সিরাত সম্মেলনে চরমোনাই পীর
‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছেন’
- সময় ০৬:১৮:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
- / 83
কিছু বুদ্ধিজীবী দেশকে নতুনভাবে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
তিনি বলেন, দেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছেন এবং নিরাপত্তার সাথে আছেন। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু ইস্যুকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে।
শনিবার সকালে দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন চরমোনাই পীর। রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রেজাউল করীম বলেন, ফ্যাসিবাদ মাফিয়াতন্ত্রমুক্ত দেশগঠনে রাসুলের সিরাত অনুসরণ অপরিহার্য। রাসুল সা.-এর সিরাত থেকে দূরে থাকার ফলে ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য, বেইনসাফ ও কায়েমি স্বার্থবাদগোষ্ঠী আমাদের ওপর চেপে বসেছে। ইসলাম ছাড়া কোথাও শান্তি নেই। শান্তি ও মুক্তির একমাত্র ঠিকানা হলো ইসলাম।
তিনি বলেন, কিছু বুদ্ধিজীবী দেশকে নতুনভাবে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। রাসুল সা. যে নীতি আদর্শ নিয়ে আসছে সেই নীতির অনুসরণ ছাড়া সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সমাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
৫ আগস্টের পূর্বে দেশে যা ঘটানো হয়েছে তা মনুষ্য সমাজে ঘটতে পারে না। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা জীবনবাজি রেখে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জানমাল রক্ষায় কাজ করেছে। আর এটাই ইসলামের শিক্ষা।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছেন এবং নিরাপত্তার সাথে আছেন। আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু ইস্যুকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। এদেশের জনগণ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা রুখে দিয়েছে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে তিনি অন্তর্র্বতীকালীন সরকারে সতর্ক করে বলেন, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় নাগালে রাখুন। সিন্ডিকেট ভেঙে দিন। কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী সার ও বীজ সরবরাহ বৃদ্ধি এবং সারের দাম কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে এতে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, আল্লামা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা মুহাম্মাদ যাইনুল আবিদীন, মুফতি ওয়ালিউর রহমান।
সিরাত সম্মেলনে হিফজুল হাদিস প্রতিযোগিতা, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, কিরাত ও মাসনূন দোয়া প্রতিযোগিতাসহ ৭ ক্যাটাগরিতে ১১০ জন প্রতিযোগীকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর আরও বলেন, হিংসা, বিদ্ধেষ পরনিন্দা বন্ধ করে সবাইকে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্যও তিনি সকল দল ও ব্যক্তির প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছরে এতো বেশি পরিমাণ সমর্থন নিয়ে আর কোনো সরকার পায়নি। এতো সমর্থন পাওয়ার পর আপনাদের ভয় কিসের? আপনারা রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন আনুন। প্রয়োজনীয় সংস্কার করুন বিনা ভয়ে। কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী যেন আপনাদের দ্বারা বিশেষ কোনো সুবিধা না পায় সেদিকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। আপনাদের মনে রাখতে হবে ফ্যাসিবাদের ও মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আমাদের শহীদের রক্ত যেন অমলিন না হয়। শহীদের রক্তের সাথে গাদ্দারি করা হলে জনগণ তা রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে নতুন করে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে তা প্রতিরোধ করা হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলা হবে। তিনি আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করলে তা আবারো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করা হবে।
৫ আগস্টের পূর্বে যারা দেশে গণহত্যা করেছে, অনেক মায়ের বুক খালি করেছে, হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করেছে তারা মনে করছে আমরা নাকে তৈল দিয়ে ঘুমাচ্ছি। কিন্তু আমরা ঘুমন্ত নই। আমাদের চোখ কান খোলা রয়েছে।