ঢাকা ০৩:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপার প্রতিও সহনশীল বিএনপি

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১২:০৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪
  • / 254

হঠাৎ জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন দলটি আলোচনায়। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ঘটনাটিকে এই সময়ে রাজনীতিতে একটি ‘অপ্রয়োজনীয়’ কাজ হিসেবেই দেখছে অন্যতম প্রধান দল বিএনপি।

দলটি এ বিষয়কে দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি চক্রান্ত বলেও উল্লেখ করেছে। এমনকি জাতীয় পার্টির প্রতিও সহনশীল মনোভাব পোষণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে এমনটাই ফুটে উঠেছ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার তিন মাসের মধ্যেই কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিষয়টিকে অনেকে ভালোভাবে নেননি। কেউ কেউ এ ঘটনাকে কারও কারও অতি উৎসাহ হিসেবে দেখছেন।

আর তাতে শেষ বিচারে কে লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও চলছে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহলে। যদিও এ ঘটনায় জাতীয় পার্টি কিছুটা চাপে পড়েছে।

দলের কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরও সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছিল জাপা। সেই সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে পাল্টা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতার ব্যানারে।

দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের প্রেক্ষাপটে জাপা কার্যালয় এলাকায় সভা–সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ। পুলিশের নিষেধাজ্ঞা মেনে দুই পক্ষই তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।

বিএনপি মনে করে, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নি সংযোগের মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে অযথা এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে।

গতকাল শনিবার ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে এ বিষয়ে।

জাতীয় পার্টি ঘিরে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মনে করি, এর মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে অযথা এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে।

এ বিষয় নিয়েই গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বিএনপির প্রয়াত নেতা সাবিহ উদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সে সময় জাতীয় পার্টি ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এটা একটা চক্রান্ত।

দেশে একটা অনিশ্চয়তা সৃষ্টির জন্য চক্রান্ত করা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল এ–ও বলেন, যেটা কোনো ইস্যুই নয়, সেই ইস্যুকে সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিএনপির মিত্র ছয়টি দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছে।

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বিবেচনায় জাতীয় পার্টিকে রাজনীতিতে কোণঠাসা বা অকার্যকর করার কৌশল নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরই অংশ হিসেবে দলটিকে এড়িয়ে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কারণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সাম্প্রতিক সংলাপে আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় পার্টিকেও বাদের তালিকায় রাখা হয়।

এ নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ এবং পাল্টাপাল্টি অবস্থানে জাতীয় পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের একটি অংশ মুখোমুখি হয়। এর রেশ ধরেই গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’র ব্যানারে একদল লোক প্রথমে হামলা ও পরে আসবাবপত্রে আগুন দেয়। এতে দলটির কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বিবেচনায় জাতীয় পার্টিকে রাজনীতিতে কোণঠাসা বা অকার্যকর করার কৌশল নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরই অংশ হিসেবে দলটিকে এড়িয়ে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার।

জাতীয় পার্টি অফিসে আগুন

এ ঘটনা আলোচনার বাইরে থাকা জাতীয় পার্টির জন্য রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দলটি প্রকাশ্যে আসতে পারেনি। সেখানে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বলা হলেও এখন পর্যন্ত দলটি ভালোভাবেই তৎপর রয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রধান জি এম কাদের কঠোরভাবেই এর প্রতিবাদ করছেন।

একই সঙ্গে বিগত নির্বাচনগুলোতে কোন পরিস্থিতিতে, কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করেছেন, তার ব্যাখ্যাও তুলে ধরছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা বলেন, আমাদের জন্য রাজনীতিতে একটা অবস্থানের প্রয়োজন ছিল। সেটা হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পার্টিকে নিয়ে এতটা কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুরো নেতৃত্ব এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির কোনো সমন্বিত সিদ্ধান্ত ছিল না। এতে কারও কারও ব্যক্তিগত খেদ বা অতি উৎসাহ কাজ করেছে।

তারা মনে করেন, পতিত ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জাতির জন্য ‘ভরসার’ জায়গা তৈরি করেছিল। সে রকম একটি অবস্থানে পৌঁছে ছাত্রদের কোনো বিষয়ে হুটহাট সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং এ ধরনের ঘটনায় যুক্ত হওয়ায় তারা সমালোচনার জায়গায় চলে গেছেন।

তবে গতকাল শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম তাদের ফেসবুকে অভিন্ন পোস্ট দেন। তারা লিখেছেন, ‘যেই পথে গেছে আপা, সেই পথে যাবে জাপা।’ অর্থাৎ শেখ হাসিনা যে পথে গেছেন, জাতীয় পার্টিও সে পথে যাবে। তাঁদের এই অবস্থান জাতীয় পার্টিকে রাজনীতি থেকে মূলোৎপাটনের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন দলটির নেতারা।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব বা ছাত্রদের নাম যুক্ত হওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়। জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিবাদী এবং তাদের সহযোগীদের রাজনৈতিকভাবেই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।

শেয়ার করুন

জাপার প্রতিও সহনশীল বিএনপি

সময় ১২:০৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

হঠাৎ জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন দলটি আলোচনায়। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ঘটনাটিকে এই সময়ে রাজনীতিতে একটি ‘অপ্রয়োজনীয়’ কাজ হিসেবেই দেখছে অন্যতম প্রধান দল বিএনপি।

দলটি এ বিষয়কে দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি চক্রান্ত বলেও উল্লেখ করেছে। এমনকি জাতীয় পার্টির প্রতিও সহনশীল মনোভাব পোষণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে এমনটাই ফুটে উঠেছ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার তিন মাসের মধ্যেই কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিষয়টিকে অনেকে ভালোভাবে নেননি। কেউ কেউ এ ঘটনাকে কারও কারও অতি উৎসাহ হিসেবে দেখছেন।

আর তাতে শেষ বিচারে কে লাভবান বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও চলছে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক মহলে। যদিও এ ঘটনায় জাতীয় পার্টি কিছুটা চাপে পড়েছে।

দলের কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরও সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছিল জাপা। সেই সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে পাল্টা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতার ব্যানারে।

দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের প্রেক্ষাপটে জাপা কার্যালয় এলাকায় সভা–সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ। পুলিশের নিষেধাজ্ঞা মেনে দুই পক্ষই তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে।

বিএনপি মনে করে, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নি সংযোগের মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে অযথা এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে।

গতকাল শনিবার ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে এ বিষয়ে।

জাতীয় পার্টি ঘিরে এই পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মনে করি, এর মধ্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে অযথা এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে।

এ বিষয় নিয়েই গতকাল ঢাকায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার আমরা কারা? জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বিএনপির প্রয়াত নেতা সাবিহ উদ্দিন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। সে সময় জাতীয় পার্টি ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, এটা একটা চক্রান্ত।

দেশে একটা অনিশ্চয়তা সৃষ্টির জন্য চক্রান্ত করা হচ্ছে। মির্জা ফখরুল এ–ও বলেন, যেটা কোনো ইস্যুই নয়, সেই ইস্যুকে সামনে এনে নতুন করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিএনপির মিত্র ছয়টি দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছে।

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বিবেচনায় জাতীয় পার্টিকে রাজনীতিতে কোণঠাসা বা অকার্যকর করার কৌশল নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরই অংশ হিসেবে দলটিকে এড়িয়ে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ কারণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সাম্প্রতিক সংলাপে আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় পার্টিকেও বাদের তালিকায় রাখা হয়।

এ নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ এবং পাল্টাপাল্টি অবস্থানে জাতীয় পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের একটি অংশ মুখোমুখি হয়। এর রেশ ধরেই গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’র ব্যানারে একদল লোক প্রথমে হামলা ও পরে আসবাবপত্রে আগুন দেয়। এতে দলটির কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বিবেচনায় জাতীয় পার্টিকে রাজনীতিতে কোণঠাসা বা অকার্যকর করার কৌশল নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরই অংশ হিসেবে দলটিকে এড়িয়ে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার।

জাতীয় পার্টি অফিসে আগুন

এ ঘটনা আলোচনার বাইরে থাকা জাতীয় পার্টির জন্য রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দলটি প্রকাশ্যে আসতে পারেনি। সেখানে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ বলা হলেও এখন পর্যন্ত দলটি ভালোভাবেই তৎপর রয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রধান জি এম কাদের কঠোরভাবেই এর প্রতিবাদ করছেন।

একই সঙ্গে বিগত নির্বাচনগুলোতে কোন পরিস্থিতিতে, কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করেছেন, তার ব্যাখ্যাও তুলে ধরছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা বলেন, আমাদের জন্য রাজনীতিতে একটা অবস্থানের প্রয়োজন ছিল। সেটা হয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পার্টিকে নিয়ে এতটা কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুরো নেতৃত্ব এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির কোনো সমন্বিত সিদ্ধান্ত ছিল না। এতে কারও কারও ব্যক্তিগত খেদ বা অতি উৎসাহ কাজ করেছে।

তারা মনে করেন, পতিত ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জাতির জন্য ‘ভরসার’ জায়গা তৈরি করেছিল। সে রকম একটি অবস্থানে পৌঁছে ছাত্রদের কোনো বিষয়ে হুটহাট সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং এ ধরনের ঘটনায় যুক্ত হওয়ায় তারা সমালোচনার জায়গায় চলে গেছেন।

তবে গতকাল শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম তাদের ফেসবুকে অভিন্ন পোস্ট দেন। তারা লিখেছেন, ‘যেই পথে গেছে আপা, সেই পথে যাবে জাপা।’ অর্থাৎ শেখ হাসিনা যে পথে গেছেন, জাতীয় পার্টিও সে পথে যাবে। তাঁদের এই অবস্থান জাতীয় পার্টিকে রাজনীতি থেকে মূলোৎপাটনের চেষ্টা হিসেবে দেখছেন দলটির নেতারা।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব বা ছাত্রদের নাম যুক্ত হওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়। জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিবাদী এবং তাদের সহযোগীদের রাজনৈতিকভাবেই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।