সরকারের পরিকল্পনায় সাগর-রুনি খুনের আলামত নষ্ট

- সময় ১২:৪৩:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 43
বাংলাদেশের সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার আজ ১৩ বছর পূর্ণ হলো। এই খুনের আলামত সরকার পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাদীর আইনজীবী শিশির মনির। তিনি আরো বলেন, অপরাধীদের বাঁচাতে আওয়ামী লীগ সরকার এ কাজ করেছিল।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন এই দম্পতি। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন এবং মেহেরুন রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। তাঁদের হত্যাকাণ্ড দেশের সাংবাদিক সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে থানা পুলিশ, পরে ডিবি এবং র্যাবের ওপর ছিল, কিন্তু গত ১৩ বছরে মামলার কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। কিছু আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ১১৪ বার সময় পিছিয়েছে, যা সন্দেহজনকভাবে বিলম্বিত।
গত আগস্টে নতুন সরকার গঠনের পর পিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইজিপিকে প্রধান করে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এ পর্যন্ত ৬২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এবং মামলায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে দুজন জামিনে রয়েছেন। তবে, টাস্কফোর্স এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃত হয়েছে।

মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের রোমান মনে করেন, আগের সরকার ইচ্ছে করেই তদন্তের অগ্রগতি রোধ করেছে এবং তারা বিশ্বাস করেন কিছু রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে জড়িত ছিলেন, যার কারণে তদন্তের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে, সাগর-রুনির পুত্র মাহির সারোয়ার মেঘ, যিনি বর্তমানে ১৮ বছর বয়সী, তাঁর বাবা-মায়ের খুনিদের শাস্তি দেখতে চান। মেঘ জানিয়েছেন, “অতীতে কোনো কাজ হয়নি, তবে এখন কিছুটা অগ্রগতি হচ্ছে। আশা করি বিচার হবে, যদি না হয়, তবুও আমি জানি আগেও কিছু হয়নি।”
সাগর সারোয়ারের মা সালেহা মনির বলেন, “আর কত রাত জাগবো? আর কত অপেক্ষা করবো?” তিনি এখনো আশাবাদী, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব।
বর্তমান অন্তর্বতী সরকারের কাছে পরিবার ও স্বজনদের প্রত্যাশা, দ্রুত এই মামলার বিচার কাজ শেষ করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।