ঢাকা ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যের ৪৫০ কোটি ডলার যাচ্ছে বিদেশে

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১০:১৯:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
  • / 264

বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি টাকা প্রতিবছর চিকিৎসা খাতে বিদেশে চলে যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে দেশে এতো এতো হাসপাতাল থাকার পরেও, এতো লোক চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে কেন ?

সরকারি ও বেসরকারি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালেও বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লাখ। এই খাতে ২০৪ কোটি ডলার বিদেশে চলে যেত। রোগীর সংখ্যা বেড়ে এখন ২৭ লাখের বেশি। তাদের খরচের ফলাফল দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি ডলার। যা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে বেশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ১০ বছরে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগী বেড়েছে আট গুণ। অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

এসব মানুষ মূলত ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রোগীর ৯২ শতাংশই যাচ্ছে ভারতে। বাকি ৮ শতাংশের প্রায় পুরোটাই যাচ্ছে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়। খুব সামান্য অংশ যাচ্ছে মুসলিম দেশগুলোতে।

পরিসংখ্যান বলছে, বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের বেশির ভাগের বয়স ১৬ থেকে ৫৫ বছর। যা মোট রোগীর ৮৪ শতাংশ। আবার এদের অর্ধেকেরও বেশি, অর্থাৎ ৬১ শতাংশই পুরুষ, বাকি ৩১ শতাংশ নারী।

পেশাজীবীদের মধ্যে ব্যবসায়ীরাই বেশি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যান। ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ যাচ্ছেন থাইল্যান্ডে, ৩০ শতাংশ ভারতে ও সিঙ্গাপুরে ২৮ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ ধরনের রোগের চিকিৎসা নিতে মানুষ বিদেশে যাচ্ছেন। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কার্ডিও ভাসকুলার বা হৃদরোগের চিকিৎসা, যা মোট রোগীর ১৭ শতাংশ, ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী কিডনি, ১১ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থোপেডিক সার্জারি, ১১ শতাংশ লিভার ও ক্যানসার, ৯ শতাংশ নিউরোলজি, ৬ শতাংশ গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজি ও ইউরোলজি, ৫ শতাংশ নাক-কান-গলা এবং ৪ শতাংশ রোগী যাচ্ছেন জেনারেল সার্জারি ও গাইনোকলজির চিকিৎসার জন্য। সবচেয়ে কম যাচ্ছে চোখ ও দাঁতের চিকিৎসা করাতে, যা মোট রোগীর ২ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, সব মিলে আট কারণে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যায় বাংলাদেশিরা। যার মধ্যে ৫০ শতাংশ রোগী বিদেশে যাচ্ছে সেখানকার চিকিৎসার গুণগত মানের কারণে। আর ২৩ শতাংশ যাচ্ছে বাংলাদেশের চেয়ে চিকিৎসা খরচ কম হওয়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার মূল কারণ দুটি। একটি হচ্ছে, এখনো আমাদের দেশে চিকিৎসকরা রোগীমুখী হতে পারেননি। তারা রোগীদের খুব কম সময় দেন। আরেকটা দিক হলো, প্রযুক্তির দিক থেকেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

শেয়ার করুন

স্বাস্থ্যের ৪৫০ কোটি ডলার যাচ্ছে বিদেশে

সময় ১০:১৯:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর চেয়েও কয়েক গুণ বেশি টাকা প্রতিবছর চিকিৎসা খাতে বিদেশে চলে যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে দেশে এতো এতো হাসপাতাল থাকার পরেও, এতো লোক চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছে কেন ?

সরকারি ও বেসরকারি গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালেও বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লাখ। এই খাতে ২০৪ কোটি ডলার বিদেশে চলে যেত। রোগীর সংখ্যা বেড়ে এখন ২৭ লাখের বেশি। তাদের খরচের ফলাফল দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি ডলার। যা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে বেশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ১০ বছরে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগী বেড়েছে আট গুণ। অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

এসব মানুষ মূলত ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রোগীর ৯২ শতাংশই যাচ্ছে ভারতে। বাকি ৮ শতাংশের প্রায় পুরোটাই যাচ্ছে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়। খুব সামান্য অংশ যাচ্ছে মুসলিম দেশগুলোতে।

পরিসংখ্যান বলছে, বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের বেশির ভাগের বয়স ১৬ থেকে ৫৫ বছর। যা মোট রোগীর ৮৪ শতাংশ। আবার এদের অর্ধেকেরও বেশি, অর্থাৎ ৬১ শতাংশই পুরুষ, বাকি ৩১ শতাংশ নারী।

পেশাজীবীদের মধ্যে ব্যবসায়ীরাই বেশি বিদেশে চিকিৎসা নিতে যান। ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ যাচ্ছেন থাইল্যান্ডে, ৩০ শতাংশ ভারতে ও সিঙ্গাপুরে ২৮ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ ধরনের রোগের চিকিৎসা নিতে মানুষ বিদেশে যাচ্ছেন। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কার্ডিও ভাসকুলার বা হৃদরোগের চিকিৎসা, যা মোট রোগীর ১৭ শতাংশ, ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী কিডনি, ১১ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থোপেডিক সার্জারি, ১১ শতাংশ লিভার ও ক্যানসার, ৯ শতাংশ নিউরোলজি, ৬ শতাংশ গ্যাস্ট্রো এন্টারোলজি ও ইউরোলজি, ৫ শতাংশ নাক-কান-গলা এবং ৪ শতাংশ রোগী যাচ্ছেন জেনারেল সার্জারি ও গাইনোকলজির চিকিৎসার জন্য। সবচেয়ে কম যাচ্ছে চোখ ও দাঁতের চিকিৎসা করাতে, যা মোট রোগীর ২ শতাংশ।

গবেষণায় দেখা গেছে, সব মিলে আট কারণে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যায় বাংলাদেশিরা। যার মধ্যে ৫০ শতাংশ রোগী বিদেশে যাচ্ছে সেখানকার চিকিৎসার গুণগত মানের কারণে। আর ২৩ শতাংশ যাচ্ছে বাংলাদেশের চেয়ে চিকিৎসা খরচ কম হওয়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার মূল কারণ দুটি। একটি হচ্ছে, এখনো আমাদের দেশে চিকিৎসকরা রোগীমুখী হতে পারেননি। তারা রোগীদের খুব কম সময় দেন। আরেকটা দিক হলো, প্রযুক্তির দিক থেকেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে।