ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদার বিদেশ যাত্রায় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব

বিশেষ প্রতিনিধি
  • সময় ০৪:০১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 68

খালেদার বিদেশ যাত্রায় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পৌঁছেছেন। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন। কিন্তু তার এই বিদেশ যাত্রা নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছে।

এর আগে বর্তমান অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর গত ৮ নভেম্বর তার লন্ডন যাত্রার দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছিল। অজ্ঞাত কারণে একদিন আগে তা বাতিল করা হয়। মূলত তখন থেকে নানামুখী আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে বেগম জিয়ার বিদেশ যাত্রার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের স্যোশাল মিডিয়ায় লেখা এক পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবরের ওই পোস্টে আসিফ নজরুল লেখেন ‘গুম বা খুনের ভালো বিকল্প হতে পারে কাউকে সরকারী ঘোষণায় অসুস্থ বানিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া! এই পোষ্টের সাথে তিনি খালেদা জিয়ার একটি ছবিও জুড়ে দেন।

খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে ড. আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে ড. আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে সিসিইউতে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

তিনি এমন এক সময়ে বিদেশে গেলেন যখন তার দল বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি করলেও সরকার ঘনিষ্ঠরা অনেকেই ‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচনের’ সুর তুলেছেন। আর এ নিয়ে বিএনপির মিত্রদের সাথেও টানাপোড়ন তৈরি হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বেশ কয়েক বছর ধরেই লন্ডন থেকে দল পরিচালনা করছেন। দেশে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিস্ক্রয় থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ৫ আগষ্টের পর তারা দু’জনই ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

বিএনপি নেতারা অবশ্য বলছেন অতীত ইতিহাস ও রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে ‘খালেদা জিয়া ফিরবেন কি না কিংবা ফিরতে পারবেন কি না’, এমন নানা আলোচনা ডালপালা মেলেছে, তবে এসব আলোচনার কোনো ভিত্তি নেই বলেই মনে করেন তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্বেগের কারণ মূলত ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে সৃষ্টি। তখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তখন রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ আলোচনায় ছিল এবং দুই নেত্রীকে রাজনীতিকে থেকে সরে দাঁড়াবার জন্য চাপ তৈরি করা হয়েছিলো।

গত পাঁচই অগাস্ট আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার দল আওয়ামী লীগ বিপর্যস্ত। শেখ হাসিনা নিজেও ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তখনও একবার মাইনাস টু ফর্মুলা সামনে এসেছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সরকারের বেশ কিছু কার্যক্রম ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেন সরকারের নেয়া পদক্ষেপের সাথে মিল রয়েছে। যেমন তখনও সরকার ঘনিষ্ঠ একটি অংশ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে ছিল। এবং বড় দুই দলকে আক্রমণ করে নানামুখী বক্তব্য দিচ্ছিলো।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, তারা সবধরনের আলোচনা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। আপাতত এই ধরনের কোন সম্ভাা তারা দেখছেন না।

 

শেয়ার করুন

খালেদার বিদেশ যাত্রায় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব

সময় ০৪:০১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে পৌঁছেছেন। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমান আছেন। কিন্তু তার এই বিদেশ যাত্রা নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছে।

এর আগে বর্তমান অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর গত ৮ নভেম্বর তার লন্ডন যাত্রার দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছিল। অজ্ঞাত কারণে একদিন আগে তা বাতিল করা হয়। মূলত তখন থেকে নানামুখী আলোচনা ছড়িয়ে পড়ে।

এদিকে বেগম জিয়ার বিদেশ যাত্রার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের স্যোশাল মিডিয়ায় লেখা এক পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবরের ওই পোস্টে আসিফ নজরুল লেখেন ‘গুম বা খুনের ভালো বিকল্প হতে পারে কাউকে সরকারী ঘোষণায় অসুস্থ বানিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া! এই পোষ্টের সাথে তিনি খালেদা জিয়ার একটি ছবিও জুড়ে দেন।

খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে ড. আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস
খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা নিয়ে ড. আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে সিসিইউতে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

তিনি এমন এক সময়ে বিদেশে গেলেন যখন তার দল বিএনপি দ্রুত নির্বাচনের দাবি করলেও সরকার ঘনিষ্ঠরা অনেকেই ‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচনের’ সুর তুলেছেন। আর এ নিয়ে বিএনপির মিত্রদের সাথেও টানাপোড়ন তৈরি হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বেশ কয়েক বছর ধরেই লন্ডন থেকে দল পরিচালনা করছেন। দেশে থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিস্ক্রয় থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ৫ আগষ্টের পর তারা দু’জনই ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

বিএনপি নেতারা অবশ্য বলছেন অতীত ইতিহাস ও রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে ‘খালেদা জিয়া ফিরবেন কি না কিংবা ফিরতে পারবেন কি না’, এমন নানা আলোচনা ডালপালা মেলেছে, তবে এসব আলোচনার কোনো ভিত্তি নেই বলেই মনে করেন তারা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্বেগের কারণ মূলত ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে সৃষ্টি। তখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তখন রাজনীতিতে ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ আলোচনায় ছিল এবং দুই নেত্রীকে রাজনীতিকে থেকে সরে দাঁড়াবার জন্য চাপ তৈরি করা হয়েছিলো।

গত পাঁচই অগাস্ট আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার দল আওয়ামী লীগ বিপর্যস্ত। শেখ হাসিনা নিজেও ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তখনও একবার মাইনাস টু ফর্মুলা সামনে এসেছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সরকারের বেশ কিছু কার্যক্রম ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেন সরকারের নেয়া পদক্ষেপের সাথে মিল রয়েছে। যেমন তখনও সরকার ঘনিষ্ঠ একটি অংশ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে ছিল। এবং বড় দুই দলকে আক্রমণ করে নানামুখী বক্তব্য দিচ্ছিলো।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, তারা সবধরনের আলোচনা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। আপাতত এই ধরনের কোন সম্ভাা তারা দেখছেন না।