মানবপাচারের অভিযোগ
দুই ভাই ও ভাবির কারাদণ্ড

- সময় ০৯:৫৪:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
- / 103
বরিশালে মানবপাচার আইনের ধারায় দুই ভাই ও ভাবিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। করা হয়েছে জরিমানাও। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বরিশাল মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠি এলাকার বাসিন্দা মো. হারুন অর রশিদের ছেলে কাতার প্রবাসী জসিম উদ্দীন হাওলাদার, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান যুথি ও ছোট ভাই ভানুয়াতু প্রবাসী পলাশ হাওলাদার।
বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহাজুল ইসলাম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মান্নান মৃধা জানান, জসিমউদ্দীন ও পলাশকে দুই ধারায় যাবজ্জীবন ও ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যুথীকে দুই ধারায় ১৭ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় শুধু যুথী এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক বলে জানিয়েছেন বেঞ্চ সহকারী তুহিন মোল্লা।
মামলার বাদী হলেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেন।মামলার বরাতে বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহাজুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রধান সাক্ষী সজল জমদ্দার ও বাদী মোফাজ্জেল একই এলাকায় ব্যবসা করতেন। ব্যবসার সুবাধে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। এর জেরে সজল জানান তার খালাতো ভাই পলাশ হাওলাদার কিউবা থাকেন। তাকে কিউবা নিয়ে যাবে। সজলের প্রস্তাবে পলাশের সাথে কথা বলে মাসে ৮০ হাজার টাকা বেতনে মোফাজ্জেলও কিউবা যেতে রাজি হন। শর্ত অনুযায়ী সজল ও মোফাজ্জেল কথিত কিউবাপ্রবাসী পলাশের ভাই জসিম উদ্দীন ও তার স্ত্রীকে মোট ২১ লাখ টাকা দেন। ওই টাকা দেয়ার পর ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর কলকাতা, দিল্লি, সিঙ্গাপুর ও ফিজি হয়ে ভানুয়াতু পৌঁছেন তারা। সেখানে পলাশ তাদেরসহ মোট ১০ জনকে নিয়ে একটি নির্জন ঘরে আটকে রাখেন। পরে সেখান থেকে অষ্ট্রেলিয়া নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।

এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে পলাশের ভাইসহ স্বজনদের আরো ৭ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু তাদের অষ্ট্রেলিয়া পাঠানো হয়নি। ভানুয়াতুতে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকার পর কয়েকজন পুলিশের কাছে ধরা দেন। পরে দেশে ফিরে টাকা ফেরত চাইলে আসামিরা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এছাড়াও তাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর মানবপাচার আইনে বরিশাল মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন মোফাজ্জেল হোসেন। মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে দুইজনকে বাদ দিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হয়। এদিকে দীর্ঘদিন পরে রায় পেয়ে খুশি বিচারপ্রার্থীরা। আর মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীর দাবি, তারা সুষ্ঠু বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
শেয়ার করুন

মানবপাচারের অভিযোগ
দুই ভাই ও ভাবির কারাদণ্ড

বরিশালে মানবপাচার আইনের ধারায় দুই ভাই ও ভাবিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। করা হয়েছে জরিমানাও। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বরিশাল মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এ রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠি এলাকার বাসিন্দা মো. হারুন অর রশিদের ছেলে কাতার প্রবাসী জসিম উদ্দীন হাওলাদার, তার স্ত্রী জান্নাতুর রহমান যুথি ও ছোট ভাই ভানুয়াতু প্রবাসী পলাশ হাওলাদার।
বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহাজুল ইসলাম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মান্নান মৃধা জানান, জসিমউদ্দীন ও পলাশকে দুই ধারায় যাবজ্জীবন ও ১৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যুথীকে দুই ধারায় ১৭ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় শুধু যুথী এজলাসে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক বলে জানিয়েছেন বেঞ্চ সহকারী তুহিন মোল্লা।
মামলার বাদী হলেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জয়শ্রী গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেন।মামলার বরাতে বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহাজুল ইসলাম বলেন, মামলার প্রধান সাক্ষী সজল জমদ্দার ও বাদী মোফাজ্জেল একই এলাকায় ব্যবসা করতেন। ব্যবসার সুবাধে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়। এর জেরে সজল জানান তার খালাতো ভাই পলাশ হাওলাদার কিউবা থাকেন। তাকে কিউবা নিয়ে যাবে। সজলের প্রস্তাবে পলাশের সাথে কথা বলে মাসে ৮০ হাজার টাকা বেতনে মোফাজ্জেলও কিউবা যেতে রাজি হন। শর্ত অনুযায়ী সজল ও মোফাজ্জেল কথিত কিউবাপ্রবাসী পলাশের ভাই জসিম উদ্দীন ও তার স্ত্রীকে মোট ২১ লাখ টাকা দেন। ওই টাকা দেয়ার পর ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর কলকাতা, দিল্লি, সিঙ্গাপুর ও ফিজি হয়ে ভানুয়াতু পৌঁছেন তারা। সেখানে পলাশ তাদেরসহ মোট ১০ জনকে নিয়ে একটি নির্জন ঘরে আটকে রাখেন। পরে সেখান থেকে অষ্ট্রেলিয়া নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।

এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে পলাশের ভাইসহ স্বজনদের আরো ৭ লাখ টাকা দেয়া হয়। কিন্তু তাদের অষ্ট্রেলিয়া পাঠানো হয়নি। ভানুয়াতুতে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকার পর কয়েকজন পুলিশের কাছে ধরা দেন। পরে দেশে ফিরে টাকা ফেরত চাইলে আসামিরা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এছাড়াও তাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর মানবপাচার আইনে বরিশাল মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন মোফাজ্জেল হোসেন। মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে দুইজনকে বাদ দিয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হয়। এদিকে দীর্ঘদিন পরে রায় পেয়ে খুশি বিচারপ্রার্থীরা। আর মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীর দাবি, তারা সুষ্ঠু বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।