‘রমজানে দেশে পণ্যের ক্রাইসিস থাকবে না’
- সময় ০৩:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 21
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেছেন, ‘রমজানে দেশে কোনও পণ্যের ক্রাইসিস (সঙ্কট) থাকবে না। এখন কথা হচ্ছে, ক্রাইসিস না থাকলেও দ্রব্যমূল্য বাড়বে কি না? আমাদের যে শক্তি আছে, সেই শক্তি দিয়ে আমরা ভোক্তাদের কাছাকাছি মূল্য নেওয়ার জন্য সবসময় সচেষ্ট থাকি।’
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাজশাহী বিভাগে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যক্রম শক্তিশালী করার বিষয়ে বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলীম আখতার বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা দুটি বিষয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। একটি পেঁয়াজ, আরেকটি আলু। আমরা সাধারণভাবে দ্রব্যমূলাটা পেয়ে থাকি কৃষি বিপণন অধিদফতর থেকে। সেখান থেকে আমরা যেটা পেয়েছি, ২৭ টাকার মধ্যে কোল্ডস্টোরেজগুলোতে (হিমাগার) আলু রাখা হয়েছিল। এর সঙ্গে কোল্ডস্টোজের ভাড়া, পরিবহন ইত্যাদি মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায় বিক্রি করলে এটা যৌক্তিক মূল্য বলা হচ্ছে। তারপরও এটাকে আরও কিছু লাভ ধরে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা করে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদফতর। সেই অনুযায়ী আমরা ওই মূল্যে বিক্রির বিষয়ে আন্তরিক ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘রংপুরের ময়নাকুটির কোল্ডস্টোরেজ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। রাজশাহীতে পবার ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ৪৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। রাজশাহীতে ৪০টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। রাজশাহীর ৯টা উপজেলার মধ্যে একটি মাত্র উপজেলা এমন দামে আলু বিক্রি করতে পারলে, এটাকে আমরা অন্য উপজেলাগুলোর সঙ্গে এক কাতারে বিবেচনা করতে পারি না।’
ভোক্তা অধিকারের এই মহাপরিচালক বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এখনও পুরানো সংস্কৃতিতা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়নি। গত মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদে (স্থলবন্দর) গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখেছি পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধিতে যে আমদানি হচ্ছে তারমধ্যে ওয়ান থার্ড (তিন ভাগের এক ভাগ) পেঁয়াজ নষ্ট। কিন্তু আমরা তখন পেঁয়াজের ক্রাইসিস (সঙ্কট) মেইনটেইন (রক্ষণাবেক্ষণ) করার জন্য এই পেঁয়াজটাই কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এই কারণে পেঁয়াজ যে পরিমাণের আমদানি করা হয়েছিল, পরে মূল্যের ক্ষেত্রে ১০০-এর মধ্যে ৩০ ভাগ নষ্টের পরও বাকিটা ১০০ করে ধরে মূল্য হয়েছে। ফলে মূল্য কোনোভাবে কমানো যায়নি। এই পেঁয়াজগুলোর দুইটা অংশের মধ্যে একটা অংশ প্রায় ভেজা আসত। এগুলো আমাদের জনগণের জন্য কোনোভাবেই পজিটিভ না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য দ্রব্যের ক্ষেত্রে দাম বাড়তির দিকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রমজানকে সামনে রেখে ছোলা, চিনি, ভোজ্য তেল, খেজুরের ডিউটি অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কিছু কিছু পণ্যে প্রায় জিরোর কাছাকাছি ধরেছে। অনেকেই এলসি খুলেছেন, আমদানি করছেন। রমজানে কোনও পণ্যের ক্রাইসিস (সঙ্কট) থাকবে না। কিছু জিনিস আছে আমার এখতিয়ারের বাইরে। সবকিছু যদি সঠিকভাবে চলে আমরা আশা করছি রমজানে ক্রাইসিসটা হবে না।’ এ ছাড়া মাংসের মূল্য যৌক্তিক মূল্যের বাইরে না যায় সেই বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সদস্যদের সজাগ থাকতে বলেন।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জামিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন- রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খোন্দকার আজিম আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, ক্যাবের রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন।