ঢাকা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিজাব ‘এলিয়েনের পোশাক’ !

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১০:২৩:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪
  • / 264

হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তাজিকিস্তান। দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষে আইনটি পাস হয়। এছাড়া আইনটির মাধ্যমে ঈদ উদ্যাপনেও বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। এশিয়া প্লাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুন মজলিসি মিলির ১৮তম অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করা হলে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়। আইনে হিজাবকে ‘এলিয়েনের পোশাক’ বলে উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে ঈদ উদ্যাপনকে বিদেশি সংস্কৃতি বলা হয়। আর দেশটি তা সমর্থন করতে পারে না বলেও যুক্তি তুলে ধরা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়, শিশুরা ঈদ উদ্যাপনে বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবে না। দেশটিতে তা ‘ইদগারদাক’ নামে পরিচিত। মূলত শিশুরা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সড়ক ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে লোকজনকে অভিবাদন জানায়।

এর আগে তাজিকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ ‘মজলিসি নমোয়ানদাগন’ ৮ জুন হিজাব ও ইদগারদাক নিষিদ্ধ করার বিলটি অনুমোদন করে।

মজলিসি মিলি প্রেস সেন্টার বলছে, অধিবেশনে ছুটির দিন, ঐতিহ্য ও আচার-অনুষ্ঠান, সস্তান লালন পালনে শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা, পিতা-মাতার দায়িত্ব সংক্রান্ত দেশের আইনের সংশোধনীকেও সমর্থন করা হয়েছে।

আইনটি মূলত হিজাব, ইসলামিক হেড স্কার্ফ ও ইসলামিক পোশাকের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ধরনকে লক্ষ করে প্রণীত। বলা হচ্ছে, এসব পোশাক সা¤প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাজিকিস্তানে আসতে শুরু করে এবং দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের কর্মকর্তারা এ পোশাক ধারণকারীদের ইসলামিক চরমপন্থিদের সঙ্গে তুলনা করছেন।

তাজিকিস্তান মধ্য এশিয়ার স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে কিরগিজস্তান, উত্তরে ও পশ্চিমে উজবেকিস্তান, পূর্বে গণচীন এবং দক্ষিণে আফগানিস্তান।

দেশটির ৯৬.৪ শতাংশ অধিবাসী মুসলমান। তাজিকিস্তানে ২০০৯ সালে ইসলামকে সরকারি ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বাকিদের মধ্যে অর্থোডক্স, প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও ইহুদি রয়েছে। দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করতে ধর্মীয় স¤প্রদায়গুলোকে নিবন্ধন করতে হয়। এই নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল উপাসনার জন্য একত্রিত হতে পারে না। এর ব্যতিক্রম করলে বড় অঙ্কের জরিমানার পাশাপাশি তাদের উপাসনাস্থল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তাজিকিস্তানের আগে আরো বেশ কিছু মুসলিম দেশ বোরকা ও নেকাব নিষিদ্ধ করেছেন। আফ্রিকার দেশ চাদ। ৫৭ শতাংশ মসলিম অধ্যুষিত এই দেশটিতে ২০১৫ সালে দু’টি বোমা হামলার পর নারীদের মুখ ঢাকা পোষাক নিষিদ্ধ হয়।

আফ্রিকার ৯৯ শতাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বীর দেশ মরক্কোতে ২০১৭ সালে, তিউনিশিয়া ২০১৯ সালে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারেও বোরকা পরিধান নিষিদ্ধ রয়েছে। মলত এসব দেশ নিরাপত্তাজনিত কারনে মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করলেও ব্যতিক্রম তাজিকিস্তান।

শেয়ার করুন

হিজাব ‘এলিয়েনের পোশাক’ !

সময় ১০:২৩:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তাজিকিস্তান। দেশটির সংসদের উচ্চকক্ষে আইনটি পাস হয়। এছাড়া আইনটির মাধ্যমে ঈদ উদ্যাপনেও বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। এশিয়া প্লাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুন মজলিসি মিলির ১৮তম অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করা হলে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়। আইনে হিজাবকে ‘এলিয়েনের পোশাক’ বলে উল্লেখ করা হয়। অপরদিকে ঈদ উদ্যাপনকে বিদেশি সংস্কৃতি বলা হয়। আর দেশটি তা সমর্থন করতে পারে না বলেও যুক্তি তুলে ধরা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়, শিশুরা ঈদ উদ্যাপনে বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবে না। দেশটিতে তা ‘ইদগারদাক’ নামে পরিচিত। মূলত শিশুরা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন সড়ক ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে গিয়ে লোকজনকে অভিবাদন জানায়।

এর আগে তাজিকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ ‘মজলিসি নমোয়ানদাগন’ ৮ জুন হিজাব ও ইদগারদাক নিষিদ্ধ করার বিলটি অনুমোদন করে।

মজলিসি মিলি প্রেস সেন্টার বলছে, অধিবেশনে ছুটির দিন, ঐতিহ্য ও আচার-অনুষ্ঠান, সস্তান লালন পালনে শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমিকা, পিতা-মাতার দায়িত্ব সংক্রান্ত দেশের আইনের সংশোধনীকেও সমর্থন করা হয়েছে।

আইনটি মূলত হিজাব, ইসলামিক হেড স্কার্ফ ও ইসলামিক পোশাকের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ধরনকে লক্ষ করে প্রণীত। বলা হচ্ছে, এসব পোশাক সা¤প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাজিকিস্তানে আসতে শুরু করে এবং দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারের কর্মকর্তারা এ পোশাক ধারণকারীদের ইসলামিক চরমপন্থিদের সঙ্গে তুলনা করছেন।

তাজিকিস্তান মধ্য এশিয়ার স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে কিরগিজস্তান, উত্তরে ও পশ্চিমে উজবেকিস্তান, পূর্বে গণচীন এবং দক্ষিণে আফগানিস্তান।

দেশটির ৯৬.৪ শতাংশ অধিবাসী মুসলমান। তাজিকিস্তানে ২০০৯ সালে ইসলামকে সরকারি ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বাকিদের মধ্যে অর্থোডক্স, প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও ইহুদি রয়েছে। দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করতে ধর্মীয় স¤প্রদায়গুলোকে নিবন্ধন করতে হয়। এই নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল উপাসনার জন্য একত্রিত হতে পারে না। এর ব্যতিক্রম করলে বড় অঙ্কের জরিমানার পাশাপাশি তাদের উপাসনাস্থল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তাজিকিস্তানের আগে আরো বেশ কিছু মুসলিম দেশ বোরকা ও নেকাব নিষিদ্ধ করেছেন। আফ্রিকার দেশ চাদ। ৫৭ শতাংশ মসলিম অধ্যুষিত এই দেশটিতে ২০১৫ সালে দু’টি বোমা হামলার পর নারীদের মুখ ঢাকা পোষাক নিষিদ্ধ হয়।

আফ্রিকার ৯৯ শতাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বীর দেশ মরক্কোতে ২০১৭ সালে, তিউনিশিয়া ২০১৯ সালে, পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারেও বোরকা পরিধান নিষিদ্ধ রয়েছে। মলত এসব দেশ নিরাপত্তাজনিত কারনে মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করলেও ব্যতিক্রম তাজিকিস্তান।