক্ষমতার অপপ্যবহারপূর্বক ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন এবং তার ২৯টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। ওই অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় কুমিল্লার সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারকে আসামি করা হয়েছে। তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। আর তার ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন সাবেক এমপি বাহাউদ্দীন বাহার ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা। একজন গৃহিণী হয়ে তার স্বামীর অবৈধ সম্পদ বৈধ করার চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর আত্মগোপনে বাহার পরিবার। গত ২৬ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন গুলি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন ওরফে বাহারকে প্রধান আসামি করে আদালতে একটি মামলা হয়েছে।