ঢাকা ০১:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাল তালিকামুক্ত হলো পাকিস্তানি পণ্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০২:৩৮:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • / 263

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক পরিমণ্ডলে ভারতের প্রভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব, বিশেষত পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, ছিল স্পষ্ট।

সরকারের পক্ষে তখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সকল পণ্যকে লাল তালিকাভুক্ত করে, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ককে স্তিমিত করে দেয়।

ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগষ্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। দায়িত্ব নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই পাকিস্তান দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে উঠে পড়ে লাগে। তারা বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা ফি মওকুফ করেন।

গত ১ অক্টোবর নতুন অন্তবর্তী সরকার পাকিস্তান থেকে আসা পণ্যসমূহের উপর লাল তালিকার বাধা তুলে দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশে পাকিস্তানের পণ্য আমদানিতে আর বাঁধা থাকলো না।

এনবিআর-এর নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানের পণ্য এখন রেডলেন বা লাল তালিকা থেকে অবমুক্ত হয়েছে, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে জোরালো করতে সহায়ক হবে।

শুধু পাকিস্তানের পণ্য এই রেডলেনে ছিল। ন্যাশনাল সিলেকটিভিটি ক্রাইটেরিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় এই পণ্যগুলো রেডলেন থেকে অবমুক্ত করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বাংলাদেশে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের আহ্বান জানান। এই সাক্ষাতের পর থেকেই এনবিআর তাদের নীতি পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেয়।

পাকিস্তানি পণ্য লাল তালিকা থেকে মুক্ত হওয়ায় দেশে উৎপাদনমুখী পণ্যের কাঁচামাল আমদানির প্রক্রিয়া সহজ হবে। বিশেষত, তুলা, সুতা এবং কাপড় আমদানিতে যে জটিলতা ছিল, তা এখন দূর হবে।

এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে উৎপাদনশীল খাতের কাঁচামাল আমদানিতে আরও প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে। তুলা, সুতা, কাপড়, এমনকি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বাংলাদেশে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়।

পাকিস্তানি শিশু খাদ্য, জুস, কাটলারি এবং অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামেরও বাংলাদেশে ভালো চাহিদা রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আমদানিকারক এবং কাস্টম হাউজের মধ্যে কাজের সময় কমবে, যা পণ্য খালাসের প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করবে।

এই উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় উন্মোচিত হতে চলেছে। দুই দেশের মধ্যে অতীতে বাণিজ্য ছিল সীমিত এবং বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন। তবে সাম্প্রতিককালে পাকিস্তান তাদের বাণিজ্যিক নীতি পর্যালোচনা করে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার উদ্যোগ নিয়েছে।

শেয়ার করুন

লাল তালিকামুক্ত হলো পাকিস্তানি পণ্যের

সময় ০২:৩৮:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক পরিমণ্ডলে ভারতের প্রভাব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব, বিশেষত পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, ছিল স্পষ্ট।

সরকারের পক্ষে তখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সকল পণ্যকে লাল তালিকাভুক্ত করে, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ককে স্তিমিত করে দেয়।

ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগষ্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। দায়িত্ব নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই পাকিস্তান দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে উঠে পড়ে লাগে। তারা বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা ফি মওকুফ করেন।

গত ১ অক্টোবর নতুন অন্তবর্তী সরকার পাকিস্তান থেকে আসা পণ্যসমূহের উপর লাল তালিকার বাধা তুলে দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশে পাকিস্তানের পণ্য আমদানিতে আর বাঁধা থাকলো না।

এনবিআর-এর নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানের পণ্য এখন রেডলেন বা লাল তালিকা থেকে অবমুক্ত হয়েছে, যা দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে জোরালো করতে সহায়ক হবে।

শুধু পাকিস্তানের পণ্য এই রেডলেনে ছিল। ন্যাশনাল সিলেকটিভিটি ক্রাইটেরিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় এই পণ্যগুলো রেডলেন থেকে অবমুক্ত করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

সেপ্টেম্বরের ১০ তারিখে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বাংলাদেশে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নের আহ্বান জানান। এই সাক্ষাতের পর থেকেই এনবিআর তাদের নীতি পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেয়।

পাকিস্তানি পণ্য লাল তালিকা থেকে মুক্ত হওয়ায় দেশে উৎপাদনমুখী পণ্যের কাঁচামাল আমদানির প্রক্রিয়া সহজ হবে। বিশেষত, তুলা, সুতা এবং কাপড় আমদানিতে যে জটিলতা ছিল, তা এখন দূর হবে।

এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে উৎপাদনশীল খাতের কাঁচামাল আমদানিতে আরও প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে। তুলা, সুতা, কাপড়, এমনকি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য বাংলাদেশে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়।

পাকিস্তানি শিশু খাদ্য, জুস, কাটলারি এবং অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামেরও বাংলাদেশে ভালো চাহিদা রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আমদানিকারক এবং কাস্টম হাউজের মধ্যে কাজের সময় কমবে, যা পণ্য খালাসের প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত করবে।

এই উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় উন্মোচিত হতে চলেছে। দুই দেশের মধ্যে অতীতে বাণিজ্য ছিল সীমিত এবং বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন। তবে সাম্প্রতিককালে পাকিস্তান তাদের বাণিজ্যিক নীতি পর্যালোচনা করে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার উদ্যোগ নিয়েছে।