অসহযোগী রাষ্ট্রের তালিকায় ভারত
- সময় ১২:২৫:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 17
ভারতকে ‘অসহযোগী রাষ্ট্র’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর চাপ তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসননীতিরই প্রতিফলন এই সিদ্ধান্ত।
মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) সম্প্রতি একটি নতুন প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীর তালিকা করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৮ হাজার ভারতীয় রয়েছেন।
এনডিটিভি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ভুটান, কিউবা, ইরান, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ভেনেজুয়েলাকে অসহযোগী রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তভুক্ত করেছে। এবার সেখানে স্থান পেল ভারত। মূলত অভিবাসন সম্পর্কিত সহযোগিতার অভাবে ভারতের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
আইসিই জানিয়েছে যে, প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় যথাযথ সহযোগিতা না করায় এসব দেশের নাম এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আইসিই আরও জানায়, এই দেশগুলোর নাগরিকদের প্রত্যর্পণের জন্য সাক্ষাৎকার গ্রহণ, ভ্রমণ নথি ইস্যু এবং নির্ধারিত ফ্লাইটে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য গত কয়েক বছরে প্রায় ৯০ হাজার ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই পাঞ্জাব, গুজরাট এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা।
এর আগে ভারতকে ‘সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত’ দেশের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইজারল্যান্ড সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ উৎসে কর দিতে হবে। এর আগে ২০২১ সালে এই হার ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল।
গত শুক্রবার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সুইস সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো আপডেট নেই। আমরা পরে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।’
বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশ যদি অন্য একটি দেশকে মোস্ট ফেভারড নেশনবা ‘এমএফএন’ মর্যাদা দেয়, তাহলে সেই দেশকে শুল্ক ও বাণিজ্য সংক্রান্ত বিশেষ সুবিধা দিতে হয়। এতদিন সুইজারল্যান্ড ভারতকে এই সব সুবিধা দিত। এখন এমএফএন সুবিধাটি বাতিল করার ফলে ভারতের পণ্য রপ্তানি ও দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
এমএফএন ধারা অনুযায়ী, ভারত ও কোনো তৃতীয় ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) দেশের মধ্যে লভ্যাংশ, সুদ, রয়্যালটি বা প্রযুক্তি সেবার ফি-র ওপর কম করের হার প্রযোজ্য হলে, তা সুইজারল্যান্ড ও ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
কিন্তু ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ওই মামলায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলে একটি পক্ষ ছিল। ভারতীয় শীর্ষ আদালত জানান, ভারতীয় আয়কর আইনের ৯০(১) ধারা অনুযায়ী একটি প্রজ্ঞাপন ছাড়া এমন ‘দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি’ কার্যকর হবে না।
ভারতের এ রায়ের ফলে বেঁকে বসে সুইজারল্যান্ড। দেশটির ফাইন্যান্স বিভাগ গত বুধবার জানায়, তারা ভারতকে প্রজ্ঞাপন ছাড়া আর এমএফএন সুবিধা দেবে না। তাই আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এমএফএন সুবিধা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।