ঢাকা ১০:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্পার্ম ব্যাংক

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১২:০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
  • / 255

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কোটি কোটি দম্পতি রয়েছেন; যারা সন্তানের বাবা-মা হতে পারছেন না। এক্ষেত্রে স্পার্ম ডোনার বা বীর্য দাতাদের ভূমিকা অতুলনীয়। শুধু মাত্র উন্নত মানের বীর্যের সাহায্যে এই দম্পতিরা জীবনের না পাওয়া সুখ ফিরে পেতে পারেন।

বীর্য দানের মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা; যা বিজ্ঞানের অন্যতম চমকপ্রদ উদ্ভাবন। আর এই বীর্য যেখানে সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিতরণ করা হয়; তাকে বলা হয় – শুক্রাণু ব্যাংক বা স্পার্ম ব্যাংক। অনেকটা ব্লাড ব্যাংকের মতো।

বীর্য দান বা চলতি কথায় যাকে আমরা বলে থাকি স্পার্ম ডোনেট, বাংলাদেশে খুব একটা প্রচলন নেই। এই বিষয়টি নিয়ে একটা সামাজিক ট্যাবু রয়েছে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের ধর্মীয় ব্যাখ্যাও রয়েছে।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শুক্রাণু দান বৈধ হলেও তা নিয়ন্ত্রিত। অধিকাংশ দেশে শুক্রাণু দাতাকে অবশ্যই বেনামি থাকতে হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক উন্নত দেশ; তাদের নাগরিকদের বীর্যদানে উৎসাহিত করছে।

সাধারণত দুইভাবে স্পার্ম ডোনেট করা হয়। ডোনার এবং যিনি শুক্রাণু গ্রহণ করবেন তারা একে অপরকে চিনেন অথবা নাও চিনতে পারেন।

তবে স্পার্ম ডোনেট করার ক্ষেত্রে অনেক ঝকিও থাকে। যে কারনে শুক্রাণু দান করার সময় ডোনারের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা হয়। এতে বিভিন্ন রোগ, বিশেষ করে সংক্রামক রোগের পরীক্ষা করা হয়। ডোনারের জেনেটিক সমস্যার পরীক্ষা করা হয়; যাতে কোনো জেনেটিক রোগ সন্তানদের মধ্যে না আসে। সেই সঙ্গে ডোনারের স্পার্মের গুণমান, সংখ্যা এবং গতিশীলতার পরীক্ষা করা হয়।

অধিকাংশ স্পার্ম ব্যাংকে ডোনারের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন। কেননা ৪০ বছরের পর থেকে স্পার্মের গুণগত মান কমতে থাকে। তাছাড়া মাদকদ্রব্য বা অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস আছে, এমন ব্যক্তির স্পার্ম নেয়া হয় না।

স্পার্ম ডোনেটের ক্ষেত্রে সাধারণত সমকামী পুরুষদের বীর্য গ্রহণ করা হয় না। কেননা সমকামী পুরুষে বীর্য থেকে যে সন্তানের জন্ম হবে তারও সমকামী হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। যা এখনও অধিকাংশ মা-বাবাই মেনে নিতে চান না।

চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রমাণিত লম্বা পুরুষের চেয়ে বেঁটে পুরুষদের বীর্যে সমস্যা বেশি পরিমাণে থাকে। বেঁটে পুরুষদের মধ্যে জন্মগত একাধিক সমস্যা থাকে। তার প্রভাব শিশুর উপরও পরতে পারে।

স্ক্রিনিং টেস্টে পাস করার পর স্পার্ম ক্লিনিককে উন্নত মানের বীর্যের নমুনা দিতে হয়। স্পার্ম ডোনেট করার আগের দুই থেক পাঁচ দিন যৌনসঙ্গম, হস্তমৈথুন করতে পারবেন না। এর কারণ স্পার্ম ডোনারের কাছ থেকে উন্নত মানের নমুনা পাওয়া যায়।

ল্যাব বা স্পার্ম ব্যাংকে শুক্রাণু দীর্ঘ সময় ধরে জমা রাখা যায়; যদি সঠিকভাবে ফ্রোজেন করা হয়। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে দশ, পনেরো, এমনকি বিশ বছর পরও ফ্রোজেন শুক্রাণু সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

শেয়ার করুন

স্পার্ম ব্যাংক

সময় ১২:০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কোটি কোটি দম্পতি রয়েছেন; যারা সন্তানের বাবা-মা হতে পারছেন না। এক্ষেত্রে স্পার্ম ডোনার বা বীর্য দাতাদের ভূমিকা অতুলনীয়। শুধু মাত্র উন্নত মানের বীর্যের সাহায্যে এই দম্পতিরা জীবনের না পাওয়া সুখ ফিরে পেতে পারেন।

বীর্য দানের মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা; যা বিজ্ঞানের অন্যতম চমকপ্রদ উদ্ভাবন। আর এই বীর্য যেখানে সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিতরণ করা হয়; তাকে বলা হয় – শুক্রাণু ব্যাংক বা স্পার্ম ব্যাংক। অনেকটা ব্লাড ব্যাংকের মতো।

বীর্য দান বা চলতি কথায় যাকে আমরা বলে থাকি স্পার্ম ডোনেট, বাংলাদেশে খুব একটা প্রচলন নেই। এই বিষয়টি নিয়ে একটা সামাজিক ট্যাবু রয়েছে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের ধর্মীয় ব্যাখ্যাও রয়েছে।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শুক্রাণু দান বৈধ হলেও তা নিয়ন্ত্রিত। অধিকাংশ দেশে শুক্রাণু দাতাকে অবশ্যই বেনামি থাকতে হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক উন্নত দেশ; তাদের নাগরিকদের বীর্যদানে উৎসাহিত করছে।

সাধারণত দুইভাবে স্পার্ম ডোনেট করা হয়। ডোনার এবং যিনি শুক্রাণু গ্রহণ করবেন তারা একে অপরকে চিনেন অথবা নাও চিনতে পারেন।

তবে স্পার্ম ডোনেট করার ক্ষেত্রে অনেক ঝকিও থাকে। যে কারনে শুক্রাণু দান করার সময় ডোনারের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা হয়। এতে বিভিন্ন রোগ, বিশেষ করে সংক্রামক রোগের পরীক্ষা করা হয়। ডোনারের জেনেটিক সমস্যার পরীক্ষা করা হয়; যাতে কোনো জেনেটিক রোগ সন্তানদের মধ্যে না আসে। সেই সঙ্গে ডোনারের স্পার্মের গুণমান, সংখ্যা এবং গতিশীলতার পরীক্ষা করা হয়।

অধিকাংশ স্পার্ম ব্যাংকে ডোনারের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন। কেননা ৪০ বছরের পর থেকে স্পার্মের গুণগত মান কমতে থাকে। তাছাড়া মাদকদ্রব্য বা অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস আছে, এমন ব্যক্তির স্পার্ম নেয়া হয় না।

স্পার্ম ডোনেটের ক্ষেত্রে সাধারণত সমকামী পুরুষদের বীর্য গ্রহণ করা হয় না। কেননা সমকামী পুরুষে বীর্য থেকে যে সন্তানের জন্ম হবে তারও সমকামী হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। যা এখনও অধিকাংশ মা-বাবাই মেনে নিতে চান না।

চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রমাণিত লম্বা পুরুষের চেয়ে বেঁটে পুরুষদের বীর্যে সমস্যা বেশি পরিমাণে থাকে। বেঁটে পুরুষদের মধ্যে জন্মগত একাধিক সমস্যা থাকে। তার প্রভাব শিশুর উপরও পরতে পারে।

স্ক্রিনিং টেস্টে পাস করার পর স্পার্ম ক্লিনিককে উন্নত মানের বীর্যের নমুনা দিতে হয়। স্পার্ম ডোনেট করার আগের দুই থেক পাঁচ দিন যৌনসঙ্গম, হস্তমৈথুন করতে পারবেন না। এর কারণ স্পার্ম ডোনারের কাছ থেকে উন্নত মানের নমুনা পাওয়া যায়।

ল্যাব বা স্পার্ম ব্যাংকে শুক্রাণু দীর্ঘ সময় ধরে জমা রাখা যায়; যদি সঠিকভাবে ফ্রোজেন করা হয়। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে দশ, পনেরো, এমনকি বিশ বছর পরও ফ্রোজেন শুক্রাণু সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।