ঢাকা ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রায়পুরায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কৃষকদের আকুতি

শফিকুল ইসলাম, রায়পুরা (নরসিংদী)
  • সময় ১০:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 24

রায়পুরাতে ইটভাটা

ইটভাটার দৌরাত্ম্যর সঙ্গে পরিবেশের বিপর্যয় অনেটা সমার্থক। দেশে ইটভাটা গড়ে তোলার নীতিমালা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয় না। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর গ্রামে এম জে বি ব্রিকস ফিল্ড নামক পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে ইটভাটার মালিক তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ফসলি জমিতে গড়ে তুলেছে দীর্ঘ বছর যাবৎ চলছে জমজমাট ব্যবসা। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ। আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে খাদ্য ঘাটতির।

এই ইটভাটা বন্ধ ও উচ্ছেদের দাবিতে আকুতি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম, হাবিবুর, নুরুল ইসলামসহ নাম প্রকাশ আরো কৃষক

তারা বলেছেন, এই ইটভাটার কারণে দিন দিন আমাদের ফসলের ঘাটতি হচ্ছে। প্রতি বছরই মৌসুমে ধান চাষ করে ভালো ফসল হয় না। কারণ পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে ইটভাটার কারণে দিন দিন পুড়ছে কৃষকদের ফসলি জমি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমির উপর স্থাপন করা হয়েছে এই ইটভাটা। এ ভাটার মালিক হাজী জসিম উদ্দিন একজন প্রভাবশালী। কেউও তার ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

কৃষকরা আরো জানান, স্থানীয় প্রশাসন এই ইটভাটা বন্ধ ও উচ্ছেদ করার জন্য কয়েকবার এলেও অদৃশ্য অপশক্তির কারণে তা আর বন্ধ ও উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, ইটভাটার আগুনের তাপ ও ধোঁয়ার কালো ও লালচে-ধূসর রং ধারণে পুড়ে গেছে জমির চাষ করা ফসলি। এই ইটভাটায় আরও দেখা যায়, পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুরাও ইট তৈরির কাজে ব্যস্ত।

এ বিষয়ে ইটভাটার মালিক হাজী জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, যাবতীয় সবকিছু ম্যানেজ করেই দীর্ঘ বছর যাবৎ ব্যবসা করছি। বহুজন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে, কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেনি। এই ইটভাটার অনুমোদন ও ছাড়পত্র আছে বলে মৌখিকভাবে দাবি করে। তা প্রতিনিধি দেখতে চাইলে তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। সাংবাদিককে উল্টো প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনে ইটভাটার ছাড়পত্র ও অনুমোদন দেন কিনা?’

এই বিষয়ে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃকামরুল ইসলাম সরকার বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন, রায়পুরায় এম জে বি ব্রিকস ফিল্ড নামে ইটভাটার ছাড়পত্র ও অনুমোদন আছে কিনা আমার জানা নাই। তা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ইটভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন (২০০১)ধারা অনুসারে তিন(০৩) কিলোমিটার ভিতরে ইটভাটা স্থাপন করা যায় না।সরকারের ইটভাটা স্থাপনের আইন ২০১৩ অনুযায়ী নিষিদ্ধ এলাকা (বিশেষ আবাসিক ও সংরক্ষিত বাণিজ্যিক এলাকা,পরিবেশ গত সংকটাপন্ন এলাকায় (কৃষি, বন ও বাগান)কে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু রায়পুরা উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর নগর গ্রামে গড়ে উঠেছে হাজী মোঃ জসিম উদ্দিনের ইটভাটায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে দীর্ঘ বছর যাবৎ চলছে জমজমাট ব্যবসা।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকদের দাবি এই ইটভাটা বন্ধ ও উচ্ছেদে আমরা আশা করব দ্রুত কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন।

শেয়ার করুন

রায়পুরায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কৃষকদের আকুতি

সময় ১০:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

ইটভাটার দৌরাত্ম্যর সঙ্গে পরিবেশের বিপর্যয় অনেটা সমার্থক। দেশে ইটভাটা গড়ে তোলার নীতিমালা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয় না। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর গ্রামে এম জে বি ব্রিকস ফিল্ড নামক পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে ইটভাটার মালিক তার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ফসলি জমিতে গড়ে তুলেছে দীর্ঘ বছর যাবৎ চলছে জমজমাট ব্যবসা। এতে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমাণ। আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে খাদ্য ঘাটতির।

এই ইটভাটা বন্ধ ও উচ্ছেদের দাবিতে আকুতি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম, হাবিবুর, নুরুল ইসলামসহ নাম প্রকাশ আরো কৃষক

তারা বলেছেন, এই ইটভাটার কারণে দিন দিন আমাদের ফসলের ঘাটতি হচ্ছে। প্রতি বছরই মৌসুমে ধান চাষ করে ভালো ফসল হয় না। কারণ পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে ইটভাটার কারণে দিন দিন পুড়ছে কৃষকদের ফসলি জমি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই ফসলি জমির উপর স্থাপন করা হয়েছে এই ইটভাটা। এ ভাটার মালিক হাজী জসিম উদ্দিন একজন প্রভাবশালী। কেউও তার ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

কৃষকরা আরো জানান, স্থানীয় প্রশাসন এই ইটভাটা বন্ধ ও উচ্ছেদ করার জন্য কয়েকবার এলেও অদৃশ্য অপশক্তির কারণে তা আর বন্ধ ও উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যে, ইটভাটার আগুনের তাপ ও ধোঁয়ার কালো ও লালচে-ধূসর রং ধারণে পুড়ে গেছে জমির চাষ করা ফসলি। এই ইটভাটায় আরও দেখা যায়, পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুরাও ইট তৈরির কাজে ব্যস্ত।

এ বিষয়ে ইটভাটার মালিক হাজী জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, যাবতীয় সবকিছু ম্যানেজ করেই দীর্ঘ বছর যাবৎ ব্যবসা করছি। বহুজন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে, কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেনি। এই ইটভাটার অনুমোদন ও ছাড়পত্র আছে বলে মৌখিকভাবে দাবি করে। তা প্রতিনিধি দেখতে চাইলে তা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। সাংবাদিককে উল্টো প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনে ইটভাটার ছাড়পত্র ও অনুমোদন দেন কিনা?’

এই বিষয়ে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃকামরুল ইসলাম সরকার বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন, রায়পুরায় এম জে বি ব্রিকস ফিল্ড নামে ইটভাটার ছাড়পত্র ও অনুমোদন আছে কিনা আমার জানা নাই। তা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, ইট প্রস্তুত ও ইটভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন (২০০১)ধারা অনুসারে তিন(০৩) কিলোমিটার ভিতরে ইটভাটা স্থাপন করা যায় না।সরকারের ইটভাটা স্থাপনের আইন ২০১৩ অনুযায়ী নিষিদ্ধ এলাকা (বিশেষ আবাসিক ও সংরক্ষিত বাণিজ্যিক এলাকা,পরিবেশ গত সংকটাপন্ন এলাকায় (কৃষি, বন ও বাগান)কে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু রায়পুরা উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর নগর গ্রামে গড়ে উঠেছে হাজী মোঃ জসিম উদ্দিনের ইটভাটায় পরিবেশ আইন লঙ্ঘনে দীর্ঘ বছর যাবৎ চলছে জমজমাট ব্যবসা।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষকদের দাবি এই ইটভাটা বন্ধ ও উচ্ছেদে আমরা আশা করব দ্রুত কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন।