ঢাকা ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবন রক্ষায় নতুন প্রকল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল।

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ০১:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪
  • / 252

সুন্দরবন। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল।

সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ৫১৭ বর্গ কিলোমিটার। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলার অংশ নিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন।

সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৪০০ নদী-নালা, খাল প্রবাহিত হয়েছে।

মাত্র এক শতাব্দী আগেও সুন্দরবনের উপরিভাগের ম্যানগ্রোভ বনে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ছিল। কিন্তু গাছপালা কেটে মানববসতি তৈরি, নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ দেওয়া, ¯øুইসগেট বসানো কিংবা ঘের করার কারণে বেশ কিছু নদী ও খালে পানি প্রবাহ কমে গেছে।

অনেক দেরিতে হলেও সরকার এসব খাল ও নদী নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছে। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদ থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিন্দি নদী পর্যন্ত ছোট-বড় ৫২টি নদ-নদীর পাড়ে ‘অপার সুন্দরবন রিস্টোরেশন প্রোগ্রাম’ নামে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে ৫২টি নদী ও খালের তীরে ম্যানগ্রোভ বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। খুলনার বটিয়াঘাটার শেখ রাসেল ইকোপার্কের লেকের তীরে পাঁচ একর জায়গা জুড়ে যেভাবে ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হয়েছে, সেভাবে বাস্তবায়ন করা হবে এ কার্যক্রম।

মূলত সুন্দরবনে যেসব গাছপালা রয়েছে, সেগুলোই লাগানো হবে নদী-খালের তীরে। ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার অর্থায়নে আইইউসিএন বাংলাদেশ ও বন বিভাগ এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।

গত বছরের ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি জানিয়েছিলেন, তার সরকার জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে সহায়তা করতে চায়। এ প্রেক্ষাপটে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা সুন্দরবন ও এর উপরিভাগে গ্রামাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘিরে এ কর্মসূচি নিয়েছে।

এর আগে এ কর্মসূচির আওতায় সুন্দরবনের উপরিভাগে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনবসতি ও শেখ রাসেল ইকোপার্কে একটি ম্যানগ্রোভ মডেল তৈরি করেন। ওই কর্মসূচির আওতায় বটিয়াঘাটায় শেখ রাসেল ইকোপার্কের পাঁচ একর জায়গায় কৃত্রিম হৃদ তৈরি করে রূপসা নদী থেকে লবণ পানি নিয়ে আসা হয়। পরে এই হৃদের তীরে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির চার হাজার চারা রোপণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে ম্যানগ্রোভ বন। সেই আদলেই ‘অপার সুন্দরবন রিস্টোরেশন প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন করা হবে।

এই প্রকল্পের ভেতর দিয়ে সুন্দরবনের উপরিভাগে নদী ও খালপাড় থেকে বিলীন হয়ে যাওয়া ম্যানগ্রোভ বন পুনরুদ্ধার করা যাবে বলে আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনও উপকৃত হবে।

শেয়ার করুন

সুন্দরবন রক্ষায় নতুন প্রকল্প। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল।

সময় ০১:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪

সুন্দরবন। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন বা লবণাক্ত বনাঞ্চল।

সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অবস্থিত। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ৫১৭ বর্গ কিলোমিটার। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলার অংশ নিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন।

সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৪০০ নদী-নালা, খাল প্রবাহিত হয়েছে।

মাত্র এক শতাব্দী আগেও সুন্দরবনের উপরিভাগের ম্যানগ্রোভ বনে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ছিল। কিন্তু গাছপালা কেটে মানববসতি তৈরি, নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ দেওয়া, ¯øুইসগেট বসানো কিংবা ঘের করার কারণে বেশ কিছু নদী ও খালে পানি প্রবাহ কমে গেছে।

অনেক দেরিতে হলেও সরকার এসব খাল ও নদী নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছে। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বলেশ্বর নদ থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিন্দি নদী পর্যন্ত ছোট-বড় ৫২টি নদ-নদীর পাড়ে ‘অপার সুন্দরবন রিস্টোরেশন প্রোগ্রাম’ নামে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এই কর্মসূচির মাধ্যমে ৫২টি নদী ও খালের তীরে ম্যানগ্রোভ বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বন বিভাগ। খুলনার বটিয়াঘাটার শেখ রাসেল ইকোপার্কের লেকের তীরে পাঁচ একর জায়গা জুড়ে যেভাবে ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হয়েছে, সেভাবে বাস্তবায়ন করা হবে এ কার্যক্রম।

মূলত সুন্দরবনে যেসব গাছপালা রয়েছে, সেগুলোই লাগানো হবে নদী-খালের তীরে। ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার অর্থায়নে আইইউসিএন বাংলাদেশ ও বন বিভাগ এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।

গত বছরের ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তিনি জানিয়েছিলেন, তার সরকার জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে সহায়তা করতে চায়। এ প্রেক্ষাপটে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা সুন্দরবন ও এর উপরিভাগে গ্রামাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘিরে এ কর্মসূচি নিয়েছে।

এর আগে এ কর্মসূচির আওতায় সুন্দরবনের উপরিভাগে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনবসতি ও শেখ রাসেল ইকোপার্কে একটি ম্যানগ্রোভ মডেল তৈরি করেন। ওই কর্মসূচির আওতায় বটিয়াঘাটায় শেখ রাসেল ইকোপার্কের পাঁচ একর জায়গায় কৃত্রিম হৃদ তৈরি করে রূপসা নদী থেকে লবণ পানি নিয়ে আসা হয়। পরে এই হৃদের তীরে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির চার হাজার চারা রোপণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে ম্যানগ্রোভ বন। সেই আদলেই ‘অপার সুন্দরবন রিস্টোরেশন প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন করা হবে।

এই প্রকল্পের ভেতর দিয়ে সুন্দরবনের উপরিভাগে নদী ও খালপাড় থেকে বিলীন হয়ে যাওয়া ম্যানগ্রোভ বন পুনরুদ্ধার করা যাবে বলে আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনও উপকৃত হবে।