ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন
রাজশাহীতে সর্বস্তরের জনগণের বিক্ষোভ মিছিল

- সময় ০৪:৪৫:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
- / 2
ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণের উপর ইসরায়েলের অব্যাহত বর্বর আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে এবং গাজারও রাফার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১১ টায় ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভিন্ন বিভাগ ও ইনিস্টিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সালেহ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান, বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মাসুদুল হাসান খান মুক্তাসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বলেন, অনতিবিলম্বে মার্কিন মদদে গাজায় চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানাতে হবে এবং বৈশ্বিক পরিমন্ডলে ফিলিস্তিনের পক্ষে জনমত গঠন ও কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে, আমেরিকান হাই কমিশনারকে তলব করে গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা করার জবাবদিহি চাইতে হবে, কালবিলম্ব না করে পাসপোর্টে পুনরায় “এক্সেপ্ট ইজরাইল” কথাটি ফিরিয়ে আনতে হবে এবং ইজরাইলি পণ্যগুলোকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কট করতে হবে এবং তাদের দোসরদের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সালেহ হাসান নকীব, গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বর্বর আগ্রাসন ও এই হত্যাযজ্ঞ দেখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বসে থাকতে পারে না। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাজ করতে পারে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের এই সমাবেশ।
এদিকে, গাজায় চলমান মানবতার এই চরম বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। সোমবার এক বিবৃতিতে “গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা” কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রুয়েট কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজায়ও রাফায় চলমান গণহত্যা বন্ধে বিশ্বের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের জাগরণ এখন সময়ের দাবি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ব যখন উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও মানবকল্যাণে অগ্রসর হচ্ছে, তখন একটিমাত্র ভূখণ্ডে অবরুদ্ধ লক্ষ লক্ষ মানুষ-বিশেষ করে নারী ও শিশু-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এটি কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়; এটি মানবিকতার প্রশ্ন।
বিবৃতিতে রুয়েট কর্তৃপক্ষ তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো- গাজায় চলমান জেনোসাইড ও আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। নারী ও শিশুদের জীবনরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মানবতা, ন্যায়বিচার ও শান্তির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করবে। আমরা বিশ্বাস করি, গাজা ও পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জীবনের সমান মূল্য রয়েছে। গাজায় হত্যা বন্ধ হোক। মানবতা জয়ী হোক। গ্লোবাল স্ট্রাইকে আমরা একসাথে।
ফিলিস্তিনে মুসল্লীদের ওপর নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজশাহীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সোমবার সকাল থেকে নগরজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহনে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
সকালে রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজে সংহতি সমাবেশ করা হয়। এসব কর্মসূচীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী ছাড়াও মুসুল্লিরা অংশ নেন, সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।,গ্লোবাল স্ট্রাইকে বিকেলে লও রাজশাহী জুড়ে নানা কর্ম লসূচী রয়েছে।
গণহত্যার দায়ে ইসরায়েলকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়ে তারা আরও বলেন, আমেরিকার মতো যেসব দেশ এমন গণহত্যা দেখেও নিশ্চুপ, তাদের বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলো নীরবে গণহত্যার সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। অবিলম্বে মুসলিম দেশগুলোকে এককাতারে এসে এ গণহত্যার প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান তারা।