লাল চন্দন কেন এত দামি ?
- সময় ১১:০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
- / 277
চন্দন কাঠের নাম শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। রূপ চর্চা কিংবা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই কাঠের বহুল ব্যবহার হয়।
সম্প্রতি ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ সিনেমা মুক্তির পর থেকে নতুন করে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই চন্দন কাঠ। তবে এবারের আলোচনা লাল চন্দন ঘিরে। আসলেই কি লাল চন্দন এতো দামি- এমন প্রশ্ন এখন অনেকেরই।
সিনেমায় আলু অর্জুন কীভাবে লাল চন্দন কাঠ পাচার করে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন সেই গল্প নিয়েই এগিয়েছে পরবর্তী তিন ঘণ্টা।
লাল চন্দন কাঠের একটি অনন্য এবং বিরল রূপ, যা ভারতের ঐতিহ্য হিসেবে মনে করা হয়। সাদা চন্দনের সুঘ্রাণ থাকলেও লাল বা রক্তচন্দনে গন্ধ নেই। কিন্তু কাঠের বিশেষ গুণের জন্য এর চাহিদা বিশ্বজুড়ে। ভারতীয়রা একে বলে ‘রেড গোল্ড’। বিশ্ববাজারে এর চাহিদার জন্যই এই নামকরণ।
ভারতীয় পুরাণে চন্দনকে ধর্মীয় সম্মান দেয়া হয়েছে। শুধু বিশ্বাসের ওপর হিন্দু ধর্মে চন্দনের বহুবিধ ব্যবহার দেখা যায়। হিন্দু ধনী ব্যক্তিরা মারা গেলে চন্দন কাঠ দিয়ে দাহ করার ঐতিহ্য বহুকাল ধরেই চলে আসছে।
পূজায় লাল চন্দনের ব্যবহার অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস লাল চন্দন ঘরে সুখ আনে।
লাল চন্দন একটি ছোট গাছ, যা উচ্চতায় ৫-৮ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং গাঢ় লাল রঙের হয়, যা বড় হতে ৭-১২ বছর সময় নেয়।
সাধারণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার শেষাচলম জঙ্গলে মেলে এই লাল চন্দন। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটক – এই তিন রাজ্যের সীমান্ত এসে মিলেছে এই ঘন জঙ্গলে।
আন্তর্জাতিক বাজারে এক টন লাল চন্দন কাঠের দাম ৮০ লাখ থেকে দুই কোটি টাকা। বিশেষ করে চীন ও জাপানের মতো দেশে লাল চন্দন এবং এই কাঠ থেকে তৈরি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এটি বেশিরভাগই বাদ্যযন্ত্র, আসবাবপত্র, ভাস্কর্য ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ইনস্টিটিউট অব উড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মতে, এই উদ্ভিদ শরীরকে শীতল করে, জ্বালাপোড়া কমায়, রয়েছে রক্ত শুদ্ধিকরণের গুণও। মাথাব্যথা, চর্মরোগ, জ্বর, ফোঁড়া, বৃশ্চিকের দংশনে চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত হয় এটি। দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতেও লাল চন্দনের অবদান রয়েছে।
সব দিক বিবেচনা করে ২০০০ সালের দিকে ভারতে লাল চন্দন কাটা, বিক্রয় এবং রপ্তানিসহ সকল প্রকার কারবার নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন দেশে পাচার শুরু হয় লাল চন্দন।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) ২০১৮ সালে এই গাছকে ‘প্রায় বিলুপ্ত’ শ্রেণির তালিকাভুক্ত করেছে। এক সময় এতই গাছ কাটা হয়েছে যে আর মাত্র ৫ শতাংশ লাল চন্দন গাছ ভারতে অবশিষ্ট রয়েছে বলে জানা যায়।
শেয়ার করুন
লাল চন্দন কেন এত দামি ?
চন্দন কাঠের নাম শোনেননি এমন মানুষের সংখ্যা খুব কম। রূপ চর্চা কিংবা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই কাঠের বহুল ব্যবহার হয়।
সম্প্রতি ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ সিনেমা মুক্তির পর থেকে নতুন করে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই চন্দন কাঠ। তবে এবারের আলোচনা লাল চন্দন ঘিরে। আসলেই কি লাল চন্দন এতো দামি- এমন প্রশ্ন এখন অনেকেরই।
সিনেমায় আলু অর্জুন কীভাবে লাল চন্দন কাঠ পাচার করে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন সেই গল্প নিয়েই এগিয়েছে পরবর্তী তিন ঘণ্টা।
লাল চন্দন কাঠের একটি অনন্য এবং বিরল রূপ, যা ভারতের ঐতিহ্য হিসেবে মনে করা হয়। সাদা চন্দনের সুঘ্রাণ থাকলেও লাল বা রক্তচন্দনে গন্ধ নেই। কিন্তু কাঠের বিশেষ গুণের জন্য এর চাহিদা বিশ্বজুড়ে। ভারতীয়রা একে বলে ‘রেড গোল্ড’। বিশ্ববাজারে এর চাহিদার জন্যই এই নামকরণ।
ভারতীয় পুরাণে চন্দনকে ধর্মীয় সম্মান দেয়া হয়েছে। শুধু বিশ্বাসের ওপর হিন্দু ধর্মে চন্দনের বহুবিধ ব্যবহার দেখা যায়। হিন্দু ধনী ব্যক্তিরা মারা গেলে চন্দন কাঠ দিয়ে দাহ করার ঐতিহ্য বহুকাল ধরেই চলে আসছে।
পূজায় লাল চন্দনের ব্যবহার অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস লাল চন্দন ঘরে সুখ আনে।
লাল চন্দন একটি ছোট গাছ, যা উচ্চতায় ৫-৮ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং গাঢ় লাল রঙের হয়, যা বড় হতে ৭-১২ বছর সময় নেয়।
সাধারণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার শেষাচলম জঙ্গলে মেলে এই লাল চন্দন। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটক – এই তিন রাজ্যের সীমান্ত এসে মিলেছে এই ঘন জঙ্গলে।
আন্তর্জাতিক বাজারে এক টন লাল চন্দন কাঠের দাম ৮০ লাখ থেকে দুই কোটি টাকা। বিশেষ করে চীন ও জাপানের মতো দেশে লাল চন্দন এবং এই কাঠ থেকে তৈরি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এটি বেশিরভাগই বাদ্যযন্ত্র, আসবাবপত্র, ভাস্কর্য ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
ইনস্টিটিউট অব উড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির মতে, এই উদ্ভিদ শরীরকে শীতল করে, জ্বালাপোড়া কমায়, রয়েছে রক্ত শুদ্ধিকরণের গুণও। মাথাব্যথা, চর্মরোগ, জ্বর, ফোঁড়া, বৃশ্চিকের দংশনে চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত হয় এটি। দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতেও লাল চন্দনের অবদান রয়েছে।
সব দিক বিবেচনা করে ২০০০ সালের দিকে ভারতে লাল চন্দন কাটা, বিক্রয় এবং রপ্তানিসহ সকল প্রকার কারবার নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন দেশে পাচার শুরু হয় লাল চন্দন।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) ২০১৮ সালে এই গাছকে ‘প্রায় বিলুপ্ত’ শ্রেণির তালিকাভুক্ত করেছে। এক সময় এতই গাছ কাটা হয়েছে যে আর মাত্র ৫ শতাংশ লাল চন্দন গাছ ভারতে অবশিষ্ট রয়েছে বলে জানা যায়।