যুদ্ধক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তানের মিলন চায় বাংলাদেশ!
- সময় ০৯:০৬:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 49
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ মানেই অন্যরকম উন্মাদনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই প্রতিযোগিতা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে যখন অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতায়, তখন প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গেও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উল্টোদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সম্পর্ক তখন নতুন উচ্চতার দ্বারপ্রান্তে। নতুন করে খবর এলো, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বৈরিতা মিটাতে যুদ্ধের ময়দানেও দু’দেশের মিলন চায় বাংলাদেশ।
বলা হচ্ছিল, ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে। টুর্নামেন্টের ফরমেট এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। টুর্নামেন্টটি কীভাবে আয়োজন করা হবে, তা নিয়ে আইসিসির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনো আসেনি। তবে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্টটি আয়োজনে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) রাজি হয়েছে, যদিও এ বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা মেলেনি।
৫ ডিসেম্বর দুবাইয়ে আইসিসির বৈঠকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর আগেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিসিবি থেকে নতুন একটি প্রস্তাব আলোচনায় এসেছে। বিসিবি চাইছে, যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলে হয়, তবে ভারতের ম্যাচগুলো ঢাকায় আয়োজন করতে।
বিসিবির এক কর্মকর্তার বরাতে দেশের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বাংলাদেশের মাঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কিছু ম্যাচ আয়োজন দেশের ক্রিকেটের জন্য বড় সুযোগ হবে। কর্মকর্তার ভাষ্য মতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কয়েকটি ম্যাচ মিরপুরের মাঠে হলে তা দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে।
এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির ফোনে কথা হয়েছে। নাকভি বাংলাদেশের সমর্থন চেয়েছেন এবং ফারুক আহমেদ ভারতের ম্যাচ ঢাকায় আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও বিষয়টি নিয়ে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং ভারতের আরব আমিরাতে খেলার আগ্রহ বিবেচনায়, ভারতের ম্যাচগুলো বাংলাদেশে আয়োজনের সম্ভাবনা কম। বিসিবির এক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে ভারত বাংলাদেশে খেলতে রাজি হবে কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ আছে।
পিসিবি হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের ক্ষেত্রে দুটি শর্ত দিয়েছে। এক, আইসিসির রাজস্ব আয়ের একটি বড় অংশ পিসিবিকে দিতে হবে। দুই, ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতের বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে হাইব্রিড মডেলের শর্ত প্রযোজ্য হবে।
সবশেষে, ৫ ডিসেম্বর আইসিসির বৈঠকেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বিসিবি প্রস্তাব দিলেও ভারতের মতামত এবং পিসিবির অবস্থানই মূলত এই আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা মনে করেন, চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেও বাংলাদেশ যদি কোনোভাবে ভারতকে বাংলাদেশের মাটিতে খেলতে রাজি করাতে পারে, সেটি হবে বিসিবির জন্য অনন্য সফলতা। এ কাজটি করতে পারলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেমন ভাবমূর্তি উজ্জল করবে, ঠিক তেমনি আর্থিকভাবেও লাভবান হবে বাংলাদেশ। এখন ভারত-পাকিস্তানের মিলন কি ঘটাতে সক্ষম হবে কিনা বিসিবি। ক্রিকেটের যুদ্ধক্ষেত্র হলেও বাংলাদেশ যদি এই ম্যাচের আয়োজন করতে পারে, তাহলে বিসিবি চমৎকার খেলা দেখাতে পারবে।
উল্লেখ্য, ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি। আগের সংস্করণগুলির মত ৪টি দলের দুটি গ্রুপ, সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল থাকবে যেখানে প্রতি গ্রুপের প্রথম দুইটি দল সেমি-ফাইনালে উন্নীত হবে। সেক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড এক গ্রুপে এবং আরেক গ্রুপে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যাল্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আফগানিস্তান। স্বাগতিক দেশ হিসাবে পাকিস্তানেই সবগুলো ম্যাচ আয়োজন করার কথা থাকলেও ভারতের বিরোধিতার কারণে এখন হাইব্রিড মডেলের কথা চিন্তা করছে আইসিসি। ভারত তাদের পক্ষ থেকে দুবাইকে পছন্দের কথা জানিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আইসিসির ওপর কতটা খবরদারি করতে পারে ভারত এবং পাকিস্তান কিভাবে সেটা মোকাবিলা করে। এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের খেলাসহ কয়েকটি ম্যাচ বাংলাদেশ আয়োজন করতে পারে কিনা?