ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কুয়াকাটায় সরকারি কাজে বাঁধা ও হামলা

শতাধিক অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা

উপকূল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  • সময় ০৮:৫৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / 93

কুয়াকাটা

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া বেড়িবাঁধের বাহিরে ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা ও হামলার অভিযোগ এনে শতাধিক দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে মহিপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মহিপুর থানার ওসি মোঃ তরিকুল ইসলাম।

এ মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধায় স্থানীয় শতাধিক নারী পুরুষ মিছিল করেছে। এ ঘটনায় সমুদ্র সৈকত এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানান, সমুদ্র সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছিলো। বুধবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেতৃত্বে এসব অবৈধ স্থাপণা উচ্ছেদ করতে গেলে এতে স্থানীয়রা বাঁধা দেয় এবং দখলদার’রা প্রশাসনের উপর চড়াও হন। উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ড্রাইভারকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতেই সরকারি কাজে বাধা, সম্পদ নষ্ট ও হামলার অভিযোগ এনে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক আসামী দিয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা করা হয়।

কুয়াকাটা ২
কুয়াকাটা ২

এ মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবৈধ দখলদাররা। তারা এ মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল করে। এ সময় তারা দাবি করেন, তারা এ দেশের নাগরিক হয়েও তাদের কোথাও থাকার জায়গা নেই। দীর্ঘদিন তারা সরকারি জমিতে বসবাস করে আসছেন। এসব জমি পতিত রয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ অভিযানে নামে উপজেলা প্রশাসন। তারা শুধুমাত্র এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কারো উপর হামলা করেননি। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি যাতে তাদেরকে পুনর্বাসন করা হয় এমন দাবি জানান জেলা প্রশাসনের কাছে।

এ বিষয়ে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দখলদাররা একত্রিত হয়ে লেবারদের উপর হামলা চালায়। সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পদ নষ্ট, হামলা ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন বলে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী অফিসার মো: রবিউল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটা ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয়রা সরকারি কাজে বাধা দেয়। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ফেলে ড্রাইভারকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় মহিপুর তহসিলদার বাদি হয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ সহ পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো জানান, এর আগে ২০২৩ সালে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলেও পরবর্তীতে তারা আবার এসে সরকারি সম্পত্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে।  এসব অবৈধ দখলদারদের অনেকেরই অন্য স্থানে জমাজমি ও ঘরবাড়ি রয়েছে বলে তার দাবী।

শেয়ার করুন

কুয়াকাটায় সরকারি কাজে বাঁধা ও হামলা

শতাধিক অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা

সময় ০৮:৫৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া বেড়িবাঁধের বাহিরে ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে বাঁধা ও হামলার অভিযোগ এনে শতাধিক দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে মহিপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মহিপুর থানার ওসি মোঃ তরিকুল ইসলাম।

এ মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধায় স্থানীয় শতাধিক নারী পুরুষ মিছিল করেছে। এ ঘটনায় সমুদ্র সৈকত এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানান, সমুদ্র সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছিলো। বুধবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেতৃত্বে এসব অবৈধ স্থাপণা উচ্ছেদ করতে গেলে এতে স্থানীয়রা বাঁধা দেয় এবং দখলদার’রা প্রশাসনের উপর চড়াও হন। উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ড্রাইভারকে মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতেই সরকারি কাজে বাধা, সম্পদ নষ্ট ও হামলার অভিযোগ এনে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত শতাধিক আসামী দিয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা করা হয়।

কুয়াকাটা ২
কুয়াকাটা ২

এ মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবৈধ দখলদাররা। তারা এ মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল করে। এ সময় তারা দাবি করেন, তারা এ দেশের নাগরিক হয়েও তাদের কোথাও থাকার জায়গা নেই। দীর্ঘদিন তারা সরকারি জমিতে বসবাস করে আসছেন। এসব জমি পতিত রয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ অভিযানে নামে উপজেলা প্রশাসন। তারা শুধুমাত্র এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কারো উপর হামলা করেননি। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি যাতে তাদেরকে পুনর্বাসন করা হয় এমন দাবি জানান জেলা প্রশাসনের কাছে।

এ বিষয়ে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দখলদাররা একত্রিত হয়ে লেবারদের উপর হামলা চালায়। সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পদ নষ্ট, হামলা ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছেন বলে এর সত্যতা নিশ্চিত করেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী অফিসার মো: রবিউল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটা ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয়রা সরকারি কাজে বাধা দেয়। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ফেলে ড্রাইভারকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় মহিপুর তহসিলদার বাদি হয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ সহ পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি আরো জানান, এর আগে ২০২৩ সালে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলেও পরবর্তীতে তারা আবার এসে সরকারি সম্পত্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে।  এসব অবৈধ দখলদারদের অনেকেরই অন্য স্থানে জমাজমি ও ঘরবাড়ি রয়েছে বলে তার দাবী।