ঢাকা ০২:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসিনার এপিএস লিকুর ১৫০ কোটির সন্দেহজনক লেনদেন

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • সময় ০৯:১৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 22

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে লিকু

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলাচল করেন না। সেই পিয়ন দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এমন খবরও সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এরই মাঝে নতুন করে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব–২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর নামে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা–১ এ সংস্থাটির উপপরিচালক মো. আহসানুর কবীর পলাশ বাদী হয়ে দুইটি, সহকারী পরিচালক মো. রাকিবলু হায়াত বাদী হয়ে একটি ও উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলামা মিন্টু বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে এ তথ্য জানান।

দুদক
দুদক

মামলায় লিকুর স্ত্রী, ভাই, ভগ্নিপতি ও কেয়ারটেকারসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলাগুলোতে লিকু ও তার স্বজনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার ৯৬ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব লিকুকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ৫৫ লাখ ৩২ হাজার ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপর মামলায় তার বিরুদ্ধে ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। লিকুসহ এই মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন– লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তার, ভগ্নিপতি শেখ মো. ইকরাম, লিকুর ভাই– গাজী মুস্তাফিজুর রহমান (দিপু), ভাগিনা তানভীর আহম্মেদ, ব্যবসায়িক অংশীদার মো. লিয়াকত হোসেন সবুজ ও মো. কালু সেখ, লিকুর বাসার কেয়ারটেকার হামিম শেখ, তার ম্যানেজার মিন্টু রহমান ও মো. আরাফাত হোসেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, স্ত্রী রহিমা আক্তার তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৬ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন। একইভাবে শেখ মো ইকরাম তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২১ কোটি ৫ লাখ ৭৩ হাজার ২৯৭টাকা, গাজী মুস্তাফিজুর রহমান (দিপু) তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৪টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ১৯ কোটি ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৯৬৩ টাকা, তানভীর আহম্মেদ ১৯ কোটি ৮৮ রাখ ৭৯ হাজার ৩৫৪ টাকা, মো. লিয়াকত হোসেন (সবুজ) ৩ কোটি ৪৪ লাখভ ৬০ হাজার ২৬৩ টাকা, আসামি মো. কালু সেখ তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৫৬ কোটি ৫২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৪৯ ও লিকুর কেয়ারটেকার হামিম শেখ ৪টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৭ টাকা লেনদেন করেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস লিকু
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস লিকু

এছাড়া, গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৮ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় লিকুকেও আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া লিকুর ভগ্নিপতি শেখ মো. ইকরামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্য একটি মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ইকরামের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

শেয়ার করুন

হাসিনার এপিএস লিকুর ১৫০ কোটির সন্দেহজনক লেনদেন

সময় ০৯:১৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলাচল করেন না। সেই পিয়ন দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এমন খবরও সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এরই মাঝে নতুন করে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব–২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর নামে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা–১ এ সংস্থাটির উপপরিচালক মো. আহসানুর কবীর পলাশ বাদী হয়ে দুইটি, সহকারী পরিচালক মো. রাকিবলু হায়াত বাদী হয়ে একটি ও উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলামা মিন্টু বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

দুদকের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে এ তথ্য জানান।

দুদক
দুদক

মামলায় লিকুর স্ত্রী, ভাই, ভগ্নিপতি ও কেয়ারটেকারসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলাগুলোতে লিকু ও তার স্বজনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৫৭ লাখ ১২ হাজার ৯৬ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব লিকুকে প্রধান আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে ৫৫ লাখ ৩২ হাজার ৮৮০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপর মামলায় তার বিরুদ্ধে ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। লিকুসহ এই মামলায় ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন– লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তার, ভগ্নিপতি শেখ মো. ইকরাম, লিকুর ভাই– গাজী মুস্তাফিজুর রহমান (দিপু), ভাগিনা তানভীর আহম্মেদ, ব্যবসায়িক অংশীদার মো. লিয়াকত হোসেন সবুজ ও মো. কালু সেখ, লিকুর বাসার কেয়ারটেকার হামিম শেখ, তার ম্যানেজার মিন্টু রহমান ও মো. আরাফাত হোসেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, স্ত্রী রহিমা আক্তার তার ৯টি ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৬ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন। একইভাবে শেখ মো ইকরাম তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২১ কোটি ৫ লাখ ৭৩ হাজার ২৯৭টাকা, গাজী মুস্তাফিজুর রহমান (দিপু) তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৪টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ১৯ কোটি ৪৬ লাখ ১১ হাজার ৯৬৩ টাকা, তানভীর আহম্মেদ ১৯ কোটি ৮৮ রাখ ৭৯ হাজার ৩৫৪ টাকা, মো. লিয়াকত হোসেন (সবুজ) ৩ কোটি ৪৪ লাখভ ৬০ হাজার ২৬৩ টাকা, আসামি মো. কালু সেখ তার ব্যক্তিগত ও যৌথ নামে পরিচালিত ৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৫৬ কোটি ৫২ লাখ ৮৯ হাজার ৬৪৯ ও লিকুর কেয়ারটেকার হামিম শেখ ৪টি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৭ টাকা লেনদেন করেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস লিকু
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস লিকু

এছাড়া, গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর স্ত্রী রহিমা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৮ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় লিকুকেও আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া লিকুর ভগ্নিপতি শেখ মো. ইকরামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্য একটি মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ইকরামের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।