ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
যুবদল নেতা সুমনের বিরুদ্ধে

মোংলায় ৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

মাসুদ রানা, মোংলা (বাগেরহাট)
  • সময় ০৫:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 135

৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

মোংলার চাঁদপাই ইউনিয়নের নারকেলতলা আবাসন সংলগ্ন পাকখালী এলাকায় ৮০ একরের একটি চিংড়ী মাছের ঘের যুবদল নামধারী এক দল সশস্ত্র ক্যাডার জবর দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যাবসায়ী শেখ আঃ সালাম ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর এস এম জিহাদুজ্জামানের যৌথ মালিকানাধীন এ মাছের ঘেরে যুবদল নামধারী একদল ক্যাডার মোটর সাইকেল যোগে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে হামলা চালিয়ে ঘেরটি জবর দখল করে নেয়। এ সময় দখলে বাঁধা দিলে দখলকারী ক্যাডাররা চৌকিদারদের গালিগালাজ ও মারপিট করার চেষ্টাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘের থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় থানা পুলিশে অভিযোগ দেওয়া হলেও ঘেরটি ক্যাডার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়নি।

৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ
৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

এলাকাবাসী, ভূক্তভোগী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সাল থেকে মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আঃ সালাম জমির মালিকদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে নিয়মিতভাবে হাড়ির (ইজারা) টাকা পরিশোধ করে ওই জমিতে চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছ মাছ চাষ করে আসছেন। এরপর ২০১৭ সালে শেখ আঃ সালাম ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর এস এম জিহাদুজ্জামান যৌথ মালিকানায় ওই জমিতে মাছের চাষাবাদ করে আসছে। সর্বশেষ জমির মালিকদের কাছ থেকে আগামি ২০২৭ সাল পর্যন্ত ওই ঘেরের লিজ নেওয়া হয়। চলতি মৌসুমে ঘেরে চাষের জন্য ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে কয়েক দফায় কয়েক লাখ টাকার বাগদা, গলদা, চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছের পোনা ছাড়া হয়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে এ চিংড়ি ঘেরটির উপর যুবদল নামধারী একটি মহলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে ঘেরটি জবর দখলের কয়েকবার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রয়াত মোংলা পৌর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ফকির আব্দুস সালামের ছেলে পৌর যুবদল নেতা মোঃ সুমন ফকির ও তার সহযোগী সোহাগ শেখের নেতৃত্বে যুবদল নামধারী ১৪/১৫ জনের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী মোটর সাইকেলে মহড়া দিয়ে ওই ঘেরটি জবর দখল করে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ঘেরটি জবর দখলকারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ
৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবদল নেতা সুমন ফকির বলেন, ওই ঘেরে তার প্রয়াত পিতা ও স্বজনদের বেশ কিছু জমি রয়েছে। তারা তাদের জমিতে ঘের করতে গিয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি মোংলা পৌর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক এমরান হোসেনের নামে ওই ঘেরের নতুন ডিড করা হয়েছে বলে জানান। যদিও এমরান হোসেন জানিয়েছেন, ওই ঘেরের সাথে তিনি কোনভাবেই সমম্পৃক্ত নন। নাম ভাঙ্গিয়ে তার সুনাম ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।

মোংলা পৌর যুবদলের আহবায়ক মাহমুদ রিয়াদ বলেন, সুমন সহ যারা চিংড়ি ঘের দখল করেছে তার জানামতে কেউ যুবদলের নেতা বা কর্মী সমার্থক না তাদের কোথাও কোন যুবদলের কমিটিতে নাম নেই। প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়ার ও দাবী জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, দলীয় নাম ব্যাবহার করে যারা এমন কর্মকান্ডে জড়াবে দল থেকে তাদের বিরুদ্বে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিষয়ের বিরোধ দেখা পুলিশের কাজ নয়। পুলিশের মোংলা-রামপাল সার্কেলের এএসপি মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় দেয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থালে পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত করে দেখছে ঘেরটি আসল মালিক কে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশের এ কর্মকর্তার।

শেয়ার করুন

যুবদল নেতা সুমনের বিরুদ্ধে

মোংলায় ৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

সময় ০৫:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

মোংলার চাঁদপাই ইউনিয়নের নারকেলতলা আবাসন সংলগ্ন পাকখালী এলাকায় ৮০ একরের একটি চিংড়ী মাছের ঘের যুবদল নামধারী এক দল সশস্ত্র ক্যাডার জবর দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যাবসায়ী শেখ আঃ সালাম ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর এস এম জিহাদুজ্জামানের যৌথ মালিকানাধীন এ মাছের ঘেরে যুবদল নামধারী একদল ক্যাডার মোটর সাইকেল যোগে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে হামলা চালিয়ে ঘেরটি জবর দখল করে নেয়। এ সময় দখলে বাঁধা দিলে দখলকারী ক্যাডাররা চৌকিদারদের গালিগালাজ ও মারপিট করার চেষ্টাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘের থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় থানা পুলিশে অভিযোগ দেওয়া হলেও ঘেরটি ক্যাডার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়নি।

৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ
৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

এলাকাবাসী, ভূক্তভোগী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সাল থেকে মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আঃ সালাম জমির মালিকদের কাছ থেকে লিজ নিয়ে নিয়মিতভাবে হাড়ির (ইজারা) টাকা পরিশোধ করে ওই জমিতে চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছ মাছ চাষ করে আসছেন। এরপর ২০১৭ সালে শেখ আঃ সালাম ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর এস এম জিহাদুজ্জামান যৌথ মালিকানায় ওই জমিতে মাছের চাষাবাদ করে আসছে। সর্বশেষ জমির মালিকদের কাছ থেকে আগামি ২০২৭ সাল পর্যন্ত ওই ঘেরের লিজ নেওয়া হয়। চলতি মৌসুমে ঘেরে চাষের জন্য ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে কয়েক দফায় কয়েক লাখ টাকার বাগদা, গলদা, চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছের পোনা ছাড়া হয়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে এ চিংড়ি ঘেরটির উপর যুবদল নামধারী একটি মহলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে ঘেরটি জবর দখলের কয়েকবার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রয়াত মোংলা পৌর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ফকির আব্দুস সালামের ছেলে পৌর যুবদল নেতা মোঃ সুমন ফকির ও তার সহযোগী সোহাগ শেখের নেতৃত্বে যুবদল নামধারী ১৪/১৫ জনের সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী মোটর সাইকেলে মহড়া দিয়ে ওই ঘেরটি জবর দখল করে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ঘেরটি জবর দখলকারীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ
৮০ একরের মাছের ঘের দখলের অভিযোগ

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবদল নেতা সুমন ফকির বলেন, ওই ঘেরে তার প্রয়াত পিতা ও স্বজনদের বেশ কিছু জমি রয়েছে। তারা তাদের জমিতে ঘের করতে গিয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি মোংলা পৌর বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক এমরান হোসেনের নামে ওই ঘেরের নতুন ডিড করা হয়েছে বলে জানান। যদিও এমরান হোসেন জানিয়েছেন, ওই ঘেরের সাথে তিনি কোনভাবেই সমম্পৃক্ত নন। নাম ভাঙ্গিয়ে তার সুনাম ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।

মোংলা পৌর যুবদলের আহবায়ক মাহমুদ রিয়াদ বলেন, সুমন সহ যারা চিংড়ি ঘের দখল করেছে তার জানামতে কেউ যুবদলের নেতা বা কর্মী সমার্থক না তাদের কোথাও কোন যুবদলের কমিটিতে নাম নেই। প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়ার ও দাবী জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, দলীয় নাম ব্যাবহার করে যারা এমন কর্মকান্ডে জড়াবে দল থেকে তাদের বিরুদ্বে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিষয়ের বিরোধ দেখা পুলিশের কাজ নয়। পুলিশের মোংলা-রামপাল সার্কেলের এএসপি মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন, এ ব্যাপারে থানায় দেয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থালে পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত করে দেখছে ঘেরটি আসল মালিক কে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশের এ কর্মকর্তার।