ঢাকা ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১১:০৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 29

পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল

পাকিস্তান সফরে গেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেল সদর দপ্তর (জিএইচকিউ) পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদলের এই সফরকে ‘বিরল’ আখ্যায়িত করেছে।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রধান স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসানের নেতৃত্বে এই সফর বহু বছর পর ইসলামাবাদ সফরকারী প্রথম কোনো বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনীর সফর। জেনারেল এস এম কামরুল হাসান সশস্ত্র বাহিনীর দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা।

বৈঠকে জেনারেল এস এম কামরুল হাসান গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিবর্তনকে তুলে ধরেন।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থবির ছিল, হাসিনা বারবার পাকিস্তানের শান্তি প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু তার উৎখাতের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে উভয় পক্ষই তাদের যোগাযোগ বাড়িয়েছে এবং সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য গত কয়েক মাসে শীর্ষ পর্যায়ে বেশ কয়েকটি বৈঠকও হয়েছে। এরপর একজন সিনিয়র জেনারেলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দলের এই সফরকে দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্কের আরেকটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশি জেনারেল পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির এবং চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা।

পাকিস্তানি সেনাপ্রধান ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসানের মধ্যে বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয় এবং দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পথ নিয়ে আলোচনা হয়।

পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) অনুসারে, উভয় জেনারেলই একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যা বহিরাগত প্রভাব থেকে প্রতিরোধ থাকার ওপর জোর দেয়।

পাকিস্তান সেনাপ্রধান দক্ষিণ এশিয়া এবং বৃহত্তর অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রচারের জন্য যৌথ প্রচেষ্টার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় উভয় দেশ যৌথ প্রতিরক্ষা উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তায় অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান ও তার প্রতিনিধিদল সিজেসিসি জেনারেল মির্জার সঙ্গে যৌথ স্টাফ সদর দপ্তরে (জেএসএইচকিউ) বিশদ বৈঠক করেন। তাদের আলোচনায় পারস্পরিক কৌশলগত স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয় এবং দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।

উভয় পক্ষই সামরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার গুরুত্বের ওপর জোর দেয় এবং এই অংশীদারিত্বকে যেকোনো বহিরাগত বাধা থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

জেনারেল মির্জা এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রচারে অব্যাহত সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন স্বীকার করেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন এবং বাহিনীর দৃঢ়তা এবং প্রতিশ্রুতি স্বীকৃতি দেন।

শেয়ার করুন

পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল

সময় ১১:০৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

পাকিস্তান সফরে গেলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেল সদর দপ্তর (জিএইচকিউ) পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদলের এই সফরকে ‘বিরল’ আখ্যায়িত করেছে।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রধান স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসানের নেতৃত্বে এই সফর বহু বছর পর ইসলামাবাদ সফরকারী প্রথম কোনো বাংলাদেশি সশস্ত্র বাহিনীর সফর। জেনারেল এস এম কামরুল হাসান সশস্ত্র বাহিনীর দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা।

বৈঠকে জেনারেল এস এম কামরুল হাসান গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিবর্তনকে তুলে ধরেন।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থবির ছিল, হাসিনা বারবার পাকিস্তানের শান্তি প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু তার উৎখাতের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে উভয় পক্ষই তাদের যোগাযোগ বাড়িয়েছে এবং সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য গত কয়েক মাসে শীর্ষ পর্যায়ে বেশ কয়েকটি বৈঠকও হয়েছে। এরপর একজন সিনিয়র জেনারেলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দলের এই সফরকে দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্কের আরেকটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশি জেনারেল পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির এবং চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (সিজেসিসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা।

পাকিস্তানি সেনাপ্রধান ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসানের মধ্যে বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয় এবং দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পথ নিয়ে আলোচনা হয়।

পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) অনুসারে, উভয় জেনারেলই একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন, যা বহিরাগত প্রভাব থেকে প্রতিরোধ থাকার ওপর জোর দেয়।

পাকিস্তান সেনাপ্রধান দক্ষিণ এশিয়া এবং বৃহত্তর অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রচারের জন্য যৌথ প্রচেষ্টার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। এ সময় উভয় দেশ যৌথ প্রতিরক্ষা উদ্যোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তায় অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান ও তার প্রতিনিধিদল সিজেসিসি জেনারেল মির্জার সঙ্গে যৌথ স্টাফ সদর দপ্তরে (জেএসএইচকিউ) বিশদ বৈঠক করেন। তাদের আলোচনায় পারস্পরিক কৌশলগত স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয় এবং দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা হয়।

উভয় পক্ষই সামরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার গুরুত্বের ওপর জোর দেয় এবং এই অংশীদারিত্বকে যেকোনো বহিরাগত বাধা থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

জেনারেল মির্জা এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রচারে অব্যাহত সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন স্বীকার করেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন এবং বাহিনীর দৃঢ়তা এবং প্রতিশ্রুতি স্বীকৃতি দেন।