বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন-ভারত টানাটানি
- সময় ১১:২০:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
- / 273
ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন নদী তিস্তা। যার উজানে রয়েছে ভারত। উজানে ভারতের একাধিক বাঁধ নির্মাণের কারনে পানি পাচ্ছে না দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো। আবার অতি বর্ষনের সময় ভারত গাজলডোবা ব্যারেজে ফ্লাডগেট খুলে দেয়, যার ফলে বাংলাদেশে ঘন ঘন বন্যা দেখা দেয়। যা ওই অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার উপর বেশ প্রভাব ফেলে।
এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ক‚টনৈতিক টানাপোড়নও কম হয়নি। বারবার বলার পরের তিস্তার পানির হিস্যা বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিচ্ছে না ভারত।
ভারতের সঙ্গে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি আটকে থাকার মধ্যে ‘তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন প্রজেক্ট’ হাতে নেয় বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বেইজিং সফরে এই প্রকল্পটিতে চীন সরকারের সহায়তার আশ্বাসও মেলে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে তিস্তা নদীর উপক‚ল ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামো নির্মাণ ছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রীষ্মকালে পানি সংকট দূর করতে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে সে সময় এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল বিবিসি।
যেখানে চীন ইতিমধ্যে একশো কোটি ডলার ব্যয় করে প্রকল্পের জন্য একটি সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে। সেই সমীক্ষাসহ প্রায় ৮ হাজার ২১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০২০ সালে নেয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় প্রকল্পটিতে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত সরকার। এর অংশ হিসাবে একটি কারিগরি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশকে সংযুক্ত করেছে ৫৪টি নদী। বন্যা ব্যবস্থাপনা, আগাম সতর্কতা, পানীয় জলের প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভারত সহযোগিতা করছে। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কারিগরি পর্যায়ের আলোচনা শুরুরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান।
ভারতের কারিগরি দলের সফরকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘ইতিবাচক’ হিসাবে বর্ণনা করলেও চীনের অর্থায়নের ক্ষেত্রে এটা বাধা হতে পারে বলে মনে করছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।
জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফরে তিস্তা প্রকল্পে চীনের অর্থায়নের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। অনেকেই মনে করেন, চীনকে ঠেকাতে পাল্টা প্রস্তাব হিসেবে নদী সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছে মোদি সরকার।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তিস্তার বাংলাদেশ অংশের পানি সংরক্ষণের জন্য ভারতের প্রস্তাবটি যথাযথ না। বাংলাদেশে এ ধরনের পানি সংরক্ষণের সুযোগ নেই, এর ফলে পরিবেশগত ও সামাজিক সমস্যা আরো বিপর্যয়কর হবে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য চীন, ভুটান ও নেপালের মতো তৃতীয় পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করার তাগিদ দেয়া হয়।