যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে সংলাপে রাজি ইরান

- সময় ১২:৩৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
- / 24
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পরোক্ষ আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছে ইরান। তবে সরাসরি আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তেহরান।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, তারা পরোক্ষ সংলাপের জন্য প্রস্তুত, তবে সরাসরি আলোচনা করার আগে ইসলামিক রিপাবলিকের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব পরিবর্তিত হতে হবে।
সোমবার (২৪ মার্চ) টাইমস অব ইসরায়েল থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে পরোক্ষ আলোচনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্থানীয় সময় সোমবার বলেন, আমরা পরোক্ষ আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি, যতক্ষণ না অন্যপক্ষ ইসলামিক রিপাবলিকের (ইরান) প্রতি তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে।
আরাঘচি আরও বলেন, আমরা কখনোই হুমকি বা চাপের মুখে সরাসরি আলোচনা করব না। যতদিন পর্যন্ত ট্রাম্প তার ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ নীতি বজায় রাখবেন, ততদিন ইরান সরাসরি কোনো আলোচনায় বসবে না।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে প্রথম মেয়াদে ইরানের সঙ্গে হওয়া ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে একতরফা সরে আসেন এবং ইরানের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
এর আগে ২০১৫ সালে ইরান ও বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার শর্তে নিষেধাজ্ঞা মুক্তি পেয়েছিল। তবে ট্রাম্প তার পরবর্তী সময়ে এই চুক্তি বাতিল করে নিষেধাজ্ঞা পুনঃআরোপ করেন।
সম্প্রতি, ৭ মার্চ, ২০২৫ তারিখে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি ইরানকে পরমাণু আলোচনায় বসার জন্য দুই মাস সময়সীমা নির্ধারণ করেন এবং একে একটি শেষ সুযোগ হিসেবে দেখান। চিঠিতে ট্রাম্প হুমকি দেন যে, যদি ইরান আলোচনায় না আসে, তাহলে তিনি সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারেন।
এদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচি বলেন, আমরা সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, তবে যুদ্ধের প্রতি আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতি পরিবর্তন না করে, তবে আমরা কোনো আলোচনায় বসব না।
ইরান ২০১৮ সালের পর থেকে ওই চুক্তি থেকে সরে আসার পর পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নিজেদের কর্মকাণ্ড আরও ত্বরান্বিত করেছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেছে।
এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসার ইচ্ছা থাকলেও, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার শর্তে তেহরান প্রস্তুত বলে জানান।
এভাবে, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা আবারো উত্তাপের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছে, তবে সরাসরি আলোচনার জন্য তেহরানের শর্তই হচ্ছে, ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ নীতি প্রত্যাহার করা।