রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফরিদের পারিবারিক ইয়াবা সিন্ডিকেট, থামাবে কে?
- সময় ০৯:২৭:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
- / 180
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর দিন মজুর মৃত সৈয়দ মোস্তফার ছেলে মাদক সম্রাট খ্যাত ফরিদুল আলম (প্রকাশ চিয়ক ফরিদ) (৪২) রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক পারিবারিক মাদক সিন্ডিকেট মাদকের টাকায় বালুখালীতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন।
মাদক সম্রাট খ্যাত ফরিদ তার বাবার তিন পুত্রের মধ্যে একদম ছোট ছেলে ফরিদ। তার মেজু ভাই ইয়াবা গডফাদার জাফর আলম ২০২১ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি র্যাবের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হন। ইয়াবা সিন্ডিকেট আরও শক্ত করতে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার বড় ভাই নুরুল আলমকে ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেন বলে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন স্থানীয়রা।
সুত্রে জানা যায়, চিহ্নিত এই মাদক কারবারি দীর্ঘদিন ধরে মায়ানমার সীমান্ত থেকে মাদক এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় ভাবে পাচার করছেন পারিবারিক মাদক সিন্ডিকেট। তার মধ্যে ফরিদ অনেকের কাছে মাদকের এজেন্ট (শীর্ষ ইয়ার ডিলার) নামে ভালোই পরিচিত। এই ফরিদের রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক চোরাকারবারের জন্য ৪০/৪৫জনের ক্যাম্পের বাহিরে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। বালুখালীর স্থানীয় এক যুবক জানান, সরকারের পটপরিবর্তনের পরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে ফরিদ বাহিনীরা।
এখন আর তাদের মাদক সিন্ডিকেট রুখে দিবে কে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব কাটিয়ে চালাচ্ছেন রোহিঙ্গা বাজার নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সীমান্ত পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গা শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার নবী হোসেনের সাথে ও রয়েছে সম্পৃক্ততা নবী হোসেন কারাগারে হলেও তার আরেক ভাই হাফেজ এর নেতৃত্বে চালিয়ে যাচ্ছেন ফরিদ সিন্ডিকেট।
চিয়ক ফরিদ মাদকের টাকায় রাজত্ব কায়েম করছে বালুখালী তথা পালংখালি পুরো ইউনিয়ন। বিগত সরকারের আমলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজল কাদের চৌধুরী ভুট্টোর বড় ভাই গোলাম কাদেরর সাথে বাজারের ইজারাকে পুঁজি করে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যান। বর্তমানে তার নিজ এলাকাস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৫শতাধিক অস্ত্রধারী তার বডিগার্ড হিসেবে থাকেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ফরিদ মোটা অংকের টাকা বাজেট করে বাজার কমিটির সভাপতি আলমগীরকে রাতের আঁধারে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে তার একটা পা চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দেন ফরিদ বাহিনী। সে ঘটনায় আলমগীরের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় একটি মামলাও দায়ের করেছেন। উক্ত মামলা থেকে কালো টাকার জোরে অল্প সময়ে জেল থেকে বের হয়ে যান ইয়াবা ও মাদক সম্রাট ফরিদ।
তার সম্পদের হিসাব করে দেখা যায় শতকোটি টাকার উপরে নিজ এলাকায় বালুখালি ১ নং ওয়ার্ডে ফরিদের রয়েছে তিনটা আলিশান বাড়ি, কক্সবাজারের কলাতলীতে রয়েছে আলীশান ফ্ল্যাট যা দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন রফিকুল ইসলাম রকি। এছাড়াও কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পাশে রয়েছে আরও একটা বিল্ডিং চট্টগ্রামের হালি শহরে আছে কোটি টাকা দামের বিল্ডিং যেখানে বসবাস করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী।
বালুখালি কাস্টমস টিভি টাওয়ার সংলগ্ন আলু গোলার মাঠে রয়েছে ১৫ বিগা খতিয়ান ভুক্ত জমি বান্দরবনে হিলটেকস রয়েছে একশত বিগার একটি বাগানের ফ্লট এছাড়া কৌশলে স্ত্রী পুত্র সহ শ্বশুর বাড়ির অনেকের নামে বেনামে সম্পদ ক্রয় করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা তার ব্যবহারের জন্য মোটরসাইকেল সহ রয়েছে একটি দামি ল্যানক্রোজার যার ক্রয় মূল্য ৩০ লক্ষ টাকার উপরে।
ইতিপূর্বে তাকে র্যাব, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত একাধিক সংস্থা তাকে আটকও করেছিলো। তার বিরুদ্ধে রয়েছে জিআর- ৩৯০/২০২২ইং (উখিয়া), জিআর- ২৮৪/২০১৬ইং (কক্সবাজার সদর), জিআর- ১০২০/২০২২ইং (টেকনাফ)সহ একাধিক মাদক মামলা থেকে শুরু করে হত্যা চেষ্টা মারামারি ইত্যাদি ডজন খানেক মামলা।
তাদের পারিবারিক মাদক সিন্ডিকেট ও রোহিঙ্গা কেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্হানীয় সচেতন মহলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফরিদ ও তার ভাই মেম্বার বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন, বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাদের দলীয় কোনো পদ পদবী নেই, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হলে বালুখালী এলাকায় শান্তি ভয়ে আসবে মনে করেন সচেতন মহল।
স্হানীয়রা আর বলেন একসময় তাদের ছিল একটা ভাতের হোটেল। অভিযুক্ত ফরিদের সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসাইন জানান, মাদক কারবারি বা অপরাধী যেই হউক সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।