০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ, আহত চার

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া
  • সময় ০১:১৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 38

সংঘর্ষে আহত চার

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে মাংসের বদলে ঝোল দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাবার পরিবেশকদের সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মাহফুজুর নামে একজনের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং মাথায় কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

শুক্রবার(০৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের রাশিদুল ইসলামের বাড়িতে তাঁর ছেলে রাফির সুন্নতে খাতনা উপলক্ষে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন,উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আকবরের ছেলে মাহফুজুর রহমান (২০) ও চান্নু হোসেন (৩৫), কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং ইয়াকুবের ছেলে জামিরুল (১৯)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাশিদুলের ছেলে রাফির সুন্নতে খাতনা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্তত ৩০০ স্বজন ও প্রতিবেশীকে দাওয়াত দেওয়া হয়। দুপুর থেকে সাজানো প্যান্ডেলে খাওয়া-দাওয়া চলছিল। বেলা তিনটার দিকে সেখানে প্রতিবেশী আকবরের স্ত্রী, দুই সন্তান মাহফুজুর, চান্নুসহ তাঁর পরিবারের অন্তত আটজন এক টেবিলে বসে খাচ্ছিলেন। সেখানে খাবার পরিবেশন করছিলেন রাফির মামা শহিদুল ইসলাম। সে সময় চান্নু মাংসের গামলা বদল করে ভালো মাংস আনতে বলেন। শহিদুল কয়েকবার গামলা বদল করে দেন। তবে প্রতিবারই গামলায় অতিরিক্ত ঝোল থাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়, এ থেকেই সংঘর্ষ বাধে। প্রায় আধা ঘণ্টা চেয়ার–ছোড়াছুড়ি করে একে অপরকে আক্রমণ করেন। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এবিষয়ে আহত চান্নু হোসেন বলেন, চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রাফির সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে এসেছিলাম। মাংস চাওয়ায় রাফির মামা শহিদুল ও তার লোকজন আমাদের ব্যাপক মারপিট করেছে, মাথা ফাটিয়েছে। আমরা বিচার চাই।

আহত মাহফুজুর বলেন, বারবার মাংসের বদলে ঝোল দিয়েছিল। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁর মাথায় চেয়ার দিয়ে আঘাত করে ফাটিয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। এ ব্যাপারে তিনি থানায় মামলা করবেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে রাফির মামা শহিদুল ইসলাম বলেন, বারবার মাংসের গামলা বদল করে দেওয়ার পরও চান্নু অভিযোগ করতে থাকে। এ নিয়ে তর্কাতর্কি করতে করতে চান্নুরা আমাকে মারধর করে জামা ছিঁড়েছে, মেরে চোখ ফুলিয়ে দিয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কে কার মাথা ফাটিয়েছে, তা জানি না।

রাফির বাবা রাশিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের ঝোল নিয়ে প্যান্ডেলে নিজেরা নিজেরা মারামারি ও ভাঙচুর করেছেন। অনুষ্ঠানের আনন্দ এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে।

কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক সোহাগ শিকদার বলেন, সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশকদের সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথিদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে সংঘর্ষ, আহত চার

সময় ০১:১৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে মাংসের বদলে ঝোল দেওয়াকে কেন্দ্র করে খাবার পরিবেশকদের সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত চারজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে মাহফুজুর নামে একজনের শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং মাথায় কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

শুক্রবার(০৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের রাশিদুল ইসলামের বাড়িতে তাঁর ছেলে রাফির সুন্নতে খাতনা উপলক্ষে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন,উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আকবরের ছেলে মাহফুজুর রহমান (২০) ও চান্নু হোসেন (৩৫), কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং ইয়াকুবের ছেলে জামিরুল (১৯)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাশিদুলের ছেলে রাফির সুন্নতে খাতনা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্তত ৩০০ স্বজন ও প্রতিবেশীকে দাওয়াত দেওয়া হয়। দুপুর থেকে সাজানো প্যান্ডেলে খাওয়া-দাওয়া চলছিল। বেলা তিনটার দিকে সেখানে প্রতিবেশী আকবরের স্ত্রী, দুই সন্তান মাহফুজুর, চান্নুসহ তাঁর পরিবারের অন্তত আটজন এক টেবিলে বসে খাচ্ছিলেন। সেখানে খাবার পরিবেশন করছিলেন রাফির মামা শহিদুল ইসলাম। সে সময় চান্নু মাংসের গামলা বদল করে ভালো মাংস আনতে বলেন। শহিদুল কয়েকবার গামলা বদল করে দেন। তবে প্রতিবারই গামলায় অতিরিক্ত ঝোল থাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়, এ থেকেই সংঘর্ষ বাধে। প্রায় আধা ঘণ্টা চেয়ার–ছোড়াছুড়ি করে একে অপরকে আক্রমণ করেন। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এবিষয়ে আহত চান্নু হোসেন বলেন, চাচাতো ভাইয়ের ছেলে রাফির সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে এসেছিলাম। মাংস চাওয়ায় রাফির মামা শহিদুল ও তার লোকজন আমাদের ব্যাপক মারপিট করেছে, মাথা ফাটিয়েছে। আমরা বিচার চাই।

আহত মাহফুজুর বলেন, বারবার মাংসের বদলে ঝোল দিয়েছিল। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁর মাথায় চেয়ার দিয়ে আঘাত করে ফাটিয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। এ ব্যাপারে তিনি থানায় মামলা করবেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে রাফির মামা শহিদুল ইসলাম বলেন, বারবার মাংসের গামলা বদল করে দেওয়ার পরও চান্নু অভিযোগ করতে থাকে। এ নিয়ে তর্কাতর্কি করতে করতে চান্নুরা আমাকে মারধর করে জামা ছিঁড়েছে, মেরে চোখ ফুলিয়ে দিয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কে কার মাথা ফাটিয়েছে, তা জানি না।

রাফির বাবা রাশিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের ঝোল নিয়ে প্যান্ডেলে নিজেরা নিজেরা মারামারি ও ভাঙচুর করেছেন। অনুষ্ঠানের আনন্দ এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে।

কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক সোহাগ শিকদার বলেন, সুন্নতে খাতনা অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশকদের সঙ্গে আমন্ত্রিত অতিথিদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।