ঢাকা ০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার সঙ্গে মামলার আসামি বিএনপির কারাভোগী নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, আলফাডাঙ্গা
  • সময় ০২:০৯:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 64

শেখ হাসিনার সঙ্গে মামলার আসামি বিএনপি নেতা

ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় এবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি নেতা এ কে এম উজ্জ্বল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় হতবাক আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির নেতারা। ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় উজ্জ্বল হোসেনকে আসামি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা মো. আব্দুল মমিন সরকার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলাটির আবেদন করেন। শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী সিরাজুল ইসলামসহ ১৪৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় ৭৭ নম্বর আসামি উজ্জ্বল হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কে এম উজ্জ্বল হোসেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য। গত ২০২২ সালের ২২ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেসবুকে ব্যঙ্গ ও কটুক্তি করার অভিযোগ তুলে উজ্জ্বল হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল চৌধুরী আহাদ। পরবর্তীতে ওই সালের ৮ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। কারাগারে থাকার পর ওই মামলায় উচ্চ আদালত তাকে জামিন দেন। কিন্তু সালথা থানার অপর একটি বিস্ফোরক মামলায় উজ্জ্বল হোসেনকে পুণরায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দীর্ঘ কারাভোগের পর জামিনে কারামুক্ত হন তিনি।

এবিষয়ে জানতে মামলার আবেদনে থাকা বাদী মো. আব্দুল মমিন সরকারের মোবাইল নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী এ কে এম উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আমি বুঝতে শেখার পর থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। দলের দুর্দিনে আন্দলোন-সংগ্রামে সরব ছিলাম। গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের কারণে ঠিকমতো এলাকায় থাকতে পারতাম না। রাতে ঘরে ঘুমাতে পারিনি। অকারণেই বাড়িতে পুলিশ চলে আসতো। মিথ্যা ষড়যন্ত্র মামলায় দীর্ঘকাল কারাভোগ করেছি। স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেলেও এখনো তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা তার-ই প্রমাণ করে।

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নুরুজ্জামান খসরু জানান, উজ্জ্বল হোসেন আমাদের দলের দুর্দিনের কান্ডারী। দল করার কারণে মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেছেন। শুনেছি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। বিষয়টি আমাদের হতবাক করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসঙ্গে যারা এটি করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির একজন পরীক্ষিত নেতাকে মামলায় জড়ানোর বিষয়টি দুঃখজনক। এতে মামলা দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আসল অপরাধীরা এর সুযোগ নিতে চাইবে। যারা এই অপকর্মের হোতা তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ফরিদপুর -১ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, উজ্জ্বল হোসেন দলের একজন নিবেদিত কর্মী। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার বিষয়টি লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় বিএনপিকে জানানো হবে। এছাড়া এই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি পেতে তাকে সবধরনের আইনী সহায়তা করা হবে।

শেয়ার করুন

শেখ হাসিনার সঙ্গে মামলার আসামি বিএনপির কারাভোগী নেতা

সময় ০২:০৯:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় এবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি নেতা এ কে এম উজ্জ্বল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় হতবাক আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির নেতারা। ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় উজ্জ্বল হোসেনকে আসামি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা মো. আব্দুল মমিন সরকার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলাটির আবেদন করেন। শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ কাজী সিরাজুল ইসলামসহ ১৪৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় ৭৭ নম্বর আসামি উজ্জ্বল হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ কে এম উজ্জ্বল হোসেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য। গত ২০২২ সালের ২২ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেসবুকে ব্যঙ্গ ও কটুক্তি করার অভিযোগ তুলে উজ্জ্বল হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল চৌধুরী আহাদ। পরবর্তীতে ওই সালের ৮ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেন। কারাগারে থাকার পর ওই মামলায় উচ্চ আদালত তাকে জামিন দেন। কিন্তু সালথা থানার অপর একটি বিস্ফোরক মামলায় উজ্জ্বল হোসেনকে পুণরায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দীর্ঘ কারাভোগের পর জামিনে কারামুক্ত হন তিনি।

এবিষয়ে জানতে মামলার আবেদনে থাকা বাদী মো. আব্দুল মমিন সরকারের মোবাইল নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী এ কে এম উজ্জ্বল হোসেন বলেন, আমি বুঝতে শেখার পর থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। দলের দুর্দিনে আন্দলোন-সংগ্রামে সরব ছিলাম। গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের কারণে ঠিকমতো এলাকায় থাকতে পারতাম না। রাতে ঘরে ঘুমাতে পারিনি। অকারণেই বাড়িতে পুলিশ চলে আসতো। মিথ্যা ষড়যন্ত্র মামলায় দীর্ঘকাল কারাভোগ করেছি। স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে গেলেও এখনো তাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা তার-ই প্রমাণ করে।

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নুরুজ্জামান খসরু জানান, উজ্জ্বল হোসেন আমাদের দলের দুর্দিনের কান্ডারী। দল করার কারণে মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেছেন। শুনেছি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে। বিষয়টি আমাদের হতবাক করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসঙ্গে যারা এটি করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির একজন পরীক্ষিত নেতাকে মামলায় জড়ানোর বিষয়টি দুঃখজনক। এতে মামলা দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আসল অপরাধীরা এর সুযোগ নিতে চাইবে। যারা এই অপকর্মের হোতা তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ফরিদপুর -১ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, উজ্জ্বল হোসেন দলের একজন নিবেদিত কর্মী। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার বিষয়টি লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় বিএনপিকে জানানো হবে। এছাড়া এই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি পেতে তাকে সবধরনের আইনী সহায়তা করা হবে।