ধর্ষণের সংজ্ঞায়ও পরিবর্তন
শুধু শিশু ধর্ষণের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে

- সময় ০৭:০০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
- / 32
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, শুধু শিশু ধর্ষণ মামলার আলাদাভাবে বিচার করার জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হচ্ছে। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, আদালত চাইলে মেডিকেল সার্টিফিকেট ও পারিপার্শ্বিক সাক্ষীর ভিত্তিতে ডিএনএ সার্টিফিকেট ছাড়াই দ্রুত বিচার করতে পারবেন।
সোমবার (১৭ মার্চ) বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
আইন উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং শিশু ধর্ষণ মামলার জন্য পৃথক ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তিনি বলেন, “বিয়ের প্রলোভনে প্রতারণামূলক সম্মতি ও সম্মতি ছাড়া ধর্ষণ—এই দুই ক্ষেত্রকে পৃথক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এসব অপরাধের বিচারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে আনা হয়েছে।”
ধর্ষণের সংজ্ঞায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান তিনি। নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, ধর্ষণ কেবলমাত্র পুরুষ কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ নয়, বরং যেকোনো ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। বলৎকারকেও ধর্ষণের সংজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। শুধু শারীরিক সংস্পর্শই নয়, যেকোনো বস্তু দ্বারা আঘাতের মাধ্যমেও সংঘটিত অপরাধকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হবে।
ডিএনএ রিপোর্ট না পাওয়ার কারণে বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখন আদালত চাইলে মেডিকেল সার্টিফিকেট ও অন্যান্য সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দ্রুত বিচার করতে পারবেন।”
ভিকটিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন বিধান সংযোজন করা হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “ভিকটিমদের ক্ষতিপূরণ প্রদান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং গুরুতর জখমের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”
সংশোধিত আইনে ধর্ষণের মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। বিচারক চাইলে মামলার রায় ঘোষণার পর যদি বুঝতে পারেন যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করা হয়েছে, তাহলে তিনি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
আইনের অপব্যবহার রোধে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরও সংশোধন আনা হবে বলে জানান অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
নতুন খসড়া আইনে ধর্ষণের মামলার তদন্তের সময়সীমা ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হয়েছে এবং বিচারকাজ ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার বিধান রাখা হয়েছে। আদালত চাইলে ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।