১৫ জনের মধ্যে ৯ শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ
নার্গিসের বিরুদ্ধে কোটি টাকার সম্পদ তছরুপের অভিযোগ
- সময় ০৭:০০:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
- / 145
স্কুলের অনুকূলে থাকা কোটি কোটি টাকার সম্পদ ভাগাভাগিতে এতোদিন ব্যস্ত ছিলেন প্রধান শিক্ষক নার্গিস আকতারসহ ৯ শিক্ষক। অবৈধ সিন্ডিকেট করে তারা স্কুলের কয়েক কোটি টাকা তছরুপ করে আত্মসাৎ করেছে। এমন অভিযোগ উঠে এসেছে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে।
সূত্র বলছে, শুধু সরকারি অর্থ আত্মসাৎই নয় স্কুল ফান্ডের প্রায় ৫ শতাধিক দোকানের ভাড়া ও জামানতের অর্থ লোপাটে জড়িত এসব শিক্ষকদের বেতন ভাতা হিসেবে দেয়া ১ কোটি ৩৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
হযরত শাহআলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় দেশের অন্যতম প্রাচীন প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়১৯৮০ সালে এমপিওভূক্ত হয়, ১৯৯২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক স্বীকৃতি ও ২০০০ সালে স্নাতক অধিভুক্তি লাভ করে।
২৭ এপ্রিল ২০০২ সাল প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পান নার্গিস আকতার। কাম্য অভিজ্ঞতায় ৩ বছরের অভিজ্ঞতা ও ১৫ বছরের শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা থাকলেও সেসময় নার্গিসের ছিলোনা যোগ্যতা। তারপরেও এতোদিন কিভাবে চাকুরি করে বেতন পেতেন এসবের জবাব নেই কারো কাছে।
সরেজমিনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ২০২৩ সালের ৫ মার্চ দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ায় সচিবালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করলেও কোন দৃশ্যমান দৃষ্টান্ত দেখা য়ায়নি।
নার্গিসের লুটপাটের অপর সহযোগী মেসার্স টেকনোপল কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী ডেভেলোপার মজিবর রহমান। মার্কেটে দোকান নির্মাণের চুক্তির অর্ধকোটি টাকা ও বিদ্যালয়ের ২৬৮ শতাংশের উপর বহুতল মার্কেটে হাজারেরও বেশি দোকানের কোটি কোটি টাকা ও আদায়কৃত ভ্যাটের প্রায় ৩২ লাখ টাকা জমিদারি ভাড়ার ৩৬ লাখ, নিচ তলার ৭৪ লাখ, বেইজমেন্টের ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায়কৃত বিপুল পরিমাণ টাকা অনাদায়ী ও সরকারি কোষাগারে জমাই পড়েনি!
স্থানীয় সাবেক সাংসদ আসলামুল হক, আগা খান মিন্টু, ও বহুল সমালোচিত যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন নিখিলের অনুসারীরা শুধুমাত্র এ প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়েছেন কোটি টাকা। ক্ষমতা বদলের সাথে সাথে মার্কেটের দোকানীরা আাতংকে আছেন বলেও বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে জানিয়েছেন দোকানীরা।
ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর তোপের মুখে পদত্যাগ করলেও অদৃশ্য শক্তিতে পুনরায় বহাল তবিয়তে নার্গিসরা। ১৫ জনের ৯ জন শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ এমন খবর জানজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। সহকারী শিক্ষক মাহফুজা, ডলি সাহা, শাহানাজ আক্তার, জেসমিন আহমেদ, লক্ষী রাণী দেবনাথ, কোহিনুর নেছা, হোসনে আরা হ্যাপি, ইকবাল আলী তাদের নিয়োগে অনিয়ম, নিয়োগের সময় সব শর্ত পূরণ না হওয়ায় তাদের বেতন ভাতা হিসেবে দেওয়া মোট ১ কোটি ৩৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে।
প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তারের কাছে অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মী শুনেই গেইট বন্ধ করতে দারোয়ানকে নির্দেশ দেন। কাউকে যেন প্রবেশ করতে না দেওয়া হয় সে ব্যপারে কড়া হুঁশিয়ারি দিতেও শোনা যায়।
এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি বিদ্যালয়ের সুনাম ও সম্পদ রক্ষায় এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।