ঢাকা ১১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাত কলেজের অধ্যক্ষ-ঢাবি উপাচার্য জরুরি বৈঠক

বিশেষ প্রতিনিধি
  • সময় ১২:৫৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 71

সাত কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে জরুরি সভা ডেকে বৈঠক করবেন ঢাবি উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খান এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষগণের এক জরুরি সভা আগামীকাল ২৭ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

ঢাবি প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও করতে আসা সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়েছেন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ এতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা পিছু হটে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। তবে উভয় পক্ষের মধ্যেই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ চলছে।

ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি
ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব, টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেন। এরপর রাজধানীর তাঁতীবাজারেও অবরোধ করেন তারা

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাত কলেজের সমস্যা ও ভর্তির আসন সংখ্যা কমানোর বিষয়ে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) কাছে গেলে তিনি অশোভন আচরণ করে রুম থেকে বের করে দেন। তিনি বলেন, সাত কলেজের বিষয়ে কিছু জানেন না।

তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, এবিষয়ে ২১ দিন আগে তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও সেটি পড়েননি। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চিনেন না বলেই তিনি আক্রমণমূলক ব্যবহার করেছেন। তাই তার অশোভন আচরণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুর রহমান অশোভন আচরণের জন্য ঢাবি প্রোভিসিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ৫ দফা দাবির কথা জানান। সেগুলো হচ্ছে — ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে; শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না; শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে; নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে; সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে, মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাবি ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফির টাকা জমা রাখতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখ নীলক্ষেত সংলগ্ন ‘মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ’ গেটে সাত কলেজের আন্দোলনরতদের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাব অবরোধ ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার ঘোষণা দিলে ঢাবি শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই মূল ফটকে অবস্থান নেয়।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের ভেতরে এবং সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেতের দিকে অবস্থান নিয়েছেন। মাঝখানে পুলিশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। উভয় পক্ষই থেকে স্লোগান দিচ্ছে। পুলিশ দুপক্ষকেই শান্ত করা চেষ্টা করছে।

রাজধানীর দুই পয়েন্টে অবরোধ
রাজধানীর দুই পয়েন্টে অবরোধ

এরআগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেন, আজ বিকালে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এর জেরে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তারা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন।

এক পর্যায়ে ঢাবির ভিসিকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা ১ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন আন্দোলনকারীরা। তাতেও সাড়া না পেয়ে রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোড়ে এক আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে ঢাবির প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল রহমান এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং ঢাবি প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুনের (শিক্ষা) ‘অসদাচরণের’ জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে তার বাসভবন ঘেরাও করা হবে। সেখানে তিনি (প্রো-ভিসি) শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং আমাদের সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থী আব্দুর রহমানের ঘোষণা দেওয়া পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেন। পরে তারা ঢাকা কলেজের বিভিন্ন হলপাড়া ঘুরে আরও শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে ঢাবি প্রো-ভিসি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।

 

শেয়ার করুন

সাত কলেজের অধ্যক্ষ-ঢাবি উপাচার্য জরুরি বৈঠক

সময় ১২:৫৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে জরুরি সভা ডেকে বৈঠক করবেন ঢাবি উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম খান এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষগণের এক জরুরি সভা আগামীকাল ২৭ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

ঢাবি প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও করতে আসা সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়েছেন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা৷ এতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা পিছু হটে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। তবে উভয় পক্ষের মধ্যেই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ চলছে।

ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি
ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি

রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব, টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেন। এরপর রাজধানীর তাঁতীবাজারেও অবরোধ করেন তারা

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাত কলেজের সমস্যা ও ভর্তির আসন সংখ্যা কমানোর বিষয়ে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) কাছে গেলে তিনি অশোভন আচরণ করে রুম থেকে বের করে দেন। তিনি বলেন, সাত কলেজের বিষয়ে কিছু জানেন না।

তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, এবিষয়ে ২১ দিন আগে তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও সেটি পড়েননি। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের চিনেন না বলেই তিনি আক্রমণমূলক ব্যবহার করেছেন। তাই তার অশোভন আচরণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুর রহমান অশোভন আচরণের জন্য ঢাবি প্রোভিসিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ৫ দফা দাবির কথা জানান। সেগুলো হচ্ছে — ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হবে; শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না; শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে; নেগেটিভ মার্ক যুক্ত করতে হবে; সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে, মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাবি ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফির টাকা জমা রাখতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখ নীলক্ষেত সংলগ্ন ‘মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ’ গেটে সাত কলেজের আন্দোলনরতদের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাব অবরোধ ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার ঘোষণা দিলে ঢাবি শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই মূল ফটকে অবস্থান নেয়।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের ভেতরে এবং সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেতের দিকে অবস্থান নিয়েছেন। মাঝখানে পুলিশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। উভয় পক্ষই থেকে স্লোগান দিচ্ছে। পুলিশ দুপক্ষকেই শান্ত করা চেষ্টা করছে।

রাজধানীর দুই পয়েন্টে অবরোধ
রাজধানীর দুই পয়েন্টে অবরোধ

এরআগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ করেন, আজ বিকালে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবির অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এর জেরে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তারা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন।

এক পর্যায়ে ঢাবির ভিসিকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা ১ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন আন্দোলনকারীরা। তাতেও সাড়া না পেয়ে রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোড়ে এক আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে ঢাবির প্রো-ভিসির বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল রহমান এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং ঢাবি প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মামুনের (শিক্ষা) ‘অসদাচরণের’ জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়াসহ ছয় দফা দাবিতে তার বাসভবন ঘেরাও করা হবে। সেখানে তিনি (প্রো-ভিসি) শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং আমাদের সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থী আব্দুর রহমানের ঘোষণা দেওয়া পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দেন। পরে তারা ঢাকা কলেজের বিভিন্ন হলপাড়া ঘুরে আরও শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে ঢাবি প্রো-ভিসি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।