০৯:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে কারণে সমকামীদের ‘হ্যাঁ’ সৌদি আরবের

ক্রীড়া ডেস্ক
  • সময় ০৪:০৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 92

সৌদি

কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপের সময়ও এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় শুধু ‘ফ্যানজোন’গুলোতে বিদেশি দর্শকের মদ্যপানের ব্যবস্থা রাখে কাতার। এবার সৌদি আরবকে ঘিরেও শুরু হয়েছে একই আলোচনা।

সৌদি আরব ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজন স্বত্ত্ব পাওয়ার পর থেকেই গুঞ্জন ছিল, সেখানে বিশ্বকাপের সময় মদ্যপান নিষিদ্ধ থাকবে। থাকবেই-না কেন, এই দেশটিতে ১৯৫২ সালের পর থেকেই যে মদ পান নিষিদ্ধ। তবে অনেকে এ-ও ধারণা করেছিলেন যে, বিশ্বকাপের জন্য নিয়ম শিথিল করতে পারে সৌদি আরব

কিন্তু গতকাল ইংল্যান্ডে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন বান্দার আল সৌদ জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে সৌদি আরব সে দেশের চলমান রীতিতেই অটল থাকবে। দর্শকদের জন্য মদ পান নিষিদ্ধ থাকবে। স্টেডিয়ামে তো নয়ই, হোটেলসহ কোথাওই মদ বিক্রি করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রিন্স খালিদ।

ইংল্যান্ডে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত খালিদ আরও বলেছেন, এই টুর্নামেন্ট দেখতে যাঁরা সৌদি আরবে যাবেন, তাঁদের দেশটির সংস্কৃতিকে সম্মান করা উচিত।

ব্রিটিশ রেডিও স্টেশন এলবিসি-র সঙ্গে আলাপে গতকাল রাষ্ট্রদূত খালিদ বলেছেন, ‘এই মুহূর্তের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী (বিশ্বকাপে) মদ নিষিদ্ধ। মদ ছাড়াও অনেকভাবেই মজা করা যায়। এটা শতভাগ প্রয়োজনীয় নয়, আপনি পান করতে চাইলে সেটা (সৌদি ছেড়ে) চলে যাওয়ার পর করতে পারবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের মদের অনুমোদন নেই।’

সমকামীদের ‘হ্যাঁ’
সমকামীদের ‘হ্যাঁ’

স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে না হলেও হোটেলে নিজের মতো করে মদ পান করতে পারবেন কি না দর্শক – এ নিয়ে প্রশ্নে সৌদি আরবের আবহাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে মজা করেছেন রাষ্ট্রদূত খালি। সৌদি আরবের শুকনো আবহাওয়ার মতো দর্শকের গলাও মদ ছাড়া শুকনো থাকবে বোঝাতে বলেছেন, ‘না, কোনো অ্যালকোহলই থাকবে না। ব্যাপারটা অনেকটাই আমাদের দেশের আবহাওয়ার মতো – ড্রাই দেশ।’

নিজেদের সংস্কৃতি মেনে সবাইকে সৌদি আরবে স্বাগত জানিয়ে প্রিন্স খালিদ বলেন, ‘সবারই নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। আমরা নিজেদের সাংস্কৃতিক সীমার মধ্যে থেকে সবাইকে স্বাগত জানাতে চাই। কারও জন্য আমরা নিজেদের সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই না।’

সৌদি আরবে মদ যেমন নিষিদ্ধ, তেমনি সমকামীতাও নিষিদ্ধ। ট্রান্সজেন্ডারদের সৌদি আরব স্বীকৃতিই দেয় না। সেক্ষেত্রে সমকামী কিংবা ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য সৌদি আরবে কী ব্যবস্থা থাকবে, তাঁদের একইভাবে স্বাগত জানানো হবে? এমন প্রশ্নে সৌদি আরবের এই রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন তাঁর দেশ সবাইকে স্বাগত জানাবে, ‘সৌদিতে আমরা সবাইকে স্বাগত জানাব। এটি সৌদির ইভেন্ট নয়, এটি একটি বৈশ্বিক ইভেন্ট। বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সবাইকে স্বাগত জানাব যারা আসতে চান।’

গেল বিশ্বকাপেও কাতারে মদ ও সমকামীদের যাওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে স্টেডিয়ামে কিছু নির্দিষ্ট এলাকা ও হোটেলে দর্শকদের মদ পানের সুযোগ রেখে নিয়ম জারি করা হয়েছিল।

বর্তমানে সৌদি আরবের রিয়াদে কূটনীতিকদের জন্য একটি মদের দোকান রয়েছে, যেটি গত বছর খোলা হয়েছিল। এই দোকান থেকে শুধুমাত্র কূটনীতিকরা মদ পান করতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের সাথে থাকতে হবে পরিচয়পত্র।

অবশ্য সৌদি আরবের বিশ্বকাপ আয়োজনে এখনো ৯ বছর বাকি। বিশ্বকাপ আসতে আসতে কাতারের মতো সিদ্ধান্তে বদল আসে কি না, সেটি দেখার ব্যাপার হবে।

শেয়ার করুন

যে কারণে সমকামীদের ‘হ্যাঁ’ সৌদি আরবের

সময় ০৪:০৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপের সময়ও এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় শুধু ‘ফ্যানজোন’গুলোতে বিদেশি দর্শকের মদ্যপানের ব্যবস্থা রাখে কাতার। এবার সৌদি আরবকে ঘিরেও শুরু হয়েছে একই আলোচনা।

সৌদি আরব ২০৩৪ বিশ্বকাপের আয়োজন স্বত্ত্ব পাওয়ার পর থেকেই গুঞ্জন ছিল, সেখানে বিশ্বকাপের সময় মদ্যপান নিষিদ্ধ থাকবে। থাকবেই-না কেন, এই দেশটিতে ১৯৫২ সালের পর থেকেই যে মদ পান নিষিদ্ধ। তবে অনেকে এ-ও ধারণা করেছিলেন যে, বিশ্বকাপের জন্য নিয়ম শিথিল করতে পারে সৌদি আরব

কিন্তু গতকাল ইংল্যান্ডে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত প্রিন্স খালিদ বিন বান্দার আল সৌদ জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে সৌদি আরব সে দেশের চলমান রীতিতেই অটল থাকবে। দর্শকদের জন্য মদ পান নিষিদ্ধ থাকবে। স্টেডিয়ামে তো নয়ই, হোটেলসহ কোথাওই মদ বিক্রি করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রিন্স খালিদ।

ইংল্যান্ডে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত খালিদ আরও বলেছেন, এই টুর্নামেন্ট দেখতে যাঁরা সৌদি আরবে যাবেন, তাঁদের দেশটির সংস্কৃতিকে সম্মান করা উচিত।

ব্রিটিশ রেডিও স্টেশন এলবিসি-র সঙ্গে আলাপে গতকাল রাষ্ট্রদূত খালিদ বলেছেন, ‘এই মুহূর্তের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী (বিশ্বকাপে) মদ নিষিদ্ধ। মদ ছাড়াও অনেকভাবেই মজা করা যায়। এটা শতভাগ প্রয়োজনীয় নয়, আপনি পান করতে চাইলে সেটা (সৌদি ছেড়ে) চলে যাওয়ার পর করতে পারবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের মদের অনুমোদন নেই।’

সমকামীদের ‘হ্যাঁ’
সমকামীদের ‘হ্যাঁ’

স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে না হলেও হোটেলে নিজের মতো করে মদ পান করতে পারবেন কি না দর্শক – এ নিয়ে প্রশ্নে সৌদি আরবের আবহাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে মজা করেছেন রাষ্ট্রদূত খালি। সৌদি আরবের শুকনো আবহাওয়ার মতো দর্শকের গলাও মদ ছাড়া শুকনো থাকবে বোঝাতে বলেছেন, ‘না, কোনো অ্যালকোহলই থাকবে না। ব্যাপারটা অনেকটাই আমাদের দেশের আবহাওয়ার মতো – ড্রাই দেশ।’

নিজেদের সংস্কৃতি মেনে সবাইকে সৌদি আরবে স্বাগত জানিয়ে প্রিন্স খালিদ বলেন, ‘সবারই নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। আমরা নিজেদের সাংস্কৃতিক সীমার মধ্যে থেকে সবাইকে স্বাগত জানাতে চাই। কারও জন্য আমরা নিজেদের সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই না।’

সৌদি আরবে মদ যেমন নিষিদ্ধ, তেমনি সমকামীতাও নিষিদ্ধ। ট্রান্সজেন্ডারদের সৌদি আরব স্বীকৃতিই দেয় না। সেক্ষেত্রে সমকামী কিংবা ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য সৌদি আরবে কী ব্যবস্থা থাকবে, তাঁদের একইভাবে স্বাগত জানানো হবে? এমন প্রশ্নে সৌদি আরবের এই রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন তাঁর দেশ সবাইকে স্বাগত জানাবে, ‘সৌদিতে আমরা সবাইকে স্বাগত জানাব। এটি সৌদির ইভেন্ট নয়, এটি একটি বৈশ্বিক ইভেন্ট। বৃহত্তর স্বার্থে আমরা সবাইকে স্বাগত জানাব যারা আসতে চান।’

গেল বিশ্বকাপেও কাতারে মদ ও সমকামীদের যাওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে স্টেডিয়ামে কিছু নির্দিষ্ট এলাকা ও হোটেলে দর্শকদের মদ পানের সুযোগ রেখে নিয়ম জারি করা হয়েছিল।

বর্তমানে সৌদি আরবের রিয়াদে কূটনীতিকদের জন্য একটি মদের দোকান রয়েছে, যেটি গত বছর খোলা হয়েছিল। এই দোকান থেকে শুধুমাত্র কূটনীতিকরা মদ পান করতে পারবেন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের সাথে থাকতে হবে পরিচয়পত্র।

অবশ্য সৌদি আরবের বিশ্বকাপ আয়োজনে এখনো ৯ বছর বাকি। বিশ্বকাপ আসতে আসতে কাতারের মতো সিদ্ধান্তে বদল আসে কি না, সেটি দেখার ব্যাপার হবে।