ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের কাজে নয়ছয়

আব্দুস সালাম মিতুল, রাজশাহী থেকে ফিরে
  • সময় ০৪:২৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / 32

ছবি: রাজশাহী গণপূর্ত অধিদপ্তর।

সরকার পাল্টালেও নিয়ম পাল্টায়নি রাজশাহী গণপূর্ত অধিদপ্তরে। বিগত সরকারের সময় দুর্নীতি ও অনিয়ম করা কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটির আইসিইউ ইউনিট স্থাপনে তিনটি স্মার্ট দরজা এবং বেড কাম প্যাসেঞ্জার লিফট স্থাপনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ব্রাদার্স কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে।

দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানের জাপানে তৈরি ‘এ’ ক্যাটাগরির ফুজি কোম্পানির লিফট সরবরাহের কথা থাকলেও তিনি সরবরাহ করেন চীনের তৈরি ‘সি’ ক্যাটাগরির লিফট। দুটির দামের পার্থক্যও ছিলো বেশ চোখে পড়ার মতো। তদন্তে এই অনিয়ম প্রমান হওয়ার পরেও আবারও সেই প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

কারন হিসেবে সংস্থাটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল গোফফার জানান, নতুন করে ট্রেন্ডার প্রক্রিয়ায় গেলে তাতে সরকারের ক্ষতি হবে; এই বিবেচনায় আগের ঠিকাদারকেই স্পেসিফিকেশন অনুযায়ি লিফট সরবরাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে। একই কথা জানান, দায়িত্বরত রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজমও।

বিভিন্ন অনিয়ম কারসাজিতে জড়িত এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও নতুন করে এলসি খুলে ব্রাদার্স কনস্ট্রাকশনকেই সরবরাহ করতে বলায় কতটুকু কাজ হবে তা নিয়ে শঙ্কায় হাসপাতাল কতৃপক্ষের।

বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব ছিলো আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমের দুর্নীতির সহযোগি হিসেবে পরিচিত প্রকৌশলী ফজলুল হক মধু। কিন্তু সেখানেও তিনি অনিয়মে কোন বাঁধা প্রধান করেননি। এ বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

অনিয়মের আরেকটি বড় উদাহরণ গণপূর্ত বিভাগ – ১ এর প্রকৌশলীদের অফিস ও সাইকেল গ্যারেজের উপরের ছাঁদে ছয় কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান। দরপত্র ডাকার আগেই পছন্দের ঠিকাদার মেরাজ ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক মোশাররফ হোসেনকে দিয়ে এই ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। পরে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে কাজের চুক্তির মূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ টাকা। এই কাজে অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করেন দায়িত্বরত রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ।

তবে এসব অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা এখনো রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। ঠিকাদারদের দাবি, সরকার পরিবর্তন হলেও নিয়মে কোন পরিবর্তন হয়নি গণপূর্ত কার্যালয়ে। কমিশন, লবিং এবং দুর্নীতি – যা এখনো সমানতালে বহাল রয়েছে।

শেয়ার করুন

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগের কাজে নয়ছয়

সময় ০৪:২৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

সরকার পাল্টালেও নিয়ম পাল্টায়নি রাজশাহী গণপূর্ত অধিদপ্তরে। বিগত সরকারের সময় দুর্নীতি ও অনিয়ম করা কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটির আইসিইউ ইউনিট স্থাপনে তিনটি স্মার্ট দরজা এবং বেড কাম প্যাসেঞ্জার লিফট স্থাপনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ব্রাদার্স কনস্ট্রাকশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে।

দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানের জাপানে তৈরি ‘এ’ ক্যাটাগরির ফুজি কোম্পানির লিফট সরবরাহের কথা থাকলেও তিনি সরবরাহ করেন চীনের তৈরি ‘সি’ ক্যাটাগরির লিফট। দুটির দামের পার্থক্যও ছিলো বেশ চোখে পড়ার মতো। তদন্তে এই অনিয়ম প্রমান হওয়ার পরেও আবারও সেই প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

কারন হিসেবে সংস্থাটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল গোফফার জানান, নতুন করে ট্রেন্ডার প্রক্রিয়ায় গেলে তাতে সরকারের ক্ষতি হবে; এই বিবেচনায় আগের ঠিকাদারকেই স্পেসিফিকেশন অনুযায়ি লিফট সরবরাহের অনুমতি দেয়া হয়েছে। একই কথা জানান, দায়িত্বরত রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজমও।

বিভিন্ন অনিয়ম কারসাজিতে জড়িত এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও নতুন করে এলসি খুলে ব্রাদার্স কনস্ট্রাকশনকেই সরবরাহ করতে বলায় কতটুকু কাজ হবে তা নিয়ে শঙ্কায় হাসপাতাল কতৃপক্ষের।

বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব ছিলো আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমের দুর্নীতির সহযোগি হিসেবে পরিচিত প্রকৌশলী ফজলুল হক মধু। কিন্তু সেখানেও তিনি অনিয়মে কোন বাঁধা প্রধান করেননি। এ বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

অনিয়মের আরেকটি বড় উদাহরণ গণপূর্ত বিভাগ – ১ এর প্রকৌশলীদের অফিস ও সাইকেল গ্যারেজের উপরের ছাঁদে ছয় কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান। দরপত্র ডাকার আগেই পছন্দের ঠিকাদার মেরাজ ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক মোশাররফ হোসেনকে দিয়ে এই ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। পরে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে কাজের চুক্তির মূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ টাকা। এই কাজে অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করেন দায়িত্বরত রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ।

তবে এসব অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা এখনো রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। ঠিকাদারদের দাবি, সরকার পরিবর্তন হলেও নিয়মে কোন পরিবর্তন হয়নি গণপূর্ত কার্যালয়ে। কমিশন, লবিং এবং দুর্নীতি – যা এখনো সমানতালে বহাল রয়েছে।