ঢাকা ০৭:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে লাখো পর্যটকের ভিড়

সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট হচ্ছে না

সিনিয়র প্রতিবেদক, কক্সবাজার
  • সময় ০৬:১৭:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 26

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারে ভ্রমণে এসেছে লাখো পর্যটক। তবে এবার থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে হচ্ছে না কোনো কনসার্ট কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একইসঙ্গে নিষিদ্ধ থাকছে সৈকতে আতশবাজি বা পটকা ফোটানো। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতিতে তারকামানের হোটেলগুলোতে থাকছে নানা আয়োজন।

হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরানো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে হোটেলে বুকিং হয়েছে আশানুরূপ। এছাড়া পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, সব ধরনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

পর্যটন মৌসুম সঙ্গে শীতের আমেজ। ডিসেম্বর মাস জুড়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন ভিড় করছেন লাখো পর্যটক। আনন্দে মেতে রয়েছে সমুদ্রের নোনাজলে কিংবা বালিয়াড়িতে। থার্টি ফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে নতুন বছর বরণে শেষ সময়ে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল আরও বাড়ছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা যায় লাখো পর্যটক সমুদ্রের লোনা জ্বলে গোসল করছেন। অনেকে বালিয়াড়ি বা কিটকট চেয়ারে বসে প্রিয় মানুষের সাথে গল্পে মেতে উঠেছেন। আবার কেউ কেউ ঘোড়া, বীচ বাইকে চড়ে বিশাল সমুদ্র উপভোগ করছেন।

সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় পর্যটক মশিউর রহমান ও শারমিন দম্পতির।

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক
কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

তারা জানান, ডিসেম্বর মাসে ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার দেখত চলে আসলাম। থার্টি ফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে মূলত আমাদের আসা। কিন্তু এখানে এসে দেখা যায়, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোন আয়োজন নেই। এটা নিয়ে মন কিছুটা খারাপ হয়৷ তারপরও সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে ভালো লেগেছে।

আরেক পর্য়টক রফিক উদ্দিন চৌধুরী বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে রাজশাহী থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণে এসেছি। এখানকার পরিবেশ খুবই চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর। বছরের শেষ দিন উপলক্ষে সৈকতে ছোট পরিসরে কোন অনুষ্ঠান করা গেলে ভাল হতো বলে মনে করেন তিনি।

শহরের তারকা মানের হোটেলগুলো সেজেছে নতুন সাজে। তারকা শিল্পীদের নিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব আয়োজনের ব্যানার-ফেস্টুনও ঝুলছে হোটেলগুলোর ভেতর বাইরে।

হোটেল মালিকরা বলছেন, বুকিং আশানুরূপ হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নানা আয়োজন হাতে নেয়া হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে সব হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজে শতভাগ বুকিং আছে। অনেক পর্যটক আমাদের কাছে রুম চাইলেও দিতে পারছি না। এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম হয়েছে । আগামী রবিবার পর্যন্ত শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট-গেস্টহাউসের সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

হোটেল কল্লোলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হাসান বলেন, পর্যটকদের বিনোদন দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই হোটেল মাঠে সন্ধ্যাকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে আসছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে সেই অনুষ্ঠানের আকার বাড়ানো হয়েছে।

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক
কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

পর্যটকদের সুরক্ষায় সৈকতের বালিয়াড়ি, রাস্তা-ঘাট এবং হোটেল-মোটেল জোনে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের। অধিকাংশ হোটেলে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন,উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। একইসঙ্গে নিষিদ্ধ থাকছে সৈকতে আতশবাজি বা পটকা ফোটানো। তবে ইনডোরে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে নিজস্ব ও পুলিশের সিকিউরিটি ব্যবস্থার সমন্বয় করে করা যাবে।পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন,পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবারও সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তল্লাশি ছাড়া কাউকে সৈকতে নামতে দেওয়া হবে না।

 

শেয়ার করুন

থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনে লাখো পর্যটকের ভিড়

সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট হচ্ছে না

সময় ০৬:১৭:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজারে ভ্রমণে এসেছে লাখো পর্যটক। তবে এবার থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে হচ্ছে না কোনো কনসার্ট কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একইসঙ্গে নিষিদ্ধ থাকছে সৈকতে আতশবাজি বা পটকা ফোটানো। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতিতে তারকামানের হোটেলগুলোতে থাকছে নানা আয়োজন।

হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরানো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে হোটেলে বুকিং হয়েছে আশানুরূপ। এছাড়া পর্যটকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, সব ধরনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

পর্যটন মৌসুম সঙ্গে শীতের আমেজ। ডিসেম্বর মাস জুড়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন ভিড় করছেন লাখো পর্যটক। আনন্দে মেতে রয়েছে সমুদ্রের নোনাজলে কিংবা বালিয়াড়িতে। থার্টি ফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে নতুন বছর বরণে শেষ সময়ে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল আরও বাড়ছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা যায় লাখো পর্যটক সমুদ্রের লোনা জ্বলে গোসল করছেন। অনেকে বালিয়াড়ি বা কিটকট চেয়ারে বসে প্রিয় মানুষের সাথে গল্পে মেতে উঠেছেন। আবার কেউ কেউ ঘোড়া, বীচ বাইকে চড়ে বিশাল সমুদ্র উপভোগ করছেন।

সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় পর্যটক মশিউর রহমান ও শারমিন দম্পতির।

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক
কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

তারা জানান, ডিসেম্বর মাসে ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজার দেখত চলে আসলাম। থার্টি ফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে মূলত আমাদের আসা। কিন্তু এখানে এসে দেখা যায়, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোন আয়োজন নেই। এটা নিয়ে মন কিছুটা খারাপ হয়৷ তারপরও সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে ভালো লেগেছে।

আরেক পর্য়টক রফিক উদ্দিন চৌধুরী বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে রাজশাহী থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণে এসেছি। এখানকার পরিবেশ খুবই চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর। বছরের শেষ দিন উপলক্ষে সৈকতে ছোট পরিসরে কোন অনুষ্ঠান করা গেলে ভাল হতো বলে মনে করেন তিনি।

শহরের তারকা মানের হোটেলগুলো সেজেছে নতুন সাজে। তারকা শিল্পীদের নিয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উৎসব আয়োজনের ব্যানার-ফেস্টুনও ঝুলছে হোটেলগুলোর ভেতর বাইরে।

হোটেল মালিকরা বলছেন, বুকিং আশানুরূপ হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নানা আয়োজন হাতে নেয়া হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে সব হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজে শতভাগ বুকিং আছে। অনেক পর্যটক আমাদের কাছে রুম চাইলেও দিতে পারছি না। এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি পর্যটক সমাগম হয়েছে । আগামী রবিবার পর্যন্ত শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট-গেস্টহাউসের সব কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

হোটেল কল্লোলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান হাসান বলেন, পর্যটকদের বিনোদন দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই হোটেল মাঠে সন্ধ্যাকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে আসছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে সেই অনুষ্ঠানের আকার বাড়ানো হয়েছে।

কক্সবাজারে লাখো পর্যটক
কক্সবাজারে লাখো পর্যটক

পর্যটকদের সুরক্ষায় সৈকতের বালিয়াড়ি, রাস্তা-ঘাট এবং হোটেল-মোটেল জোনে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের। অধিকাংশ হোটেলে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম বলেন,উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। একইসঙ্গে নিষিদ্ধ থাকছে সৈকতে আতশবাজি বা পটকা ফোটানো। তবে ইনডোরে কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে নিজস্ব ও পুলিশের সিকিউরিটি ব্যবস্থার সমন্বয় করে করা যাবে।পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন,পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এবারও সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফার্স্ট নাইটের আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর কয়েক স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তল্লাশি ছাড়া কাউকে সৈকতে নামতে দেওয়া হবে না।