মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা | Bangla Affairs
০৯:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ০৪:৫০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • / 108

মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা

রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানার মাজার রোড এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন বাংলা অ্যাফেয়ার্সের দুই সংবাদিক। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুস সালাম মিতুল ও তার সহকর্মী এসএমআর শহীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন রতনের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহিনী। জমি সংক্রান্ত একটি পুরোনো বিরোধের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই হামলার শিকার হন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জলিল স-মিল সংলগ্ন ৫ কাঠা জমি দীর্ঘদিন ধরে ওয়ারিশ চার বোনকে বঞ্চিত করে এক ভাই একাই দখলে রেখেছেন। জমি নিয়ে আগে থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রের বিরুদ্ধে থানায় ও মিরপুর বিভাগের ডিসি কার্যালয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী হাবিবা আফরোজ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও দাখিল করেছিলেন।

এই ঘটনা অনুসন্ধান করতে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গেলে, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন রতন (৫৫) হঠাৎ করে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। “কে পাঠিয়েছে? কত বড় সাংবাদিক?”— এ ধরনের কথা বলতে বলতে তিনি মিতুলের ওপর এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় শুরু করেন।

রতনের সঙ্গে থাকা সেলিম, খালেক, মালেক, বয়রা শাহিন, ভুট্টোসহ আরও ১৫-২০ জন মিলে সাংবাদিক মিতুলের মুখমণ্ডল ও ঘাড়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। এ সময় তারা সন্দেহ করে সহকর্মী শহীদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে—এর জেরে তার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে তাকেও বেধড়ক মারধর করে।

মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা
মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা

প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরে স্থানীয়রা আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে দারুস সালাম থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিব হাসানের ব্যবহৃত সরকারি নাম্বারে ফোন করলে বলা হয়, তিনি ছুটিতে আছেন। দায়িত্বে আছেন এ আই মাহবুব। তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। তবে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়ে যে অভিযোগটি এসেছে, সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দারুস সালাম থানার ফাঁড়ি ইনচার্জ মনির হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সাংবাদিক মহল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সাংবাদিক পরিবার ও সহকর্মীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, দ্রুত বিচার ও আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা

সময় ০৪:৫০:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানার মাজার রোড এলাকায় তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন বাংলা অ্যাফেয়ার্সের দুই সংবাদিক। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুস সালাম মিতুল ও তার সহকর্মী এসএমআর শহীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন রতনের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী বাহিনী। জমি সংক্রান্ত একটি পুরোনো বিরোধের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই হামলার শিকার হন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জলিল স-মিল সংলগ্ন ৫ কাঠা জমি দীর্ঘদিন ধরে ওয়ারিশ চার বোনকে বঞ্চিত করে এক ভাই একাই দখলে রেখেছেন। জমি নিয়ে আগে থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রের বিরুদ্ধে থানায় ও মিরপুর বিভাগের ডিসি কার্যালয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী হাবিবা আফরোজ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও দাখিল করেছিলেন।

এই ঘটনা অনুসন্ধান করতে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গেলে, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন রতন (৫৫) হঠাৎ করে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। “কে পাঠিয়েছে? কত বড় সাংবাদিক?”— এ ধরনের কথা বলতে বলতে তিনি মিতুলের ওপর এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি ও চড়-থাপ্পড় শুরু করেন।

রতনের সঙ্গে থাকা সেলিম, খালেক, মালেক, বয়রা শাহিন, ভুট্টোসহ আরও ১৫-২০ জন মিলে সাংবাদিক মিতুলের মুখমণ্ডল ও ঘাড়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। এ সময় তারা সন্দেহ করে সহকর্মী শহীদের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে—এর জেরে তার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে তাকেও বেধড়ক মারধর করে।

মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা
মিরপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা

প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরে স্থানীয়রা আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে দারুস সালাম থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিব হাসানের ব্যবহৃত সরকারি নাম্বারে ফোন করলে বলা হয়, তিনি ছুটিতে আছেন। দায়িত্বে আছেন এ আই মাহবুব। তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমাদের তেমন কিছু করার নেই। তবে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়ে যে অভিযোগটি এসেছে, সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দারুস সালাম থানার ফাঁড়ি ইনচার্জ মনির হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সাংবাদিক মহল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সাংবাদিক পরিবার ও সহকর্মীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, দ্রুত বিচার ও আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।