ঢাকা ০২:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব স্থান দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ!

আকাশ ইসলাম
  • সময় ০৬:৩৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
  • / 257

প্রতিদিন, হাজার হাজার বিমান আকাশে উড়ে যায়, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কিন্তু আপনি কি জানেন, পৃথিবীর কিছু স্থান রয়েছে যেখানে আকাশে বিমানের চলাচল নিষিদ্ধ ?

তেমনই একটি নো ফ্লাই জোন মক্কা ও মদিনা, ইসলামের দুটি পবিত্র শহর। এই শহরগুলির উপর দিয়ে বিমান চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। ধর্মীয় এবং নিরাপত্তার কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা। লাখ লাখ মুসলিম হজ ও উমরাহ পালন করতে এখানে আসেন, তাই এদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। যদি কোনো পাইলট ভুলক্রমেও সে পথে চলে যান, তাহলে তাকে গুনতে হয় জরিমানা।

ভারতের আগ্রায় অবস্থিত তাজমহল, বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি। এই স্থাপনার উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি স্থাপনার সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছে। তাজমহলের উপর দিয়ে বিমান চললে এটি ধুলাবালি ও কম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেস, ব্রিটিশ রাণীর বাসভবন। নিরাপত্তার কারণে এই প্যালেসের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাণী ও রাজপরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনিল্যান্ড এবং ফ্লোরিডার ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ডের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং আরাম নিশ্চিত করতে নেওয়া ব্যবস্থা।

এই পার্কটি ছবির মতো সুন্দর। উপর থেকে যেন কেউ ডিজনি পার্কের সৌন্দর্য অবলোকন করতে না পারে, সেজন্যই এই ব্যবস্থা। একাধিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ডিজনি পার্কের ৩০০০ ফুটের মধ্যে কোনো বিমান ওড়ার অনুমতি নেই। যদিও এটি প্রাথমিকভাবে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে ২০০৩ সালে নিয়মটি স্থায়ীভাবে চালু হয়।

কেম্যানস আইল্যান্ডের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে পরিবেশগত কারণেই। এই দ্বীপগুলি তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

উওনসান, নর্থ কোরিয়ার একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সরকারের কঠোর নীতির কারণে এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ। এটি দেশের নিরাপত্তা এবং সরকারী নীতিমালা অনুসারে করা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু স্থানগুলোর মধ্যে তিব্বত অন্যতম। সেখানকার গড় উচ্চতা প্রায় ১৬০০০ ফুট। তিব্বতও নো-ফ্লাই জোন হিসেবে বিবেচিত। এর কারণ হলো সেখানে সুউচ্চ সব পাহাড় আছে।

যদিও বেশিরভাগ বাণিজ্যিক বিমানই পাহাড়ের অনেক উপর দিয়ে চলাচল করে, তবে সেখানকার ফ্লাইট রুটগুলো যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ওই এলাকার উঁচু পাহাড় এড়িয়ে চলে।

এই নিষিদ্ধ আকাশপথগুলি শুধুমাত্র নিরাপত্তা ও সংরক্ষণের জন্যই নয় বরং সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। এই স্থানগুলি আমাদের পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের প্রতীক। পৃথিবীর আকাশে এই নিষিদ্ধ অঞ্চলগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব।

শেয়ার করুন

যেসব স্থান দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ!

সময় ০৬:৩৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

প্রতিদিন, হাজার হাজার বিমান আকাশে উড়ে যায়, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কিন্তু আপনি কি জানেন, পৃথিবীর কিছু স্থান রয়েছে যেখানে আকাশে বিমানের চলাচল নিষিদ্ধ ?

তেমনই একটি নো ফ্লাই জোন মক্কা ও মদিনা, ইসলামের দুটি পবিত্র শহর। এই শহরগুলির উপর দিয়ে বিমান চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। ধর্মীয় এবং নিরাপত্তার কারণেই এই নিষেধাজ্ঞা। লাখ লাখ মুসলিম হজ ও উমরাহ পালন করতে এখানে আসেন, তাই এদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। যদি কোনো পাইলট ভুলক্রমেও সে পথে চলে যান, তাহলে তাকে গুনতে হয় জরিমানা।

ভারতের আগ্রায় অবস্থিত তাজমহল, বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি। এই স্থাপনার উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি স্থাপনার সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্যই করা হয়েছে। তাজমহলের উপর দিয়ে বিমান চললে এটি ধুলাবালি ও কম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেস, ব্রিটিশ রাণীর বাসভবন। নিরাপত্তার কারণে এই প্যালেসের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাণী ও রাজপরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনিল্যান্ড এবং ফ্লোরিডার ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ডের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং আরাম নিশ্চিত করতে নেওয়া ব্যবস্থা।

এই পার্কটি ছবির মতো সুন্দর। উপর থেকে যেন কেউ ডিজনি পার্কের সৌন্দর্য অবলোকন করতে না পারে, সেজন্যই এই ব্যবস্থা। একাধিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ডিজনি পার্কের ৩০০০ ফুটের মধ্যে কোনো বিমান ওড়ার অনুমতি নেই। যদিও এটি প্রাথমিকভাবে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে ২০০৩ সালে নিয়মটি স্থায়ীভাবে চালু হয়।

কেম্যানস আইল্যান্ডের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে পরিবেশগত কারণেই। এই দ্বীপগুলি তাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

উওনসান, নর্থ কোরিয়ার একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। সরকারের কঠোর নীতির কারণে এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ। এটি দেশের নিরাপত্তা এবং সরকারী নীতিমালা অনুসারে করা হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু স্থানগুলোর মধ্যে তিব্বত অন্যতম। সেখানকার গড় উচ্চতা প্রায় ১৬০০০ ফুট। তিব্বতও নো-ফ্লাই জোন হিসেবে বিবেচিত। এর কারণ হলো সেখানে সুউচ্চ সব পাহাড় আছে।

যদিও বেশিরভাগ বাণিজ্যিক বিমানই পাহাড়ের অনেক উপর দিয়ে চলাচল করে, তবে সেখানকার ফ্লাইট রুটগুলো যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ওই এলাকার উঁচু পাহাড় এড়িয়ে চলে।

এই নিষিদ্ধ আকাশপথগুলি শুধুমাত্র নিরাপত্তা ও সংরক্ষণের জন্যই নয় বরং সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত কারণেও গুরুত্বপূর্ণ। এই স্থানগুলি আমাদের পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের প্রতীক। পৃথিবীর আকাশে এই নিষিদ্ধ অঞ্চলগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের পরিবেশ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব।