ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলার ইউএনও আফিয়ার গোপন বৈঠক-শিক্ষকের অপমান

মাসুদ রানা, মোংলা (বাগেরহাট)
  • সময় ০৯:২৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 827

মোংলার ইউএনও আফিয়া শারমিনের গোপন বৈঠক

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের চারজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিক গোপন বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, তিনি শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনায় সমালোচিত হয়েছেন।

গোপন বৈঠকের অভিযোগ

গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিশেষ সুবিধা দিতে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সুন্দরবন ইউনিয়নের অপসারিত চেয়ারম্যান মো. একরাম ইজারাদার জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে ইউএনও আফিয়া শারমিন চারজন ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে প্রথম গোপন বৈঠক করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন, চিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, মিঠাখালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল এবং সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইকরাম ইজারদার (অপসারিত চেয়ারম্যান, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪)।

মোঃ ইকরাম ইজারদার আরো বলেন, সুন্দরবন ইউনিয়নে ৮৪টি পানির ট্যাংক বিতরণকে কেন্দ্র করে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অভিযোগ রয়েছে, ইউএনওর অফিসের পিয়ন মহারাজের মাধ্যমে প্রতি পানির ট্যাংক বিতরণের জন্য ৩,০০০ টাকা দাবি করা হয়েছিল। যা দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। ফলে অনেকটা ক্ষুদ্ধ হয়েই অপসারণ করা হয়।

দ্বিতীয় গোপন বৈঠক ও বিএনপির বিক্ষোভ

এদিকে, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বুধবার) দ্বিতীয় দফায় আবারও আওয়ামী লীগ পন্থী চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় আফিয়া শারমিনের। যেখানে অংশ নেন চিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, মিঠাখালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল এবং চাঁদপাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোল্লা তরিকুল ইসলাম।

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বুধবার বিকেলে মোংলা পৌরসভার সামনে তারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন এবং ইউএনওর অপসারণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।

শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ

ইউএনও আফিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মাথায় তিনি এক শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, যা স্থানীয়দের ক্ষোভের জন্ম দেয়।

ইউএনওর প্রতিক্রিয়া

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আফিয়া শারমিন বলেন, “আজ (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) সকালে আমার কার্যালয়ে সামাজিক বনায়ন বিষয়ক একটি সভা হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের চার চেয়ারম্যান ছাড়াও উপজেলা বিএনপির নেতা আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।” তবে, বিএনপি কেন তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, ৩৫ তম বিসিএস ক্যাডার ইউএনও আফিয়া শারমিন আগে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় কর্মরত ছিলেন এবং তার স্থায়ী ঠিকানা খুলনা জেলায় বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন

মোংলার ইউএনও আফিয়ার গোপন বৈঠক-শিক্ষকের অপমান

সময় ০৯:২৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের চারজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিক গোপন বৈঠকের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, তিনি শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের ঘটনায় সমালোচিত হয়েছেন।

গোপন বৈঠকের অভিযোগ

গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিশেষ সুবিধা দিতে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সুন্দরবন ইউনিয়নের অপসারিত চেয়ারম্যান মো. একরাম ইজারাদার জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে ইউএনও আফিয়া শারমিন চারজন ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে প্রথম গোপন বৈঠক করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন, চিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, মিঠাখালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল এবং সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইকরাম ইজারদার (অপসারিত চেয়ারম্যান, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪)।

মোঃ ইকরাম ইজারদার আরো বলেন, সুন্দরবন ইউনিয়নে ৮৪টি পানির ট্যাংক বিতরণকে কেন্দ্র করে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অভিযোগ রয়েছে, ইউএনওর অফিসের পিয়ন মহারাজের মাধ্যমে প্রতি পানির ট্যাংক বিতরণের জন্য ৩,০০০ টাকা দাবি করা হয়েছিল। যা দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। ফলে অনেকটা ক্ষুদ্ধ হয়েই অপসারণ করা হয়।

দ্বিতীয় গোপন বৈঠক ও বিএনপির বিক্ষোভ

এদিকে, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বুধবার) দ্বিতীয় দফায় আবারও আওয়ামী লীগ পন্থী চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় আফিয়া শারমিনের। যেখানে অংশ নেন চিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী আকবার হোসেন, বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস, মিঠাখালি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল এবং চাঁদপাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোল্লা তরিকুল ইসলাম।

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বুধবার বিকেলে মোংলা পৌরসভার সামনে তারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন এবং ইউএনওর অপসারণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।

শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ

ইউএনও আফিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগও রয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসের মাথায় তিনি এক শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, যা স্থানীয়দের ক্ষোভের জন্ম দেয়।

ইউএনওর প্রতিক্রিয়া

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আফিয়া শারমিন বলেন, “আজ (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) সকালে আমার কার্যালয়ে সামাজিক বনায়ন বিষয়ক একটি সভা হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের চার চেয়ারম্যান ছাড়াও উপজেলা বিএনপির নেতা আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।” তবে, বিএনপি কেন তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, ৩৫ তম বিসিএস ক্যাডার ইউএনও আফিয়া শারমিন আগে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় কর্মরত ছিলেন এবং তার স্থায়ী ঠিকানা খুলনা জেলায় বলে জানা গেছে।