ঢাকা ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রমজানে তেল, মসুর ডাল ও চিনি কেনার সিদ্ধান্ত

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • সময় ১২:০২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 22

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ

আগামী রমজান সামনে রেখে এক হাজার ১৯৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার নিত্যপণ্য সামগ্রী কেনার সিন্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল এবং ১৫ হাজার টন চিনি। এসব পণ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে মসুর ডাল, ভোজ্যতেল এবং চিনি কেনার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পৃথক তিন স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

মসুর ডাল ও চিনি
মসুর ডাল ও চিনি

এছাড়া সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৬২ টাকা ৯৫ পয়সা করে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম অয়েল কেনা হবে। অর্থাৎ সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ১৮৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকার সয়াবিন তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েল থেকে ৩৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার পাম অয়েল কেনা হবে।

এছাড়া দুটি স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ১৫ হাজার টন চিনি কিনতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড থেকে প্রতি কেজি ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা দরে ১০ হাজার টন চিনি কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

সয়াবিন তেল
সয়াবিন তেল

বাকি ৫ হাজার টন চিনি কেনা হবে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি চিনি ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা দরে সরবরাহ করবে। ফলে এ ৫ হাজার টন চিনির জন্য ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

টিসিবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় এক লাখ ৪৪ হাজার টন চিনি কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ হাজার টন চিনি কেনার চুক্তি হয়েছে। এখন আরও ১৫ হাজার টন চিনি কেনার অনুমোদন মিললো।

জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টিসিবির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২ লাখ ৮৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৯২ হাজার ৯৫০ টন মসুর ডাল কেনার চুক্তি করা হয়েছে।

নতুন করে আরও ১০ হাজার টন মসুর ডাল স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তার আলোকে গত ৯ ডিসেম্বর উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৩ ডিসেম্বর এবং বৈধতার মেয়াদ ধরা হয় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেওয়া দরপত্র মোতাবেক ইজি জেনারেল ট্রেডিং থেকে ৫ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরে ৯৯ টাকা ৪৮ পয়সা।

অপর দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নাবিল নাবা ফুডস প্রোডাক্টস ১০ হাজার টনের জন্য দরপত্র জমা দেয়। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম প্রস্তাব করে ৯৮ টাকা ৭৫ পয়সা। এছাড়া শবনাম ভেজিটেবল অয়েল ১০ হাজার টন মসুর ডালের জন্য দরপত্র জমা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে প্রস্তাব দেয়।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি জমা পড়া তিনটি দরপত্র পর্যালোচনা করে এবং তিনটি প্রস্তাবই রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে শবনাম ভেজিটেল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৫০ কেজির বস্তায় ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সুপারিশ করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। এখন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রতি কেজি ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে মোট ৯৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে এই মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে।

শেয়ার করুন

রমজানে তেল, মসুর ডাল ও চিনি কেনার সিদ্ধান্ত

সময় ১২:০২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫

আগামী রমজান সামনে রেখে এক হাজার ১৯৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার নিত্যপণ্য সামগ্রী কেনার সিন্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল এবং ১৫ হাজার টন চিনি। এসব পণ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্ডধারী নিম্ন আয়ের পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করা হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে মসুর ডাল, ভোজ্যতেল এবং চিনি কেনার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, পৃথক তিন স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

মসুর ডাল ও চিনি
মসুর ডাল ও চিনি

এছাড়া সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৭১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড থেকে প্রতি লিটার ১৬২ টাকা ৯৫ পয়সা করে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার পাম অয়েল কেনা হবে। অর্থাৎ সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ১৮৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকার সয়াবিন তেল এবং শবনম ভেজিটেবল অয়েল থেকে ৩৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকার পাম অয়েল কেনা হবে।

এছাড়া দুটি স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ১৫ হাজার টন চিনি কিনতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড থেকে প্রতি কেজি ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা দরে ১০ হাজার টন চিনি কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

সয়াবিন তেল
সয়াবিন তেল

বাকি ৫ হাজার টন চিনি কেনা হবে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি চিনি ১১৭ টাকা ৯০ পয়সা দরে সরবরাহ করবে। ফলে এ ৫ হাজার টন চিনির জন্য ব্যয় হবে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

টিসিবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় এক লাখ ৪৪ হাজার টন চিনি কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ হাজার টন চিনি কেনার চুক্তি হয়েছে। এখন আরও ১৫ হাজার টন চিনি কেনার অনুমোদন মিললো।

জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টিসিবির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় ২ লাখ ৮৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৯২ হাজার ৯৫০ টন মসুর ডাল কেনার চুক্তি করা হয়েছে।

নতুন করে আরও ১০ হাজার টন মসুর ডাল স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তার আলোকে গত ৯ ডিসেম্বর উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৩ ডিসেম্বর এবং বৈধতার মেয়াদ ধরা হয় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দেওয়া দরপত্র মোতাবেক ইজি জেনারেল ট্রেডিং থেকে ৫ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরে ৯৯ টাকা ৪৮ পয়সা।

অপর দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নাবিল নাবা ফুডস প্রোডাক্টস ১০ হাজার টনের জন্য দরপত্র জমা দেয়। এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম প্রস্তাব করে ৯৮ টাকা ৭৫ পয়সা। এছাড়া শবনাম ভেজিটেবল অয়েল ১০ হাজার টন মসুর ডালের জন্য দরপত্র জমা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে প্রস্তাব দেয়।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। মূল্যায়ন কমিটি জমা পড়া তিনটি দরপত্র পর্যালোচনা করে এবং তিনটি প্রস্তাবই রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে শবনাম ভেজিটেল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে ৫০ কেজির বস্তায় ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সুপারিশ করেছে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। এখন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি প্রতি কেজি ৯৭ টাকা ৯১ পয়সা করে মোট ৯৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে এই মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে।