ব্ল্যাকপিঙ্কের অজানা অধ্যায়!
- সময় ০৪:৪৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
- / 236
সঙ্গীতের জগতে এক নবজাগরণের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্ল্যাকপিঙ্ক। দক্ষিণ কোরিয়ার চার সদস্যের মেয়েদের ব্যান্ডটি কেবল কোরিয়ান পপ সংগীতকে নয়, বরং পুরো বিশ্বকে আকৃষ্ট করেছে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তারা হয়ে উঠেছে আধুনিক পপ কালচারের অন্যতম প্রভাবশালী আইকন।
ব্ল্যাকপিঙ্ক গঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালে, দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত ওয়াইজি এন্টারটেইনমেন্টের হাত ধরে। তাদের সদস্য হলেন জিসু, জেনি, রোজ এবং লিসা। তারা সবাই আলাদা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন, কিন্তু তাদের মিউজিক, নাচ এবং স্টাইল দিয়ে পুরো বিশ্বকে একত্রিত করেছেন।
জিসু, গ্রুপের সবচেয়ে বড় সদস্য , তার নিরব, দৃঢ় ব্যক্তিত্ব এবং অপূর্ব কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে ব্যান্ডের অনুপ্রেরণা। জেনি, র্যাপ এবং ভোকালের অসাধারণ মিশ্রণ, সাথে তার ফ্যাশন সেন্স তাঁকে করে তুলেছে একজন গ্লোবাল ফ্যাশন আইকন।
অন্যদিকে রোজ, নিউজিল্যান্ডে বেড়ে উঠা একজন গায়িকা, তার আবেগপ্রবণ গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যান। আর লিসা, থাইল্যান্ড থেকে আসা, কেবল তার র্যাপিং নয়, তার নাচের দক্ষতা দিয়েও প্রশংসিত।
তবে তাদের এই সফলতার পথ মোটেও সহজ ছিল না। ব্ল্যাকপিঙ্কের প্রতিটি সদস্যে দীর্ঘ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে গেছেন, যেখানে তাদের প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে গান, নাচ এবং পারফমেন্সের প্র্যাকটিস করতে হত। এত বছরের পরিশ্রম এবং ডেডিকেশন তাদের আজকের অবস্থানে এনেছে।
ব্ল্যাকপিঙ্কের সবচেয়ে বড় শখ তাদের পারফমেন্স। তাদের কনসার্টগুলো কেবল সংগীতের জন্যই নয়, বরং একটি ভিজ্যুয়াল ফেস্ট হিসেবে পরিণত হয়। বিশাল স্টেজ, লাইটিং এবং চার সদস্যের অনবদ্য পারফমেন্স- সবকিছু মিলে ব্ল্যাকপিঙ্কের কনসার্ট একটি মহাযজ্ঞ হয়ে ওঠে।
ব্ল্যাকপিঙ্ক-এর গ্লোবাল ট্যুরের মাধ্যমে তারা শুধু এশিয়া নয়, ইউরোপ এবং আমেরিকার অনেক দেশেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাদের ফ্যানবেজ, যাদেরকে বলা হয় ‘ব্লিঙ্কস’, তারা ব্যান্ডের প্রতি অগাধ ভালোবাসা এবং সমর্থন প্রদর্শন করেন।
ব্ল্যাকপিঙ্ক-এর গান কেবল কোরিয়ান ভাষায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের অনেক গান ইংরেজিতেও রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী তাদের পরিচিতি বাড়িয়েছে।
ব্ল্যাকপিঙ্কের গান ‘দু-দু-দু’, ‘হাউ ইউ লাইক দ্যাট’, ‘কিল ডিস লাভ’ — এগুলো শুধু কোরিয়ান চার্টেই নয়, বিলবোর্ড চার্টেও সফলতা অর্জন করেছে। ২০১৯ সালে ব্ল্যাকপিঙ্ক প্রথম কে-পপ গার্ল গ্রুপ হিসেবে কোচেলা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করে ইতিহাস সৃষ্টি করে।
সংগীতের পাশাপাশি, ফ্যাশন জগতেও ব্ল্যাকপিঙ্কের সদস্যেরা দারুণভাবে জড়িত। তারা বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষ ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মুখপাত্র এবং মডেল হিসেবে কাজ করছেন। তাদের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট, স্টাইল এবং ট্রেন্ডস সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয়।
তবে ব্ল্যাকপিঙ্ক শুধু বিনোদনেই সীমাবদ্ধ নয়। তারা পরিবেশ রক্ষায় এবং নারী ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত প্রচারেও অংশ নিয়েছেন। ২০২০ সালে তারা ‘গ্রেট ওশান ক্লিনআপ’-এ যোগ দিয়েছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানোর একটি উদ্যোগ।
ব্ল্যাকপিঙ্ক প্রমাণ করেছে সঙ্গীতের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে এক নতুন সেতু তৈরি করা সম্ভব। তাদের প্রতিভা, শ্রম, এবং আবেগ প্রমাণ করে যে সংগীতের কোনও ভাষা হয় না।