‘সেভেন সিস্টার’ নামের রহস্য। ‘সেভেন সিস্টার’ কেনো এতো গুরুত্বপূর্ণ?
- সময় ০১:১১:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪
- / 263
ভারতের উত্তর পূর্ব প্রান্তে চীন, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষা যে সাতটি রাজ্য আছে, সেগুলোকে একত্রে সেভেন সিস্টার বলা হয়। কিন্তু কেন ?
আসলেই কি সেখানে সাত বোনের কোন ইস্যু জড়িয়ে আছে ? নাকি অন্য কোনো কিছু ?
রাজ্যগুলো হলো অরুণাচল, মিজোরাম, মনিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা এবং আসাম। এদের মোট আয়তন ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫১১ বর্গকিলোমিটার। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো অরুণাচল প্রদেশ, সেখানে আছে প্রধানত ২৬ টি আদিবাসী স¤প্রদায় এবং প্রায় ১০০ টি উপজাতি সম্প্রদায়।
এসব রাজ্যের যেমন আছে নিজস্ব সংস্কৃতি, তেমনই আছে এক মনোরম পরিবেশ। একই সঙ্গে পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা এই রাজ্যগুলি নিজের অপরূপ সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে বসে আছে।
এই রাজ্যগুলি স্বতন্ত্র হলেও নানা কারণে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের মিল রয়েছে। ভারতের অন্যপ্রান্তের সঙ্গে এরা যুক্ত মূলত শিলিগুড়ির মাধ্যমে। শিলিগুড়ি এই রাজ্যের অন্যতম বড় শহর। তাই শিলিগুড়িকে ‘সেভেন সিস্টারের’ প্রবেশ পথ বলা হয়।
ত্রিপুরার সাংবাদিক জ্যোতি প্রসাদ সাইকিয়া এই সাতটি রাজ্যকে একসূত্রে বলার জন্য ‘সেভেন সিস্টার্স’ টার্মটি প্রথম ব্যবহার করেন।
এই সাত রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিছু অনন্য সম্পদ এবং জায়গা। যা বিশ্বের আর কোথাও নেই। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো এটি মনিপুর রাজ্যের ভাসমান জাতীয় উদ্যান। এটিই বিশ্বের একমাত্র ভাসমান উদ্যান বা পার্ক।
এখানেই আছে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত যুক্ত এলাকা, আছে এশিয়ার সব চেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম, যা মেঘালয় রাজ্য অবস্থিত।
আছে শুধুমাত্র মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাজার, ইমা কেইথেল বা ইমা মার্কেট। সেটি মনিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে। এই সাথে এই এলাকা পণ মুক্ত, এখানেই আছে বিশ্বের প্রথম জৈব রাজ্য।
রাজ্যগুলো ঐতিহাসিকভাবে আজকের ভারতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। আর্যরা সমস্ত ভারত দখল করলেও ব্রহ্মপুত্রের পূর্বপাশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে আসতে পারেনি।
এসব অঞ্চলে গারো, খাসিয়া, বোরো, মিজোদের মতো অনার্য আদিবাসী রাজাদের শাসন ছিল। মিজোরাম এবং মণিপুর রাজ্য আসামের বরাক উপত্যকার মাধ্যমে ভারতের বাকি অংশের সাথে যুক্ত। এই আত:নির্ভরতার কারণে ১৯৭২ সালে এই সাতটি রাজ্যকে সেভেন সিস্টার্স বা সাত বোনের মর্যাদা দেওয়া হয়।