ঢাকা ১২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘হ্যালো মেয়র’ ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স এখন সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস

শেখ ফজলে রাব্বি, জামালপুর
  • সময় ০৮:৩৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 55

‘হ্যালো মেয়র’ ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স এখন সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস

জামালপুর সদরের সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু ২০২১ সালে নিজস্ব অর্থায়নে চালু করেন ‘হ্যালো মেয়র’ অ্যাম্বুলেন্স সেবা। সেই সময় ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম। সাবেক মেয়রের দান করা ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভার হাতছাড়া হয়ে ব্যক্তি মালিকানায় ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে।

গতবছর জামালপুরের নান্দিনা এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে সেটি মেরামত করার জন্য শহরের বাইপাস মোড়ের মিলন মটরস ওয়ার্কশপে রাখা হয়।

মিলন মটরস ওয়ার্কশপের মালিক মো. মিলন বলেন, অনেক দিন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি আমার এখানেই ছিল। পৌরসভা থেকে কয়েকজন লোক এসে অ্যাম্বুলেন্সটি দেখে যান। কিছুদিন আগে এটি মেরামত করার জন্য সাবেক মেয়র ছানুর কর্মচারী আশরাফ ভাই ৫০ হাজার টাকা দেন। অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করতে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়।

তিনি আরো বলেন, পরে আশরাফ ভাই অ্যাম্বুলেন্স নিতে আসলে আমি পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ সাহেবকে ফোন দিই। তিনি সাবেক মেয়র ছানুর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানান। তবে কিছুই জানাননি। পরে আশরাফ ভাইয়ের লোক এসে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে যান।

সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ম্যানেজার ফারুক আহমেদ বলেন, কিছুদিন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি আমাদের এখানে ভাড়ায় চলতেছে। গাড়িটি কোথা থেকে আনা হয়েছে তা জানি না। বর্তমানে কাগজ অনুযায়ী গাড়ির মালিক সিদ্দিকুর রহমান। এখনো গাড়িটি হাসপাতালের সামনেই আছে।

সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মালিক বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভার কিনা আমি জানি না। কয়েকদিন আগে ঢাকার ধানমন্ডি থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি কিনেছি। আমার নামেই নিবন্ধন করা। গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সবকিছু ঠিকঠাক আছে।

গত ১৭ জানুয়ারি থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে ভাড়ায় চলছে।

সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস থেকে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সটির কাগজপত্রে লাইসেন্স নম্বর দেখা যায়, ঢাকা মেট্রো ছ-৭১৫১০২। সেখানে মালিক মো. সিদ্দিকুর রহমান। গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস নবায়ন করা হয়েছে ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫।

জামালপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়,অ্যাম্বুলেন্সটি মেয়র ছানোয়ার হোসেন মৌখিকভাবে দিয়েছিলেন, লিখিতভাবে দেননি।

মৌসুমী খানম
মৌসুমী খানম

এ বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক মৌসুমী খানম বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানি না, বিষয়টি সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷

অ্যাম্বুলেন্স’ এর মালিক পক্ষের দাবি অ্যাম্বুলেন্সটি তিনি ঢাকার একটি শু-রুম থেকে ক্রয় করেছেন।

উল্লেখ্য, সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর সঙ্গে বংশীয় বা রক্তের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও অ্যাম্বুলেন্সটির মালিকানা দাবি করা সিদ্দিকুর রহমান নিজেকে এত দিন ছানুর চাচাতো ভাই পরিচত দিত। প্রকৃতপক্ষে তারা দুজন কেউ কারো চাচাতো ভাই নন। এমনকি সিদ্দিক দূরসম্পর্কেরও চাচাতো ভাই নন। মুখে মুখে পরিচয় দিতেন সাবেক মেয়রের চাচাতো ভাই।

শেয়ার করুন

‘হ্যালো মেয়র’ ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স এখন সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস

সময় ০৮:৩৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

জামালপুর সদরের সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু ২০২১ সালে নিজস্ব অর্থায়নে চালু করেন ‘হ্যালো মেয়র’ অ্যাম্বুলেন্স সেবা। সেই সময় ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম। সাবেক মেয়রের দান করা ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভার হাতছাড়া হয়ে ব্যক্তি মালিকানায় ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে।

গতবছর জামালপুরের নান্দিনা এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে সেটি মেরামত করার জন্য শহরের বাইপাস মোড়ের মিলন মটরস ওয়ার্কশপে রাখা হয়।

মিলন মটরস ওয়ার্কশপের মালিক মো. মিলন বলেন, অনেক দিন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি আমার এখানেই ছিল। পৌরসভা থেকে কয়েকজন লোক এসে অ্যাম্বুলেন্সটি দেখে যান। কিছুদিন আগে এটি মেরামত করার জন্য সাবেক মেয়র ছানুর কর্মচারী আশরাফ ভাই ৫০ হাজার টাকা দেন। অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করতে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়।

তিনি আরো বলেন, পরে আশরাফ ভাই অ্যাম্বুলেন্স নিতে আসলে আমি পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ সাহেবকে ফোন দিই। তিনি সাবেক মেয়র ছানুর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানান। তবে কিছুই জানাননি। পরে আশরাফ ভাইয়ের লোক এসে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে যান।

সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের ম্যানেজার ফারুক আহমেদ বলেন, কিছুদিন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি আমাদের এখানে ভাড়ায় চলতেছে। গাড়িটি কোথা থেকে আনা হয়েছে তা জানি না। বর্তমানে কাগজ অনুযায়ী গাড়ির মালিক সিদ্দিকুর রহমান। এখনো গাড়িটি হাসপাতালের সামনেই আছে।

সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মালিক বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভার কিনা আমি জানি না। কয়েকদিন আগে ঢাকার ধানমন্ডি থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি কিনেছি। আমার নামেই নিবন্ধন করা। গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সবকিছু ঠিকঠাক আছে।

গত ১৭ জানুয়ারি থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সামনে থেকে ভাড়ায় চলছে।

সিদ্দিক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস থেকে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সটির কাগজপত্রে লাইসেন্স নম্বর দেখা যায়, ঢাকা মেট্রো ছ-৭১৫১০২। সেখানে মালিক মো. সিদ্দিকুর রহমান। গাড়ির ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস নবায়ন করা হয়েছে ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫।

জামালপুর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়,অ্যাম্বুলেন্সটি মেয়র ছানোয়ার হোসেন মৌখিকভাবে দিয়েছিলেন, লিখিতভাবে দেননি।

মৌসুমী খানম
মৌসুমী খানম

এ বিষয়ে জামালপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক মৌসুমী খানম বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানি না, বিষয়টি সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷

অ্যাম্বুলেন্স’ এর মালিক পক্ষের দাবি অ্যাম্বুলেন্সটি তিনি ঢাকার একটি শু-রুম থেকে ক্রয় করেছেন।

উল্লেখ্য, সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর সঙ্গে বংশীয় বা রক্তের কোনো সম্পর্ক না থাকলেও অ্যাম্বুলেন্সটির মালিকানা দাবি করা সিদ্দিকুর রহমান নিজেকে এত দিন ছানুর চাচাতো ভাই পরিচত দিত। প্রকৃতপক্ষে তারা দুজন কেউ কারো চাচাতো ভাই নন। এমনকি সিদ্দিক দূরসম্পর্কেরও চাচাতো ভাই নন। মুখে মুখে পরিচয় দিতেন সাবেক মেয়রের চাচাতো ভাই।