ঢাকা ০২:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তান ছেড়ে পালাচ্ছে মেধাবীরা

আকাশ ইসলাম
  • সময় ১১:০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
  • / 266

রাজনৈতিক নানা অস্থিরতার কারনে অধিকাংশ সময় বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয় পাকিস্তান। একই কারনে দেশটি অর্থনৈতিকভাবেও প্রায় দেউলিয়ার পথে। অনিশ্চিত অভিষ্যত প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়াচ্ছে দেশটির যুব সমাজকে। এ অবস্থায় দেশটির যুব সমাজের বড় একটি অংশ; যারা কিনা বিশেষায়িত বিভিন্ন সেক্টরের উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন – তারা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

দেশটির সর্বশেষ অর্থনৈতিক জরিপে দেখা গেছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়া দক্ষ মানুষের হার ১১৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিবেদনে মেধাবীদের পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারনে দেশটির যুবকরা পছন্দ অনুযায়ি চাকরি খুজে পাচ্ছেন না। আর এ কারনেই তারা এমন সিদ্ধান্ত বেছে নিচ্ছেন। এই অবস্থা চলতে থাকলে মাত্র কয়েক দশকেই পাকিস্তান মেধাশূন্য হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।

জরিপের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে কাজের সন্ধানে পাকিস্তান ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছে উচ্চদক্ষতা সম্পন্ন ৪৫ হাজার ৬৮৭ জন যুবক। অথচ এক বছর আগে ২০২২ সালে পাকিস্তান ছেড়েছিল উচ্চ দক্ষতার ২০ হাজার ৮৬৫ জন।

দেশটির বর্তমান সরকার সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এভাবে মেধাবীরা দেশ ছাড়লে, পাক সরকারের সেই পরিকল্পণা অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হবে।

মেধা পাচারের এই প্রভাব পাকিস্তানের একেক প্রদেশে একেক রকম। এখন পর্যন্ত দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে উচ্চ দক্ষতা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩০১ জন। অন্যদিকে খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে বিদেশে গেছেন ২ লাখ ১০ হাজার ১৫০ জন, সিন্ধু থেকে গেছেন ৭২ হাজার ৩৮২ জন এবং অন্যান্য প্রদেশ থেকে গেছেন ৩৬ হাজার ৬০৯ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অসংখ্য মানুষের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো সামনে আসে ২০২১ সালের শেষের দিকে। সে সময় দেশটির শিল্প খাতের অন্তত অর্ধেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং বেকারত্বও বেড়ে গিয়েছিল। মূলত কোথাও জুতসই কাজ না পেয়ে অসংখ্য পাকিস্তানি ভাগ্যান্বেষণের জন্য দেশ ছাড়তে শুরু করেছিলেন।

এদিকে মেধা পাচার হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তার পরও সা¤প্রতিক জরিপটিতে একটি বিষয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর তা হলো, দেশ ছেড়ে যাওয়া মেধাবীরা বিদেশে অর্থ আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন। ফলে পাকিস্তানে
রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ছে।

পাকিস্তানের শ্রমশক্তির সর্বশেষ জরিপে দেশটির অভ্যন্তরীণ বেকারত্ব পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির অসংখ্য মানুষ বর্তমানে কাজের সন্ধানে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

শেয়ার করুন

পাকিস্তান ছেড়ে পালাচ্ছে মেধাবীরা

সময় ১১:০৫:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

রাজনৈতিক নানা অস্থিরতার কারনে অধিকাংশ সময় বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয় পাকিস্তান। একই কারনে দেশটি অর্থনৈতিকভাবেও প্রায় দেউলিয়ার পথে। অনিশ্চিত অভিষ্যত প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়াচ্ছে দেশটির যুব সমাজকে। এ অবস্থায় দেশটির যুব সমাজের বড় একটি অংশ; যারা কিনা বিশেষায়িত বিভিন্ন সেক্টরের উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন – তারা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

দেশটির সর্বশেষ অর্থনৈতিক জরিপে দেখা গেছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়া দক্ষ মানুষের হার ১১৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিবেদনে মেধাবীদের পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের কারনে দেশটির যুবকরা পছন্দ অনুযায়ি চাকরি খুজে পাচ্ছেন না। আর এ কারনেই তারা এমন সিদ্ধান্ত বেছে নিচ্ছেন। এই অবস্থা চলতে থাকলে মাত্র কয়েক দশকেই পাকিস্তান মেধাশূন্য হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা তাদের।

জরিপের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে কাজের সন্ধানে পাকিস্তান ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছে উচ্চদক্ষতা সম্পন্ন ৪৫ হাজার ৬৮৭ জন যুবক। অথচ এক বছর আগে ২০২২ সালে পাকিস্তান ছেড়েছিল উচ্চ দক্ষতার ২০ হাজার ৮৬৫ জন।

দেশটির বর্তমান সরকার সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এভাবে মেধাবীরা দেশ ছাড়লে, পাক সরকারের সেই পরিকল্পণা অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হবে।

মেধা পাচারের এই প্রভাব পাকিস্তানের একেক প্রদেশে একেক রকম। এখন পর্যন্ত দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে উচ্চ দক্ষতা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩০১ জন। অন্যদিকে খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে বিদেশে গেছেন ২ লাখ ১০ হাজার ১৫০ জন, সিন্ধু থেকে গেছেন ৭২ হাজার ৩৮২ জন এবং অন্যান্য প্রদেশ থেকে গেছেন ৩৬ হাজার ৬০৯ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অসংখ্য মানুষের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো সামনে আসে ২০২১ সালের শেষের দিকে। সে সময় দেশটির শিল্প খাতের অন্তত অর্ধেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং বেকারত্বও বেড়ে গিয়েছিল। মূলত কোথাও জুতসই কাজ না পেয়ে অসংখ্য পাকিস্তানি ভাগ্যান্বেষণের জন্য দেশ ছাড়তে শুরু করেছিলেন।

এদিকে মেধা পাচার হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তার পরও সা¤প্রতিক জরিপটিতে একটি বিষয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর তা হলো, দেশ ছেড়ে যাওয়া মেধাবীরা বিদেশে অর্থ আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন। ফলে পাকিস্তানে
রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ছে।

পাকিস্তানের শ্রমশক্তির সর্বশেষ জরিপে দেশটির অভ্যন্তরীণ বেকারত্ব পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির অসংখ্য মানুষ বর্তমানে কাজের সন্ধানে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।