ফারুকীকে চূড়ান্ত হুমকি চরমোনাই পীরের
- সময় ১২:০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
- / 66
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই অন্তর্বতীকালীন সরকারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকীকে চূড়ান্ত হুমকি দিয়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কতেয়ালী থানা শাখার উদ্যেগে বাবুবাজার মাজার ( উত্তরপাশ, ব্রীজের নিচে) ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ইহকাকালীন শান্তি ও পারকালে মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে- আয়োজিত গণসমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের দোসররা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে। ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরা এখনো দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মাফিয়াগোষ্ঠী দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাদের দেসররা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে নতুন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাস্তায় নেমে আসছিলাম বুকভরা আশা নিয়ে। কিন্তু এখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের দেখে আমরা বিস্মিত ও হতবাক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কড়া সমালোচনা করে সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই পীর বলেন, ফ্যাসিবাদের প্রকাশ্য দেসররা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী কোন যোগ্যতা বলে উপদেষ্টা হয়েছে জাতি জানতে চায়। ফারুকীকে প্রত্যাহার না করলে আবারো রাজপথে নামবো। যা কিছু হবে রাজপথে ফায়সালা হবে।
৫ আগস্ট পরবর্তী সময় আমরা ভেবছিলাম আর বৈষম্য থাকবে না। কিন্তু আমরা কি দেখলাম? এখনো বৈষম্য দূর হয়নি, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। সন্ত্রাসী দূর হয়নি। সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। অন্যায় অত্যাচার বন্ধ হয়নি। খুন রাহাজানি বন্ধ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছেন এবং নিরাপত্তার সাথে আছেন। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু ইস্যুকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। এদেশের জনগণ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা রুখে দিয়েছে। তিনি বিশ্ববাসিকে অপপ্রচারে কান না দেয়ার আহ্বান জানান।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলেন, অবিলম্বে সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় নাগালে রাখুন। সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নিন। গরিবদুঃখী মানুষের নাভিশ্বাস কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে আরও বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরে জনতার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি আপনাদের ওপর জনতার আকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। কোনে বিশেষ মহল কিংবা কোনো বিশেষ দলকে সুবিধা জাতির সাথে প্রতারণা করবেন না। দেশের সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামতের মর্যাদা দিয়ে আগামি সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু করুন। সময়কে ধারণ করে পিআর পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি বন্ধ, নমিনেশন বাণিজ্য বন্ধসহ রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধে এগিয়ে আসুন। আপনারা রাষ্ট্রে একটি আমূল পরিবর্তন আনুন। প্রয়োজনীয় সংস্কার করুন বিনা ভয়ে। কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী যেন আপনাদের দ্বারা বিশেষ কোনো সুবিধা না পায় সেদিকে সতর্ক ও সজাগ থাকুন। ফ্যাসিবাদের ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আমাদের শহীদের রক্ত যেন বৃথা না যায়, শহীদের রক্তের সাথে যেন গাদ্দারি করা হয় সেদিকে নজর রাখুন।
গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কতোয়ালী থানা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, আলহাজ আবদুর রহমান, ডা. মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, আলহাজ কেএম বিল্লাল হোসাইন, হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, মুহাম্মদ নুরুজ্জামান সরকার, মাওলানা কে এম শরীয়াতুল্লাহ, আলহাজ এম এইচ মোস্তফা, মুহাম্মদ কায়েস উদ্দিন, মুহাম্মদ আল-আমিন সোহাগ, হাফেজ মুহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন প্রধানীয়া, মাওলানা মুহাম্মদ জোবায়ের হোসাইন, আরিয়ান মুহাম্মদ ইমন, আলহাজ মুহাম্মদ আলী হোসেন প্রমুখ।