ঢাকা ০১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেও ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • সময় ১০:২৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 29

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০

দীর্ঘ ১৫ মাস পর গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরাইল। আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তাদের বর্বর হামলায় অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত এক লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন। এদের মধ্যে বহু মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

অন্যদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত পাঁচজনের লাশ জেনিন সরকারি হাসপাতালে পৌঁছেছে। এর আগে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় জেনিনে ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০

ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে মধ্যস্থতা করছে তিনটি দেশ—কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার রাতে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস, যাদের মধ্যে সব নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা রয়েছেন।

গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে গাজার সীমান্তের ৭০০ মিটারের বেশি দূরে অবস্থিত এলাকায় ইসরায়েল তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে।

ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের গাজার উত্তরে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে দেবে এবং প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক পর্যন্ত ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেবে।

শর্ত পূরণ হলে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে অবশিষ্ট সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে।

শেয়ার করুন

যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যেও ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০

সময় ১০:২৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

দীর্ঘ ১৫ মাস পর গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরাইল। আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তাদের বর্বর হামলায় অন্তত ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত এক লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন। এদের মধ্যে বহু মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

অন্যদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বোমা হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত পাঁচজনের লাশ জেনিন সরকারি হাসপাতালে পৌঁছেছে। এর আগে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় জেনিনে ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩০

ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।

যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে মধ্যস্থতা করছে তিনটি দেশ—কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার রাতে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির যে চুক্তি হয়েছে তা আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস, যাদের মধ্যে সব নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা রয়েছেন।

গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে গাজার সীমান্তের ৭০০ মিটারের বেশি দূরে অবস্থিত এলাকায় ইসরায়েল তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে।

ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের গাজার উত্তরে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে দেবে এবং প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক পর্যন্ত ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেবে।

শর্ত পূরণ হলে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে অবশিষ্ট সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে।