ঢাকা ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আলিফ হত্যাকাণ্ডে

শেখ হাসিনা আমলের মতো মামলা বাণিজ্য চলছে

নিউজ ডেস্ক
  • সময় ১২:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 35

শেখ হাসিনা

চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে অজ্ঞাতনামা আসামি রেখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা আমলের মতো বাণিজ্য চলছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এই মন্তব্য করেন।

আনু মহাম্মদ বলেন, ‘আলিফ হত্যাকাণ্ডে পাইকারি দরে মামলা হচ্ছে। অজ্ঞাতনামা আসামি বাণিজ্য চলছে। হরিজন কলোনি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এর শিকার হচ্ছে। হিন্দু পরিচয়ের কারণে অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’

ভারত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব ঘটনা সেই অপপ্রচারকে শক্তিশালী করছে বলে অভিযোগ করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ ব্যবহার না করে তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।’

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সংবাদ সম্মেলন
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সংবাদ সম্মেলন

গ্রেফতার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সব অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তিদের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

এদিকে, ভিডিও ফুটেজ দেখে সত্যিকারের অপরাধীদের গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়ে আইনজীবী ও সংবাদ উপস্থাপক মানজুর আল মতিন বলেন, ‘আইনজীবীদের কাজে বাধা দেয়া চলবে না। সব আসামিকেই আইনজীবী নিয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি, সবার আইনগত অধিকার নিশ্চিত করা।’

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে মামলা করা এবং তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে না। বরং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুরকে ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছিল তদন্ত কমিটি। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির সবাই অব্যাহিত চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। কেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা অব্যাহিত চেয়েছেন, সেটির কারণও জানা গেছে।

কমিটির প্রধান সাবেক মহানগর পিপি ও আইনজীবী আবদুস সাত্তার জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের কাছে এই সুপারিশ করেন এবং তিনি তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এর আগে, কমিটির সদস্যসচিবসহ চার সদস্য অব্যাহতি চেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তার বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনার পর সমিতির পক্ষ থেকে ১০ নভেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৫ নভেম্বর রিপোর্ট দিতে বলা হয়। এর মধ্যে সদস্যসচিবসহ চার জন পদত্যাগ করেছেন। এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭টি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী জড়িত থাকতে পারে। পুলিশের মাইক দিয়ে প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায় চিন্ময় বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলার নকল নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন অবস্থায় এ ঘটনা সাধারণ কেউ তদন্ত করলে হবে বলে মনে করছি না। একজন জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক দিয়ে আলোচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।

শেয়ার করুন

আলিফ হত্যাকাণ্ডে

শেখ হাসিনা আমলের মতো মামলা বাণিজ্য চলছে

সময় ১২:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে অজ্ঞাতনামা আসামি রেখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা আমলের মতো বাণিজ্য চলছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এই মন্তব্য করেন।

আনু মহাম্মদ বলেন, ‘আলিফ হত্যাকাণ্ডে পাইকারি দরে মামলা হচ্ছে। অজ্ঞাতনামা আসামি বাণিজ্য চলছে। হরিজন কলোনি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এর শিকার হচ্ছে। হিন্দু পরিচয়ের কারণে অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’

ভারত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব ঘটনা সেই অপপ্রচারকে শক্তিশালী করছে বলে অভিযোগ করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ ব্যবহার না করে তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।’

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সংবাদ সম্মেলন
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সংবাদ সম্মেলন

গ্রেফতার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সব অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তিদের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

এদিকে, ভিডিও ফুটেজ দেখে সত্যিকারের অপরাধীদের গ্রেফতারের আহ্বান জানিয়ে আইনজীবী ও সংবাদ উপস্থাপক মানজুর আল মতিন বলেন, ‘আইনজীবীদের কাজে বাধা দেয়া চলবে না। সব আসামিকেই আইনজীবী নিয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি, সবার আইনগত অধিকার নিশ্চিত করা।’

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে মামলা করা এবং তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে না। বরং সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।’

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুরকে ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছিল তদন্ত কমিটি। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির সবাই অব্যাহিত চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। কেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা অব্যাহিত চেয়েছেন, সেটির কারণও জানা গেছে।

কমিটির প্রধান সাবেক মহানগর পিপি ও আইনজীবী আবদুস সাত্তার জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের কাছে এই সুপারিশ করেন এবং তিনি তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এর আগে, কমিটির সদস্যসচিবসহ চার সদস্য অব্যাহতি চেয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তার বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনার পর সমিতির পক্ষ থেকে ১০ নভেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৫ নভেম্বর রিপোর্ট দিতে বলা হয়। এর মধ্যে সদস্যসচিবসহ চার জন পদত্যাগ করেছেন। এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭টি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী জড়িত থাকতে পারে। পুলিশের মাইক দিয়ে প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায় চিন্ময় বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলার নকল নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন অবস্থায় এ ঘটনা সাধারণ কেউ তদন্ত করলে হবে বলে মনে করছি না। একজন জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক দিয়ে আলোচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।