হীরার খনির গরিব দেশ সিয়েরা লিওন
- সময় ১০:২২:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
- / 254
হীরা বলতেই চোখের সামনে ভেসে উঠে চকচকে এক পাথর। যেটি কিনা বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান এক টুকরো পাথর। সাদার পাশাপাশি কালো, সবুজ, নীল, গোলাপি, বেগুনি, হলুদ ও লালসহ অনেক রঙের হীরা পাওয়া যায়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে এই খনিজ সম্পদ। তবে সেসব দেশ এখনো অন্ধকারে বিরাজ করছে।
তেমনই এক হীরার খনির মুসলিম দেশ সিয়েরা লিওন। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি রয়েছে দারিদ্র্য সীমার অনেক নিচে।
দেশটির শতকরা ৭০ ভাগ মানুষই দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। গৃহযুদ্ধের কারণে দেশটিতে বড় ধরনের কোনো শিল্পকারখানাও গড়ে ওঠেনি। ফলে দেশটিতে বেকারত্বের সমস্যাও প্রবল।
১৯৬১ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে দেশটি। ব্রিটিশদের অত্যাচারে সিয়েরা লিওনের জনগণের জীবন ছিল দুর্বিষহ। তাদেরকে খনি শ্রমিক হিসেবে কঠোর পরিশ্রমে বাধ্য করা হতো।
স্বাধীনতা লাভের পর দুর্নীতি ও অপশাসনের কারণে ১৯৯১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় সিয়েরা লিওনে। সেই যুদ্ধ দীর্ঘ ১১ বছর লেগে ছিল। জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে ২০০২ সালে দেশটি শান্ত হয় এবং নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেছে।
সিয়েরা লিওনের অর্থনীতি কৃষি ও খনিজ সম্পদের উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে হীরা, এটি অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। এছাড়াও রয়েছে অন্যতম পণ্য টাইটানিয়াম ও বক্সাইট, অন্যতম প্রধান পণ্য সোনা এবং রয়েছে রুটাইল এর পৃথিবীর বৃহত্তম মজুদের একটি অংশ। সিয়েরা লিওনে রয়েছে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক হারবর।
তারপরও এদেশের মানুষের এই করুণ দশা কেন ? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই।
এর প্রধান কারণ হচ্ছে শুধু মাত্র শ্রমিক হিসেবেই এখানকার মানুষেরা কাজ করেন খনিগুলোতে। বিভিন্ন দেশের বড় বড় কোম্পানিগুলো সেখানে খনি খননের কাজ করে থাকে। যে কারণে এই সম্পদের বেশিরভাগ মূল্যই চলে যায় মালিকদের হাতে। নাম মাত্র মজুরিতে এখানে কাজ করতে হয় স্থানীয় মানুষগুলোকে।
দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্বে সিয়েরা লিওনের প্রায় এক চতুর্থাংশে হীরা পাওয়া যায়, যেখানে হীরার ক্ষেত্রগুলি ৭ হাজার ৭০০ বর্গ মাইল জুড়ে রয়েছে।
দেশটির পশ্চিম অঞ্চলের টনকোলিলি খনিটি সিয়েরা লিওনের বৃহত্তম খনি। যা ২০২১ সালে আনুমানিক ১৫ দশমিক ১৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন বার্ষিক রান-অফ-মাইন উৎপাদন করে। টনকোলিলি খনিটি চায়না কিংহো এনার্জি গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের মালিকানাধীন। ২০৭৪ সাল পর্যন্ত এটি তাদের মালিকানাধীন থাকবে। অন্যান্য বড় খনিগুলোর মালিকানায়ও রয়েছে বিভিন্ন দেশে বড় বড় কোম্পানি। রাষ্ট্রীয় মালিকানায় খুব কমই খনি রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ এর ২০২০ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের গরীব রাষ্ট্র সমূহের মধ্যে সবচেয়ে নিচে রয়েছে সিয়েরা লিওনের অবস্থান। দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ছিল তখন ১৬৯০ ডলার। দেশটির মুদ্রা লিওনি পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল মুদ্রার একটি।