ঢাকা ০২:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারী দুইজন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া
  • সময় ১০:৫৭:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 18

রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের উখিয়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে ৬ বছর বয়সী চাঞ্চল্যকর শিশু মোহাম্মদ আরাকানকে অপহরণ পরবর্তী ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া কুতুপালং রেজিস্ট্রার ক্যাম্পের এফ ব্লকে অভিযান চালিয়ে নুর ইসলাম (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।

একইদিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কুতুপালং রেজিস্ট্রার ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনা করে ঐ ক্যাম্পের একই ব্লকের বাসিন্দা সালাম (২০) কে গ্রেপ্তার করা হয়।

আটক অপহরণকারী চক্রের অন্যতম সদস্য নুর ইসলাম (২২) উখিয়া কুতুপালং রেজিস্টার ক্যাম্পের বি-এফ ব্লকের বাসিন্দা মৃত নুরুল হক এর ছেলে। তার এমআরসি নং-২৩৮২৩ এবং সালাম (২০) ঐ ক্যাম্পের একই ব্লকের বাসিন্দা।

রোহিঙ্গা শিশু আরাকান অপহরণের ঘটনায় জড়িত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন।

তিনি জানান, রোহিঙ্গা শিশু আরাকান কে অপহরণের সাথে সরাসরি জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা শিশুটিকে অপহরণের সাড়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারী দুইজন গ্রেপ্তার
রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারী দুইজন গ্রেপ্তার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ৮ এপিবিএন এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল হাদী জানান, কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্প পুলিশ ও উখিয়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় অপহরণে সরাসরি জড়িত দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে তারা শিশু অপহরণের পর ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের কথা স্বীকার করেছে।

থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বিকেল অনুমান সাড়ে চারটার সময় শিশু আরাকানকে ছোলা মুড়ি খাওয়ানোর কথা বলে সিএনজিতে তুলে নিয়ে আটক নুর ইসলাম ও পলাতক আসামী মো. সাদেক শিশু আরাকান (৬) কে ১৯-নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহরণ করে কুতুপালং ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে যায়।

সেখান থেকে অপহরণকারীরা ভিকটিমের পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। ভিকটিমের পিতা মুক্তিপণ দিতে না চাইলে অপহরণকারীরা ভিকটিম আরাকান (৬)কে গলা পর্যন্ত মাটিতে পুতে রেখে তার ভিডিও ধারণ করে। পরে অপহরণকারীরা ঐ ধারণকৃত ভিডিও শিশু আরাকান এর পিতার ইমুতে পাঠায়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে রোহিঙ্গা শিশু আরাকান অপহরণের ঘটনায় উখিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়। যার মামলা নং ৩৮ (০১)২৫।

রোহিঙ্গা শিশুকে মাটির গর্তে পুঁতে রেখে মুক্তিপণ দাবি
রোহিঙ্গা শিশুকে মাটির গর্তে পুঁতে রেখে মুক্তিপণ দাবি

ঘটনায় মামলার খবর জানা জানি হওয়ার পর ও পুলিশের তৎপরতায় বাড়ায় অপহরণকারীরা অপহৃত মোহাম্মদ আরাকান কে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া কুতুপালং বাজারের পাশে এম এস এফ হাসপাতালের সামনে হাত-পা বাধা অবস্থায় ফেলে রেখে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

গত ১৭ জানুয়ারি সকালে স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা অপহৃত শিশু আরাকানকে হাত-পা বাধা অবস্থায় রাস্তার পাশে দেখতে পেয়ে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। পরে তার পিতা আব্দুর রহমান, মা আনোয়ারা বেগম এবং ব্লক মাঝি এনায়েত উল্লাহ শিশুটিকে চিহ্নিত করে। স্থানীয়দের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে ক্যাম্পে ফিরে যান।

শিশু আরাকান অপহরণকারীরা প্রথমে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও পরে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে বিকাশে। উক্ত ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি করে আসছিলো শিশুটির পিতা মাতা।

শেয়ার করুন

রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারী দুইজন গ্রেপ্তার

সময় ১০:৫৭:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

কক্সবাজারের উখিয়া ১৯ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে ৬ বছর বয়সী চাঞ্চল্যকর শিশু মোহাম্মদ আরাকানকে অপহরণ পরবর্তী ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়া কুতুপালং রেজিস্ট্রার ক্যাম্পের এফ ব্লকে অভিযান চালিয়ে নুর ইসলাম (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।

একইদিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কুতুপালং রেজিস্ট্রার ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনা করে ঐ ক্যাম্পের একই ব্লকের বাসিন্দা সালাম (২০) কে গ্রেপ্তার করা হয়।

আটক অপহরণকারী চক্রের অন্যতম সদস্য নুর ইসলাম (২২) উখিয়া কুতুপালং রেজিস্টার ক্যাম্পের বি-এফ ব্লকের বাসিন্দা মৃত নুরুল হক এর ছেলে। তার এমআরসি নং-২৩৮২৩ এবং সালাম (২০) ঐ ক্যাম্পের একই ব্লকের বাসিন্দা।

রোহিঙ্গা শিশু আরাকান অপহরণের ঘটনায় জড়িত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন।

তিনি জানান, রোহিঙ্গা শিশু আরাকান কে অপহরণের সাথে সরাসরি জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা শিশুটিকে অপহরণের সাড়ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারী দুইজন গ্রেপ্তার
রোহিঙ্গা শিশু আরকান অপহরণকারী দুইজন গ্রেপ্তার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ৮ এপিবিএন এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবদুল হাদী জানান, কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্প পুলিশ ও উখিয়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় অপহরণে সরাসরি জড়িত দুই অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে তারা শিশু অপহরণের পর ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের কথা স্বীকার করেছে।

থানা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বিকেল অনুমান সাড়ে চারটার সময় শিশু আরাকানকে ছোলা মুড়ি খাওয়ানোর কথা বলে সিএনজিতে তুলে নিয়ে আটক নুর ইসলাম ও পলাতক আসামী মো. সাদেক শিশু আরাকান (৬) কে ১৯-নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহরণ করে কুতুপালং ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে যায়।

সেখান থেকে অপহরণকারীরা ভিকটিমের পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। ভিকটিমের পিতা মুক্তিপণ দিতে না চাইলে অপহরণকারীরা ভিকটিম আরাকান (৬)কে গলা পর্যন্ত মাটিতে পুতে রেখে তার ভিডিও ধারণ করে। পরে অপহরণকারীরা ঐ ধারণকৃত ভিডিও শিশু আরাকান এর পিতার ইমুতে পাঠায়। পরবর্তীতে উক্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে রোহিঙ্গা শিশু আরাকান অপহরণের ঘটনায় উখিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়। যার মামলা নং ৩৮ (০১)২৫।

রোহিঙ্গা শিশুকে মাটির গর্তে পুঁতে রেখে মুক্তিপণ দাবি
রোহিঙ্গা শিশুকে মাটির গর্তে পুঁতে রেখে মুক্তিপণ দাবি

ঘটনায় মামলার খবর জানা জানি হওয়ার পর ও পুলিশের তৎপরতায় বাড়ায় অপহরণকারীরা অপহৃত মোহাম্মদ আরাকান কে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া কুতুপালং বাজারের পাশে এম এস এফ হাসপাতালের সামনে হাত-পা বাধা অবস্থায় ফেলে রেখে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।

গত ১৭ জানুয়ারি সকালে স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা অপহৃত শিশু আরাকানকে হাত-পা বাধা অবস্থায় রাস্তার পাশে দেখতে পেয়ে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। পরে তার পিতা আব্দুর রহমান, মা আনোয়ারা বেগম এবং ব্লক মাঝি এনায়েত উল্লাহ শিশুটিকে চিহ্নিত করে। স্থানীয়দের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে ক্যাম্পে ফিরে যান।

শিশু আরাকান অপহরণকারীরা প্রথমে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলেও পরে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে বিকাশে। উক্ত ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি করে আসছিলো শিশুটির পিতা মাতা।